somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কখন, কিভাবে বুঝবেন আপনি ছোটলোক?

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মোশাররফ করিমের একটা নাটকের ডায়ালগ আমার খুব মনে ধরেছে , সেটা হচ্ছে গরিব ধনী হয় কিন্তু ছোটলোক কোনদিন বড়লোক হয় না। ধরেন আপনার জন্ম এক হতদরিদ্র পরিবারে।দু এক জায়গায় ছোটলোক বলে গালিও খেয়েছেন।আপনার মধ্যে জেদ চাপলো নিজের অবস্থানটার পরিবর্তন করার।কোমর বেঁধে পড়াশোনা করলেন ভালো রেজাল্ট করে পাশ করে, ভালো চাকরি জোগাড় করে, কোন এক ভদ্র পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করলেন। বা যদি মেয়ে হয়ে থাকেন তো কোন বড়লোকের ছেলেকে বিয়ে করলেন। মনে মনে নিজেকে নিজে শাবাশ দিলেন। অথবা অন্য যে কোন উপায়ে ধনী হলেন।মনে মনে বললেন এইবার কে আমারে ছোটলোক ডাকতে আসে। কিন্তু আচমকা মাঝে মাঝে কেন জানি শব্দটা কানে আসে। মানুষের চেহারার এক্সপ্রেশন দেখে কেন জানি ঐ শব্দটা আপনার মস্তিষ্কে টেপ রেকর্ডারের মতো বাজতে থাকে।
এমনটা যদি আপনার সাথে হয়ে থাকে, তো লেখাটা আপনার জন্যে। পড়তে পারেন।
আার এমনটা যদি আপনার সাথেও নাও হয়ে থাকে তবু পড়েন। হাল্কা বিনোদন নিলেন দোষের তো কিছু নাই।

প্রথমত দারিদ্র্যতার সাথে ছোটলোকির কোন সম্পর্ক নেই। এটা অন্য কেইস।অনেক সময় গর্বেরও। আমার নানা দরিদ্র ছিলেন। কারণ উনি অসম্ভব রকম সৎ, ভালো এবং সহজ সরল মানুষ ছিলেন।
এখন আপনার কেইসে আসি, কখন কিভাবে বুঝবেন, আপনি ছোটলোক। কেন এখনও এই গালিটা আপনার পিছু ছাড়ছে না।

১/ এত কষ্ট করে পড়াশোনা করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে,এত বড় অফিসার হয়েছেন, কিন্তু দেখেন ঘুষের টাকা পকেটে না আসলে চেয়ার থেকে নড়েন না। কেন বলেন তো? ঐ যে ছোটলোকি বেরাম।

২/স্বামী/ স্ত্রীর সাথে কথা বলতে গেলে আপনার কথা বলার প্রিয় বিষয়বস্তু হলো, শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি।

৩/ নিজের আত্মীয় স্বজন যত ইচ্ছা আসুক স্বামী / স্ত্রীর আত্মীয় স্বজনরা বাসায় বেড়াতে আসলে, শুধু বেড়াতে কেন? আপনার বাড়ির ত্রিসিমানায় আসলে আপনার মাথা খারাপ হয়ে যায়।
অনেক শ্বশুর শ্বাশুড়ি আছেন, মেয়ের শ্বশুর বাড়ির মানুষ আসলে সে কি আপ্যায়ন! ছেলের শ্বশুর বাড়ির কেউ আসলে ভালো খাবার তো দূরে থাক, ভদ্র ব্যবহার টা পর্যন্ত করেন নাা। উল্টো ঘর নোংরা হয়ে গেছে বলে বউকে খোঁচা দেন।

এমন কিছু ভাবিরা আছেন ননদ গেলে খুঁজে খুঁজে ভাঙ্গা বাটি নোংরা চামচে ননদকে খাবার পরিবেশন করেন। ছোটলোক বলেই কাজটা করতে পারেন।

৪/ কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে অহেতুক, অপ্রয়োজনীয় নাক গলান।

