somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্যাখ্যাহীন কোন ঘটনা কি আপনার সাথে ঘটেছে ?

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১।
একদিন সন্ধ্যাবেলায় মাগরীবের আজানের পর পর বাড়ি ফিরছি। ফাঁকা মাঠের পাশে নির্মাণাধীন বাড়ির বেশ উঁচু পাঁচিলে অস্বাভাবিক লম্বা, মানে এমন লম্বা যে মাঝখানে আরেক জোড়া পা থাকতে পারে এমন কুকুর দেখেছিলাম। এমন পাঁচিল বেয়ে কুকুরের উঠা সম্ভব না। সেই সাথে আকৃতি ছিল অস্বাভাবিক। ভয় পেয়ে যায় আমি। দৌড়ে বাড়ি ফিরি।

অস্বাভাবিক লম্বা কুকুর নিয়ে অনেক ভেবেছি :
এতো বড় আর লম্বা কুকুর কোথাও দেখিনি। দেহটা এমন যে ছয়টা পা থাকার মত। উচ্চতাও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এমন কুকুর থাকলে এলাকার মানুষের চোখে পড়তো। আলোচনা হত।

অমন উঁচু পাঁচিলে কুকুর উঠার কথা না। যদি কেউ তুলে থাকে তবে কুকুরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতে হবে।
এই কুকুর অস্তিত্বহীন। কারণ এলাকার কেউ দেখেনি। দেখেছি শুধু আমি। এই কুকুর কে বিশ্বাস করলে 'অন্য কিছু' তে বিশ্বাস করতে হবে। নয়তো ধরে নিতে হবে , আমি ভুল বলছি অথবা মিথ্যা বলছি।

২।
একবার ঢাকাতে এক আত্মীয়ের বাসায় বেশ কিছুদিন ছিলাম। একদিন বিকালে বাথরুমে ঢুকে দেখি বাইরে থেকে দরজা আটকে দিয়েছিল কেউ। অনেক ধাক্কা ধাক্কি করলাম। মনে হলো বাইরে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। নিচু হয়ে দরজার নিচ নিয়ে দেখলাম বেড়ালের দুটো পা। সামনের দুইপা সম্ভবত দরজার সাথে ভর দেয়া ছিল। পরে চেচামেচি শুনে বাসার লোক এসে দরজা খোলে এবং একটা বেড়ালকে জানালা দিয়ে পালাতে দেখে।

বাথরুমে আটকে ঘটনাটা আমাকে আরো ভাবিয়ে তোলে :
যে বাড়িতে আমি বাথরুমে আটকা পড়েছিলাম। সেই বাড়ির দরজা একবার ভেতর থেকে আটকে গিয়েছিল। পড়ে ছিটকিনি ভাঙতে হয়েছিল। ভেতর থেকে কি ভাবে আটকালো ?

৩।
একবার এক রুগীকে দেখতে গিয়েছিলাম। ১৯ ২০ বছর বয়স। বাসায় অনেক জটলা। সে নাকি অস্বাভাবিক আচরণ করছে। তখন নিজেকে মিসির আলী ভাবতে ভালো লাগতো। দেখতে গিয়েছিলাম। দিয়ে দেখি মসজিদের হুজুর আছে। হুজুরের সাথে সে কোরআন শরীফ তেলাওয়াতের প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। হুজুর কে বিভিন্ন সুরার আয়াত মুখস্থ বলে শোনাচ্ছে। আমি হুজুরকে বললাম, হুজুর এই ছেলে ভুলভাল কি বলছে।
হুজুর বলল, ভুল ভাল না । ঠিকই বলছে।
হুজুর কে কানে কানে বললাম, আচ্ছা সূরা তাকাসুর বলতে বলুন তো?
হুজুর তাকে বলল এবং আমাকে অবাক করে দিয়ে মুখস্থ বললো ।
তাকাসুর আমার মুখস্থ ছিল বলেই বলতে বলেছিলাম। যাতে ধরতে পারি। অবাক হয়েছিলাম কারণ ২০ বছরে ঈদ আর জুম্মা ছাড়া তাকে নামাজে দেখিনি।

কোরআন বা সূরা তেলোওয়াতের ঘটনা নিয়ে আমার ভাবনা :
ছেলেটা আমার একবারে পরিচিত। কয়েক গলি পরেই বাড়ি এবং এলাকায় পরিচিত। গ্রামের এলাকা কিন্তু শহর বিদেশের মত নয়। কোথায় কি হচ্ছে সব জানা যায় একে অন্যের সাথে যোগাযোগ থাকার মাধ্যমে।

