somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুটি ভাআআই?

১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোট্ট ছেলেটি দেখতে দেখতে বড় হয়ে গেল। সে এখন 'আক্কুপুক' আর 'আক্কু'র পার্থক্য জানে। সে এখন জানে আক্কপুকের পরেই আক্কুর আগমন। বস্তুত আক্কুপুকই আক্কুর আগমণ ধ্বনি।

রাশান রাজপুত্র কে নিয়ে অনেক অনেক লেখা জমা হয়ে আছে। আগের মত আর লেখা হয় না। এখন আমরা তিনজন ইফতার করতে বসি। আজান হয়ে গেলে বলে, "বাবা..আল্লাহ ... আজান। মাম ... খাও।"
আজান না হওয়া পর্যন্ত ইফতার নিয়ে বসে থাকে! অদ্ভুত না!

অনেক বছর আগে আমরা যখন ছোট ছিলাম। যখন রোজা রাখতে পারতাম না। বাড়ির উঠানে আমাদের ইফতারের আয়োজন চলতো। উঠানে পানি ছিটিয়ে ঝাড়ু দেয়া হতো , যাতে ধুলো না ওড়ে। এরপর মাদুর বিছিয়ে দিতাম। আমরা ভাইবোনেরা কেউ বসে থাকতাম না। কেউ মাদুর বিছায়, কেউ টিনের প্লেট সাজায়, কেউ রান্নাঘর থেকে ইফতার নিয়ে আসে, কেউ শরবতে চিনি গুলায়। এমন কি যার কোন কাজ ছিল না সেও বারবার রাস্তায় গিয়ে দেখে, ' বরফ নিয়ে এখনো আসছে না কেন?'

বেলী বরফ নিয়ে আসতো প্রায় ছুটতে ছুটতে। ইদরায় ঢুবিয়ে রাখা হতো তরবুজ আর ডাব। ঠান্ডা হওয়ার জন্য। ঐগুলো পানি থেকে তোলার সময়ও আমাদের থাকা চাই। ইফতারের আগমুহুর্তে আমাদের কঠিন ব্যস্ততা। এরপর ইফতার সাজানো হলে বিছানো মাদুরে আমরা বসে পড়তাম। কড় গুনে দেখতাম প্লেটের সংখ্যা ঠিক আছে কিনা।
হ্যাঁ ঠিক আছে, ২৩ টা! আর ২টা দাদা আর দাদীর তাঁরা তো মাদুরে বসতে পারবে না। দাদা জানালায় বসে আমাদের কাজকর্ম দেখতেন আর বলতেন, কুটি ভাআআই!
জ্বী দাদা?
আজ কয় রুজা?
১৩ টা দাদা।
তুমার কয়টা?
৩ টা দাদা।

আমরা ইফতার সামনে নিয়ে অপেক্ষা করতাম । আজান হওয়ার জন্য। আজান না হওয়া ইফতারে হাতও দিতাম না। দূরে পাওয়ার হাউজ থেকে সাইরেন বেজে উঠতো। বোমা ফাটিয়েও সংকেত দিতো। দাদা বলতেন, আগে আজান হোক। দূর থেকে আজান ভেসে আসতো। আমাদের অপেক্ষা শেষ হতো।

ছোটবেলার মত এখনো আমরা ইফতার নিয়ে অপেক্ষা করি। কেউ ছেলে নিয়ে, কেউ মেয়ে নিয়ে, কেউ ছেলেমেয়ে নিয়ে। কিন্তু ছোটবেলার উঠানের সেই অপেক্ষাটা অন্যরকম ছিলো। আমাদের অপেক্ষায় আর দাদা নেই। কিংবা কে জানে, লোহার শিকের জানালা ধরে হয়তো তিনিও অপেক্ষা করেন!
কুটি ভাআআই?
জ্বী দাদা!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:২৩
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×