পাশের সিটে বসে থাকা লোকটার হাতে মোবাইল। স্কিনে বেশ ভয়াবহ একটা খবর।
সেন্ট মার্টিনে দেড় কিলোমিটারে তিন মণ প্লাস্টিক, চিপসের খালি প্যাকেট - চোখ আটকে গেল। ভয়াবহ নিউজ দেখেই কিনা জানিনা পাশে বসা লোকটি খক করে একদলা কফ ফেলল জানালা দিয়ে। হাতে চরম স্মার্ট ফোন , ফেসবুকে হয়তো একটা 'স্ট্যাটাস' আছে। সামাজিকতা বজায় রাখে। কানে ইয়ার ফোনে চমৎকার মিউজিক বাজছে হয়তো। হঠাৎ মনে হলো , রাস্তায় দাঁড়িয়ে লুঙ্গিতে নাক মোছা রিক্সাওয়ালার চেয়ে কি স্মার্ট এই লোকটি ?
এখন শীতের সিজন। মানুষের হাঁচি কাশি লেগেই আছে। হাঁচি বা কাশির সময় মুখে রুমাল চাপা দেয় না। আর রুমালই বা কোথায় রাখবে ? দুই পকেটে দুই মোবাইল।রুমাল রাখার জায়গা নেই। হাঁচি কাশি উপশমে মানুষ ওষুধ খায় না , খায় সিগারেট। খায় আর নাক মুখ দিয়ে ধোঁয়া ছাড়ে , খক খক করে কাশে , কফ থুতু ফেলে ।
ঢাকা হচ্ছে সবচেয়ে বায়ু দূষণের শহর , জরিপে এসেছে।
কোন দেশের মানুষ রাস্তায় সবচেয়ে বেশি কফ থুতু ফেলে এমন কোন জরিপ আছে কি ?
আচ্ছা বাইরের দেশের মানুষ কফ থুতু ফেলে কোথায় ?
সকাল সকাল মেজাজ টা খারাপ হতে শুরু করেছে। ভালো লাগছে না।
সাইন্সল্যাবের পাশে ফুটওভার ব্রিজের নিচ দিয়ে হাঁটা যায়না। মানুষ (!) এখানে চেন খুলে লুঙ্গি তুলে দাঁড়িয়ে পরে। ডান্ডা ধরে ফোয়ারা চালায়। এরপর কর্ম সাধনের পর ডান্ডা ঝাঁকিয়ে প্যান্টের ভেতর ঢুকিয়ে রাখে। এলাকা জুড়ে দূর্গন্ধময় পানি। ব্যস্ত নরকে নাগরিক আমি আনমনা হয়ে নাক চেপে হেঁটে যায় বাকিদের মত , যেন কিছুই করার নেই। মেয়েরা বাসে জ্যামে বসে প্রস্রাব চেপে কিডনির বারোটা বাজাবে আর আমরা দেয়ালে দাঁড়িয়ে ডান্ডা ঝাঁকাবো। আশার কথা বেশ কিছু পাবলিক টয়লেট হয়েছে ব্যবহারযোগ্য, পরিচ্ছন্ন।
কিন্তু ডান্ডা ঝাঁকানো পাবলিকরা এতো মাথা ঘামায় না। চেইন খুলে , লুঙ্গি তুলে বসে পড়লেই হয়।
নিউজ পেপারের হেডলাইনটা মাথায় ঘুরছে -- দেড় কিলোমিটারে তিন মণ প্লাস্টিক, চিপসের খালি প্যাকেট। আচ্ছা সেন্টমার্টিনে মানুষ কি করতে যায় ?
ছোটবেলায় একদিন আব্বা কে জিজ্ঞেস করেছিলাম , 'শুকরের পাল কে খামারে আটকে রাখা হয় কেন ?'
আব্বা বললেন , 'শুকরের পাল ছাড়া পেলে আসে পাশে সব তছনছ করে ফেলে। মান কচুর গাছ গুলো উপরে ফেলে , আবর্জনা ঘাটে ঘাঁটে , চারপাশে নোংরা করে।'
আমাদের এলাকায় রেললাইনের পাশে হরিজন পট্টি ছিল।ওখানে ওরা শূকর পালতো। মাঝে মাঝে ওই শূকর গুলো ছাড়া পেলে ভয়াবহ কান্ড ঘটাতো। ওরা পশু। শূকর। ওদের কে আটকে রাখতে হয়। ওদের খামারে পুরতে হয়। ছাড়া পেলে হয়তো ওরা মুক্তির আনন্দে হয়তো সব ওলটপালট করতে চায়। তারা তো পশু। শূকর। অনেক কিছুই বোঝে না।
আচ্ছা মানুষ কি খামারে থাকে ? মানুষ কি খামারে থেকে ছাড়া পেলেই সেন্টমার্টিনে যায় ?কক্সবাজারে যায় ?
মানুষ তো বোধবুদ্ধি সম্পন্ন প্রাণী। পশু নয়। শূকর তো নয়ই।
কারণ শূকররা যেখানে যায় সেখানেই তাদের ভাগাড় বানায়।
ছবি: ইন্টারনেট। রুচিরজনিত কারণে 'এলাকা জুড়ে দূর্গন্ধময় পানি' এর ছবি দেয়া থেকে বিরত থাকলাম।
** ১ ঘন্টায় এই পোস্ট ২৫০+ বার পঠিত হবার কথা না। ঘটনা বুঝতে পারছি না।