পাড়ার সবাই মিলে বিকেলে আমরা সবাই একসাথে ক্রিকেট খেলতাম।
একজন মানুষ গোপনে কোনআন মুখস্থ করে ফেলবে? এই ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে কষ্ট হচ্ছে।
হয়তো অন্য ব্যাখ্যা আছে। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো না। জুম্মাতে একসাথেই যেতাম প্রায়।
এখন গাজীপুরে টেক্সটাইলে ফ্যাক্টরীতে চাকুরী করে।


৪।
আমার নানীকে সাতদিন ধরে খুব অস্বাভাবিক আচরণ করতে ছিল। সাতদিন ধরে কোন অবস্থার উন্নতি হতেছিল না। শেষমেষ আমার দাদাকে আনা হয়। দাদা গিয়ে আগে নানীকে সালাম দেন । নানী পুরুষ কন্ঠে সালামের উত্তর দেন। বলে নেয়া ভালো, কদিন ধরে নানী মাঝে মধ্যেই পুরুষ স্বরে কথা বলেছে। এরপর দাদার সাথে নানীর অনেক কথা হয়। সেই আলোচনা করবো না।
দাদাকে বলেছিল, মৌলানা সাহেব আপনাকে দেখার শখ ছিল। আমরা এখন চলে যাবো। আমরা কোলকাতা থেকে এসেছি।

দাদা বললেন , আপনারা চলে যাবেন বুঝবো কিভাবে?
নানী, দূরের বড় একটা গাছের ডাল দেখিয়ে বললো, আমরা যাওয়ার সময় ঐ মোটা ডালটা ভেঙে দিয়ে যাবো।
এবং মিনিট খানেকর মধ্যেই ডালটা ভেঙে যায়। আমার নানীও স্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে।


নানীর অস্বাবাবিক আচরণ এবং গাছের ডাল ভাঙা নিয়ে আমার ভাবনা
:
তারা চলে যাবে বলার এক মিনিটের ভেতর ঝড় বাতাস ছাড়া কাঁচা ডাল ভেঙ্গে গেল? নানীও স্বাভাবিক আচরণ করতে লাগলো।
এই ঘটনার একটাই ব্যাখ্যা:
প্রতিবেশী আত্মীয় সবাই মিথ্যা বলছে।


৫।
চাকুরীর সুবাদে ছোটআপা টঙ্গীতে থাকতো। আমি বেড়াতে গেলাম। নিচের ফ্ল্যাটের দুদিন হলো নতুন ভাড়াটিয়া উঠেছে। কারো সাথে যোগাযোগ হয়নি তাদের তখনো। বিকালে শুনলাম নিচে চিৎকার। পাশের ফ্ল্যাটের মহিলা এসে আপাকে ডাকলো , আসেন তো নতুন ভায়াটিয়ার বৌ কেমন যেন করছে।
একটু পড়ে আমরা গেলাম।
আমাদের দেখে বৌটা শান্ত হলো। তারপর বললো, আপনারা চলে যান। আপনারা আসবেন না। আপনাদের চিনি। আপনারা শামসুল হুদার লোক।

সৈয়দ শামসুল হুদা আমার বড়ফুফার নাম। তিনি কোলকাতার মানুষ। পীর ছিলেন। উনার নামে সড়ক আছে। শামসুল হুদা রোড, পার্ক সার্কাস, কলকাতা, ওয়েস্ট বেঙ্গল, ৭০০০১৭।

আমরা চলে আসি। পরে শুনেছি বছর খানেক তারা ওই বাসাতে স্বাভাবিক ভাবেই ছিল। তারপর অন্য কোথাও চলে যায়।


আমি কোন ব্যাখ্যা দাড় করাতে পারিনি :
টঙ্গীর ঐ মহিলা আমাদের পরিচয় , ফুফার পরিচয় জানলো কিভাবে?
নিশ্চয়ই কোনো ব্যাখ্যা আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:১৬
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের জাতির কপালে শনি আছে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:১১



একাত্তরে যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে তারা বলেছে স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখা সম্ভব না, সুতরাং ভারতের অধীন হওয়ার চেয়ে পাকিস্তানের অধীন থাকা ভালো। তারা মনে করেছে অধীকাংশ নাগরিক তাদের দলে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৬

হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?

জুলাই আন্দোলনে তিনি প্রথম সারির নেতা ছিলেন না , তাকে কেউ চিনতো না কয়েক মাস আগে ও ।

জুলাই জংগীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ৩০ দেশের দুষ্ট আমেরিকান রাষ্ট্রদুত বদলায়ে দিচ্ছে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২৩



আইয়ুব পাকিস্তানকে ধ্বংস করার পর, বাংগালীদের লাথি খেয়ে সরেছে; জিয়া, কর্নেল তাহের ও জাসদের গণ বাহিনী আমাদের দেশকে নরক (১৯৭৫ সাল ) বানিয়ে নিজেরা নরকে গেছে। আমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×