আমরা কি এমন বাংলাদেশ ই চেয়েছিলাম ? এমন বাংলাদেশের জন্যই কি আমাদের বাবা চাচারা যুদ্ধ করেছিল ? আজকের এই সন্ত্রাসে ভরা বাংলাদেশ উপহার দেয়াই কি তাদের উদ্দ্যেশ্য ছিল ? এই প্রশ্ন যদি আমি কাউকে করি । তবে উত্তর নিশ্চয় ই না হবে ?
তবে কেন আজকের বাংলাদেশের এই অবস্থা ? কেন লাখো শহীদের রক্তে কেনা বাংলাদেশ এ আজ খুনা খুনি , মারা মারি , জেল , জুলুম ,অত্যাচার , রিমান্ডের নামে নির্যাতন ? কেন চলছে এসব ? কেউ কি উত্তর দিতে পারবেন ? হয়ত কেউ মনগড়া একটা উত্তর দিয়ে দিবেন । কিন্তু আপনার উত্তর টাই কি সঠিক ? যদি এই প্রশ্ন করি ।তাহলে হয়ত আপনি আপনার বক্তব্য সঠিক প্রমান করতেই উঠে পরে লাগবেন ?
আমি বলব যে আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য আমাদের এই রকম মানসিকতা ই দায়ী । আমাদের এই ধরনের মানসিকতা ই আমাদের ধ্বংশের মূল কারন । কারন আমরা নিজেকে অন্যের উপর প্রাধান্য দিতে ভালবাসি । আমরা অন্যের বক্তব্যকে নিজের বক্তব্যের উপর কখনোই প্রাধান্য দিতে চাই না । কারন আমরা বেশি বুঝি । আলোচনা , সমঝোতা এইগুলো আমাদের নিকট মূল্যহীন । আমরা সবসময় মনে করে থাকি আমি নিজেই মহাজ্ঞানী । আমি কেন অন্যের পরামর্শ গ্রহন করব ? আমাদের এইমনোভাব আমাদের সমাজের প্রত্যেকটা স্তরে প্রভাব বিস্তার করেছে । এবং এটাই এখন আমাদের রাজনৈতীক মহা সমস্যা আকার ধারন করেছে । আমাদের দেশের সরকারী ক্ষমতায় যারা থাকে । তারা মনে করে । আমরা এখন ক্ষমতায় । অতঃএব আমরা যা করব , যা বলব । সবই বৈধ । আমরা যে প্রকার আইন প্রনয়ন করব । উহাই সত্য । এর উপর কারো কথা চলতে পারেনা । যে কোন কথা বলবে সেই দেশদ্রোহী । অপর দিকে । যারা বিরোধী দলে আছে । তারা মনে করে যে । সরকার যা করছে তার সব কখনোই সত্য হতে পারেনা । কারন তারা সব ব্যাপারে আমাদের সাথে আলোচনা করে নাই । হয়ত তারা এর বিরুদ্ধে হরতাল ও ডেকে বসবে । হরতালে গাড়ী ভাঙবে , ফুটপাতে আগুন দেবে । দরিদ্র মানুষের পেটে লাথি মারবে । আবার সংবাদ সম্মেলনে বলবে আমরা জনগনের অধিকার রক্ষার আন্দোলন করছি । অপর দিকে সরকার ও হরতাল প্রতিহতের লক্ষে ব্যাপক আক্রমন চালাবে । সংবাদ সম্মেলনে বলবে আমরা জনগনের জানমাল রক্ষার জন্য চেষ্টা করছি । দুই দলেই বলবে জনগন আমাদের দলে । কিন্তু এই বক্তব্য কি আসলেই সত্যি ? জনগন আসলে কার পক্ষে ? আসলে জনগন কারো পক্ষেই নয় । জনগন তাদের কাছে জিম্মী । জনগন দুদলের মারামারীতে পরে জীবন হারায় । হরতালের দিন ভোগান্তির শিকার হয় । আমরা কি এটাই চাই ? আজ কোন একটা লোক বাড়ী থেকে বের হলে । সে যে জীবন্ত ফিরবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই । শিক্ষাঙ্গনে আজ পড়ালেখা চলে না । চলে রাজনীতি , মারা মারি , দলা দলী , খুনা খুনী । একটা ছেলে । সে হয়ত তার পরিবারের একমাত্র অবলম্বন । দেখা যায় যে । দুদলের মারামারীতে নিরীহ ছেলেটি মারা পরে । এটা কেমন স্বাধীনতা ? এটাই কি আমাদের কাম্য ছিল ? আমরা এর প্রতিকার চাই । আমরা স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই । আমরা জীবনের নিরাপত্তা চাই । বন্ধ হোক খুনা খুনীর রাজনীতি ।