দীর্ঘদিন ধরে ব্লগে অনিয়মিত। দীর্ঘদিন ছিলাম না। আমার ব্লগ ঘেঁটে দেখলাম আমাকে আপনি খুঁজেছেন। পুরাতন পোষ্ট গুলো খুঁজে সেখানে মন্তব্য করে গেছেন । আপনার এমন কার্যবিধিকে আমি ধরেই নিতে পারি আপনি আমাকে খুঁজেছেন। আপনার অনুপস্থিতি আপনাকে ভাবিয়েছে কিছুটা । ব্লগের বাইরে তেমন কোন ব্লগারের সাথে যোগাযোগ নেই। ম্যাসেন্জারেও ডিয়েক্টিভ ছিলাম দীর্ঘদিন দিন। ফেসবুক বন্ধ।
ফোনে কারো সাথে যোগাযোগ নেই তেমন। তাই তেমন খোঁজ খবর জানি না।
আসলে এতো রাতে ব্লগে কেন ঢুকলাম জানি না। অজস্র অদেখা আর প্রত্যুত্তর বিহীন অনেক মন্তব্য জমা হয়ে আছে। জবাব দেয়া হয়ে উঠছে না। আগে ঘুম না এলে ব্লগে কিছু লেখার চেষ্টা করতাম কিন্তু এখন তেমন কোন ইচ্ছা হয় না । আমার কোন কিছু লিখে ফেলার কোন অভ্যাস ছিলো না। আর ইদানীং তো লেখার মত কোন কিছুই তেমন আসে না।
ফিলিস্তিন কিংবা রাশিয়া , যুদ্ধ, মানবতা.... পৃথিবীর চরম দূর্দশা নিয়ে কয়েক শো পোষ্ট লেখা যেতো। কিংবা পুড়ে মরা বাংলাদেশ আর অব্যবস্থাপনা নিয়ে হৈচৈ তোলা যেতো । সেদিন সাতমসজিদ রোডের গাছ কেটে ফেলা হলো, সেদিন তো কিছু লিখে ফেলা যেত...
"শেষ যুদ্ধটা জেতা হয়ে যাবে যখন
শেষ পারমাণবিক সংকট
হয় খেতে হবে শুধু মরুভুমি
নয় কড়কড়ে টাকার নোট।"
লেখা যেতো অনেককিছুই। লিখবো একদিন। জমে থাকা লেখা গুলো জমাটবদ্ধ অভিমানের মতই জমে আছে। একদিন অভিমান গুলো পাশে ফেলে চুপচাপ লিখে ফেলবো ।
আমাদের কোম্পানি বিক্রি হয়ে যাবে । এমনটাই কথা হচ্ছে। ম্যানেজমেন্ট তেমন ভাবেই এগোচ্ছে। আমাদের মালিক আর ব্যবসা করতে চাইছেন না। ইপিজেডের দুটো ফ্যাক্টরী ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে । কোরোনাকালীন সময়ে ভীষণ একটা ধাক্কা খেয়েছিলাম সেটা এখনো সামলাতে পারিনি। আরো একটা ধাক্কা আসবে কি?
এতোকিছু মাথায় নিয়ে ঘুম আসে না। পাশে আমার ছেলে ঘুমিয়ে আছে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে ভয় হয়।
দীর্ঘদিন আব্বার সাথে কথা হয় না। আব্বা বিছানাগত। মোবাইলেও ঠিকমত কথা বলতে পারেন না। শুয়ে শুয়ে শুধু চিন্তা করেন। কি চিন্তা করেন ঠিক জানি না। আব্বাকে আমার কথাগুলো বলার পরিস্থিতিও আর নেই। অনেক কথা ভেতরে ভেতরে রেখে দিই। কাউকে জানাই না। একসময় আব্বাকে জানাতাম।
না, ভুল বললাম। কাউকে জানাই না কথাটা ঠিক নয়। যখন আমি আর নিহাল একা থাকি তখন অনেক কথা বলে ফেলি। চার বছরের বাচ্চাকে অনেক কথা বলে ফেলা যায়। যখন আমরা হাত ধরে রাস্তায় হাঁটি । একসময় ছেলেটা বলে, বাবা তুমি কি চিন্তা কর?
আমি বলি, অনেক কিছু। কি করবো বুঝতে পারছি না। মন খারাপ হয় খুব।
ছেলেটা চুপ করে থেকে বলে, বাবা আর মন খারাপ কোরো না। সব ঠিক হয়ে যাবে।
এই 'সব ঠিক হয়ে যাবে' কথাটা শিখেছে ওর দাদার কাছ থেকে। আব্বাও বলতেন 'সব ঠিক হয়ে যাবে'। সব ঠিক হবে কিনা জানি না। সব ঠিক হয়তো হয়ও না। তবে কথাটা বলার মত কেউ তো আছে।
শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান,
শিরোনাম নামে আপনাকে লিখেছিলাম। পুরো পোষ্টটাতে আপনাকে নিয়ে তেমন কিছুই লেখা নেই। এমনকি ছবিও না। তবে আপনি ব্লগে আমাকে 'সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে' বলা টাইপের একজন। ফাদার ফিগার।
ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয়।