somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন বিবাহিত পুরুষের ডায়েরি থেকেঃ সে কি উত্তেজনাময় একটি রাত! (গল্প)

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক জুনিয়র কলীগের বিয়ে খেয়ে ফিরতে বেশ রাত হয়ে যায়। আমি বসে টিভি রুমে বসি, বাচ্চারা ঘুমায়ে যায় দ্রুতই। স্ত্রী পাশে এসে বসলে আমি একটু ঘনিষ্ট হবার চেষ্টা করি:P

খলিল ভাবী কে কি সুন্দর লাগছিল দেখেছ? অবশ্য না দেখার কি আছে? তুমি তো ড্যাব ড্যাব করে তাকাচ্ছিলে!!

আমি একটু প্রশ্রয় পাওয়া হাসি হাসি, বউ এর আরেকটু ঘনিষ্ঠ হয়ে রোমান্টিক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করি। আমার তখন খলিল ভাবী নিয়ে আলাপের আগ্রহ কম, আগ্রহ অন্য কিছুতে :):D:P

রোমান্টিক পরিবেশের প্রতি বউ-এর আগ্রহ নাই। সে আহ্লাদি গলায় বলে, ভাবীর শাড়িটা অনেক দামি। আমাকে ওরকম একটা শাড়ি কিনে দিবা?

আমি বলি কেমন দাম হতে পারে অই রকম শাড়ির?

“বেশী নয়, হাজার দশেক টাকা দিও, আমি এর মধ্যে একটা কিনে নিব। শাড়ি কিনার জন্য বেশি টাকা নষ্ট করে লাভ নাই:((:((।” এমন একটা হাসি দিল যেন আমার প্রতি অনেক অনুগ্রহ করেছে। আমার পরিবেশের রোমান্টিতার বদলে পকেটের অস্থিরতায় আমার উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ক’দিন আগেই মেয়ে বড় হলে গয়না লাগবে, আর সোনার দাম বাড়ছে তাই এখন থেকেই সোনার গয়না কিনে রাখা দরকার এই অছিলায় মেয়ের জন্য একটি মালা আর তার সাথে এই পাচ বছরে আমাকে তো কিছু দাওনি তাই মেয়ের সাথে আমাকেও কিন্তু একটা চেইন দিতে হবে......সেই অছিলায় দু ভরি সোনার কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে দুই মাসও হয়নি......এই ধাক্কা সামলাতে আমার কমপক্ষে এক বছর ......... এই সময় আসে দশ হাজার টাকা দামের কম দামী:-* শাড়ির আবদার!! মেজাজটা বিলা হয়ে গেলেও আমি উত্তেজনা দমিয়ে বলি, এত টাকা দিয়ে শাড়ি এখন কিনার দরকার নাই, বরং দুই-আড়াই হাজার টাকার মধ্যে একটা শাড়ি কিনে নিও।


বউ এবার উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ও, আমার বেলায় তোমার পকেট চলে না, নিজের ভাই-বোন কিছু চাইলে টাকা ঠিকই হত।

আমি অনেক কষ্টে নিজের উত্তেজনা কমাই, ঠান্ডা গলায় বলি আমার মা-বোন কাউকেই আমি দশ হাজার কেন,এক হাজার টাকার শাড়িও দেইনি।
বউ এর গলার স্বর উচুতে উঠতে থাকে, কেন তোমার ভাইকে দশ হাজার টাকা দাওনি কম্পিউটার কিনার জন্য?

আমার গলাও উচুতে উঠতে থাকে, কম্পিউটার কিনার জন্য দশ হাজার আর শাড়ি কিনার জন্য দশ হাজারের পার্থক্য বুঝলে আল্লাহ তোমাকে আর মেয়ে মানুষ করে জন্ম দিত না......

বউ দমবার পাত্রী নয়, গলার স্বর আরো বাড়িয়ে বলে, তোমার মায়ের চোখের অপারেশনের জন্য বিশ হাজার টাকা দাওনি?

আমার রোমান্টিক পরিবেশের আকাংখা ততক্ষণে পুরোটায় উবে গেছে। রাগ সামলানোই দায়। গেস্ট রুম ফাকা ছিল......আমি সেখানে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেই। ড্রইং রুম থেকে বউ এর উত্তেজিত গলা আসতে থাকে......

তোমার সংসারে এসে আমার হাড় কালি হলো, দাসীর মত খাটলাম। কি পাইলাম? আমার মত মেয়ে পেয়েছিস বলে এই সংসার এখনো টিকে আছে। অন্য মেয়ে হলে এই সংসারে লাথথি মেরে কবে চলে যেত!

অভিগগতা বলে এই সময় নিশ্চুপ থাকায় শ্রেয়! আমার নিরবতায় বউ এর উত্তেজনা সপ্তমে ওঠে। তুমি থেকে তুই প্রমোশন পায় সম্বোধন।

তোর টাকা তুই তুলে রাখ, আমার কিছু লাগবে না...নতুন বউ নিয়ে হানমুনে যাস।...আবার বিয়ার হাউস হইছে বুড়ার। বিয়ে বাড়িতে সাজগোজ করা মেয়ে দেখে আমাকে আর ভাল লাগে না......আল্লাহ যেন তোর টাকা আমারে না খাওয়ায়, আমি মরলে যেন তোর টাকায় দাফন না লাগে...দুই বাচ্চা সহ যেন ট্রাকের নিচে পড়ি.........

আমি গেস্ট রুমে শুয়ে ভাবি...কেন যে কিছু তুলা কিনে রাখি নাই, কানে দিতে পারলে শান্তি পেতাম...এখন থেকে কিছু তুলা কিনে মানিব্যাগে রাখতে হবে। এই প্রথম একজন শিক্ষিত মানুষ না হয়ে একজন রিক্সাওয়ালা হবার খায়েশ হয় তাহলে হয়ত পরিস্থিতি সহজ হতো!! একটা স্লিপিং পিল খেয়ে দুই হাতে কান বন্ধ করে চাদরের নীচে ঢুকি.........।বাইরে রেকর্ড বাজতেই থাকে উচুস্বরে.........

* * * * * * * * * * * *
ডিসক্লেইমার: কারো ঘটনাগুলো চেনা চেনা মনে হলে সেজন্য লেখক দায়ি নয়। পুরো চরিত্র এবং সংলাপ কাল্পনিক!!
* * * * ** * * *


শেষে দুটি কৌতুক ফ্রী।

এক বাবা ছেলেকে নিয়ে চিড়িয়াখানা গেছেন। বিভিন্ন জন্তু-জানোয়ার দেখাচ্ছেন। এক পর্যায়ে গাধার খাচার সামনে এসে তিনি ছেলেকে বলেন, দেখ এইটা হলো গাধা আর ঐ পাশে যেটি আছে সেটির এই গাধাটার বউ।
ছেলে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে, বাবা গাধারাও বিয়ে করে?
বাবা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, বাবা, এই দুনিয়ায় শুধু গাধারাই বিয়ে করে!!

* * * *
স্ত্রীঃ আমি যদি খবরের কাগজ হতাম, সারাক্ষন তোমার হাতে থাকতে পারতাম!
স্বামীঃ আমিও চাই তুমি যদি খবরের কাগজ হতে!! তাহলে প্রতিদিন নতুন একটা পেতাম!

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ১:১০
৬৪টি মন্তব্য ৬২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×