৫/সারাদিন মানুষের গীবত করেন। অমুকে দেখেন তো কেমন করে হাঁটে, মনে হয় খোঁড়া। তমুকে চুল কাটলো কেন? ভাইয়ের বউ, ছেলের বউ হঠাৎ বছরে একবার যদি একটা এগারোশো টাকার জামাও পড়ে আপনার ব্লাড প্রেশার বেড়ে যায়। হঠাৎ যদি কোনদিন কানে দুল পরে কেন পড়ল কোত্থেকে আসলো, ছেলের কত টাকা শেষ করে দিলো, ঘ্যান ঘ্যান প্যান প্যান করতে করতে এমন একটা অবস্থা করবেন, বেচারি জীবনে দ্বিতীয় বার কানে দুল পরার সাহস দেখাবেনা। ভদ্রলোকের মেয়ে হলে মুখে কিছ বলবেনা। কিন্তু বাপের বাড়িতে গিয়ে কিন্তু ঠিকই বলবে কোন ছোটলোকের ঘরে বিয়ে দিছো? এখন তো ইন্টারনেটের যুগ। সুন্দর করে গুছিয়ে কোথাও পোস্ট ও দিতে পারে।


৬/ আপনার হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় থাকা রুগীকে এই টেস্ট, সেই টেস্ট দিয়ে ইচ্ছেমতো গালতে থাকেন। জানেন এইসবের কোন দরকার
নেই।তবুও আপনি এইসব ছোটলোকি গুলি করেন। শুধু ছোটলোক না আপনি মস্ত বড় শয়তান। খোদ শয়তান আপনার সাগরেদ।

৭/কারো মোবাইল দেখলে ঘাটতে মন চায়।আলমারি খুলে, ওয়ারড্রব খুলে দেখতে মন চায়।

৮/ অন্যের দূর্বলতা নিয়ে খোঁচা মেরে কথা বলতে ভালো লাগে।

৯/ফেইসবুকে সারাদিন হিরো আলাম, পরীমনি এদের নিয়া পোস্টাইতে থাকেন।

১০/ অন্যের লেখা চুরি করে নিজের লেখা বলে চালিয়ে দেন।

১১/ ফেইসবুকে লাইভে এসে এমন ঢং ঢাং করে জিবটারে এমন পেঁচায়ে পুঁচায়ে বাংলা বলেন, যে মন চায় আবার ভাষা আন্দোলনের ডাক দিই। আপনাদের মতো ফইন্নিদের থেকে বাংলা উদ্ধার করি।
আর আপনাদের জাফর ইকবালের প্রেত উপন্যাসের মতো জিজ্ঞেস করতে মন চায়, আপনাদের দাদা মানে আপনার বাবার বাবা যাদের আপনারা গ্র্যান্ডফাদার বলেন, কি করতেন?

১২/ বাপের বাড়িতে বেড়াতে আসছেন, ভাবি অনেক সেবা যত্ন করলো, খাওয়ালো দাওয়ালো ফুটুস করে আপনার মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেলো ভাই ভাবিকে পায়ের জুতা বানিয়ে রেখেছে তাই এত্তো যত্ন। আপনি কি ভাবছেন এমনি এমনি কথাটা বেরিয়ে গেছে? উঁহু। বলবো?
ঐ যে ছোটলোকি বেরাম!

১৩/ পরিশ্রম করতে মন চায় না। মনে মনে হিসাব কষতে থাকেন কার থেকে কি নেয়া যায়।

১৪/ কারো উপকার করতে গেলে সাথে মোবাইলে ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে ভুলেন না।

দেখেন আমার হাত এখন ব্যথা শুরু হয়ে গেছে কিন্তু আপনাদের ছোটলোকি শেষ হচ্ছে না।৷ আর লিখতে পারবো না বাবা।

উপরি উল্লেখিত কোন স্বভাবের সাথে কারো যদি কোন মিল পাওয়া যায়, তো

আঁই কিত্তাম? তুই হানিত সুবি মর গই।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৩৬
২০টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×