somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জন্য একটি অভিশাপ।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট লাহোরে “জামায়াতে ইসলামী হিন্দ” নামে দলটি প্রথম আত্বপ্রকাশ করে। মূলত ভারতবর্ষের কম্যুনিস্ট বিরোধী শক্তি হিসেবে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদীদের আশ্রয়ে এই দলটির জন্ম । বৃটিশ তাবেদার এই দলটি জন্মলগ্ন থেকেই ভারতবর্ষের স্বাধীনতার বিরোধীতা করে। পরে এরা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠারও তীব্র বিরোধীতা করেছিল। মওদূদী ফতোয়া দেন পাকিস্তান রাষ্ট প্রতিষ্ঠার দাবী করা সবাই, মুসলীম লীগ, জিন্নাহ এরা কেউই “খাটি মুসলিম” না । উল্লেখ্য ৭১ সালেও গণ হত্যার সময় “খাটি মুসলিম” তত্ব ব্যাবহার করেছিল দলটি । বঙ্গবন্ধু সহ স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালীদের এরা ভারতীয় দালাল কাফের বলে ঘোষণা দেয়। ভন্ড জামায়াতে ইসলাম কখনই স্বাধীনতা বা গনতন্ত্রে বিশ্বাস রাখেনি। সকল সময়ই ইসলামকে ব্যাবহার করে সুবিধাবাদীর রাজনীতি করে গেছে। দলটির প্রতিষ্ঠাতা আবু আলা মওদূদী বলেন-

“গণতন্ত্র বিষাক্ত দুধের মাখনের মত” – মওদূদী, সিয়াসি কসমকস, তৃতীয় খন্ড, পৃঃ ১৭৭

“গণতন্ত্রএর মাধ্যমে কোনো সংসদ নির্বাচনে পার্থী হওয়া ইসলাম অনুযায়ী হারাম” - রাসায়েল ও মাসায়েল । লেখক মওদূদী । প্রথম সংঙ্করণ, পৃষ্ঠা ৪৫০।

মিথ্যাই যেই দলের মূল মন্ত্র সেই মিথ্যা সম্পর্কে মওদূদী বলেন-

“সময়ে সময়ে মিথ্যা বলা শুধু জায়েজই নয় বরং অবশ্য কর্তব্য” – আবুল আলা মওদূদী, তরজমানুল কোরআন, মে ১৯৫৮।

বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটিকে জামায়াত কখনই মেনে নেয়নাই। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকেছে। হয়েছে আর্থিক ও রাজনৈতিক ভাবে অনেক শক্তিশালী। এর কৃতিত্ব অবশ্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়া ও বেগম জিয়ার উপরই বর্তায়।

সাম্প্রতিক যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে কেন্দ্র করে এই দলটি এখন আরো অনেক বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দলটির বিরুদ্ধে প্রমাণ মিলছে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংশ্লিষ্ঠতার। জঙ্গী সম্পর্ক অবশ্য তাদের নতুন কিছু নয় তবে এটি এখন প্রকাশ্য রূপ লাভ করেছে।

বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা গুলো বলছে, দেশের জঙ্গী অর্থায়নের নেপথ্যে মদদ দিচ্ছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। আর আইএসআইর সহযোগী হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীর দল পাকিস্তানের পুরনো দোসর জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতে ইসলামী ব্যবসায়িক সংগঠনের মাধ্যমে বছরে নিট মুনাফা করে দেড় হাজার কোটি টাকা। নিট মুনাফার ৩ শতাধিক কোটি টাকা ব্যয় করে জঙ্গী, সন্ত্রাসী ও দলীয় কর্মকাণ্ডে। পাকিস্তান, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের বেসরকারী সংস্থার কাছ থেকে এই অর্থ পাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন ব্যক্তির নামে আছে বিভিন্ন ধরনের সহস্রাধিক ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই বিদেশ থেকে আসা টাকা পাচ্ছে জামায়াত। ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে জামায়াতের বিভিন্ন কর্মকর্তার নামে যেসব টাকার লেনদেন হয়েছে তার বিরাট অংশ জঙ্গী অর্থায়ন হয়েছে এবং যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাধাগ্রস্ত করতে দেশে-বিদেশে লবিস্ট নিয়োগসহ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে অপ-প্রচারে ব্যয় করা হয়েছে।

জামায়াতের জঙ্গী অর্থায়নের অভিযোগে ইসলামী ব্যাংকের ৮০টি শাখায় যে বিরাট অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে সেই বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে জঙ্গী অর্থায়নের তদন্ত করে প্রমাণও পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যা লঘু দণ্ডের মতো। জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন কর্মকর্তার নামে ব্যাংক, বীমা, লিজিং কোম্পানি, ওষুধ শিল্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ট্রাস্টি, রিয়েল এস্টেট, ছাপাখানা, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া, এনজিওসহ বিভিন্ন ধরনের সহস্রাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে পাকিস্তান, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থার কাছ থেকে আসা টাকার বিরাট অংশ পাচ্ছে জামায়াত। দেশের ভেতরে ব্যাপক জঙ্গী তৎপরতার বিষয়ে জামায়াতের অর্থায়ন, সহায়তা, ভূমিকা রাখার বিষয়ে গ্রেফতারকৃত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জেএমবি, হুজি, হিযবুত তাহরীরসহ বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় জঙ্গী নেতাদের দেয়া স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দীতেও এ ধরনের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা।

যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হওয়ার পর জামায়াত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বিরাট অঙ্কের টাকা ব্যয়ে লবিস্ট নিয়োগ করে যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।এমনকি যুদ্ধাপরাধীর বিচার চলাকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছিল তুরস্ক থেকে আসা মুসলিম ব্রাদার হুডের কর্মকর্তারা। ডলারের বিনিময়ে আন্তর্জাতিক মহলে জন্ম নিচ্ছে ক্যাডম্যানের মত দালালদের।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জন্য একটি অভিশাপ। দুঃখ হয় যখন জামায়াতের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংশ্লিষ্ঠতার এত প্রমাণ থাকা সত্বেও এই সংগঠনটির বিরুদ্ধে সরাকার দৃঢ় ভাবে কোন ব্যাবস্থা নিতে পারছেনা। ইসলামী ব্যাংকের জঙ্গী অর্থায়নের প্রমাণ মিললেও ব্যংকটির বিরুদ্ধে নাম মাত্র ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রশ্ন আসতেই পারে তবে কেন এই ধীর গতি? নিঃস্বন্দেহে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দাড় করানো সরকারের একটি বড় সফলতা। তবে এই সফলতাকে ধরে রাখাটাই এখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের জন্য এখন একটি বড় চেলেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই যদি একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীর দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতকে নিষিদ্ধ ও এর আর্থিক সংগঠন গুলো বন্ধ করা না যায় তবে সত্যিই বাংলাদেশের কপালে অনেক দুঃখ আছে। বাংলাদেশ একদিন হয়ে উঠবে জঙ্গীদের ঘাটি। পাকিস্তানের মত এখানেও বোমার আঘাতে প্রতিদিন মরবে সাধারণ মানুষ। তখন আফসোস আক্ষেপ করা ছাড়া আর কি কিছু করার থাকবে?
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×