বৃষ্টিস্নাত দিনে কোন কিছুতেই মন বসানো যায়না। তারপরও যে বিষয়গুলো এদিন প্রাধান্য পায় সেগুলো হয় কাথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকা, মটর ভাজা কিংবা সীমের বীজ ভাজা চিবানো অথবা হাটু পর্যন্ত প্যান্ট তুলে ছাতা হাতে কাজে কিংবা অকাজে কাঁদার গন্ধ পেতে পেতে সামনে এগিয়ে চলা। আর কিছু মানুষ আছে যারা ছাতা হাতে রেখেও ভিজতে ভিজতে পথ চলে। এদের চেহারার দিকে তাকিয়ে কেউ বুঝতে পারেনা চোখের পানি কোনটা আর বৃষ্টির পানি কোনটা... এরাও প্রকৃ্তির কাছে তাদের দুর্বলতা প্রকাশ করতে নারাজ তবে কেউ চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বললেই তারা আর নিজেকে ঢেকে রাখতে পারেনা। তখন চোখ দিয়ে যেন রক্ত নেমে আসে। তাই এসব লোকদের দুর্বলতা দেখা উচিত নয়। তাদেরকে তাদের মতই থাকতে দেওয়া উচিত। আরেক শ্রেণীর লোক দেখা যায় যারা জানালার ধারে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ পরে পরে চশমা খুলে চোখ মুছতে থাকে। তারা নিজেদের মনের সাথে কতইনা খেলতে পারে। তারা তাদের ছোট্ট সেই বাবুটির কথা চিন্তা করে... মনে মনে এরা বলেঃ "ঠিক এ রকমই বৃষ্টির দিনে যখন বাবু ভিজতে চাইত তখন অসুখের বাহানা দিয়ে আটকে রাখতাম। আজ দেখতে দেখতে কতইনা বড় হয়ে গেল! এখন বাবু আমার অনেক বুঝে। সব কিছুর হিসেব ঠিকভাবেই করতে জানে। আর নাহলে কয়জন মা-বাবার কপালে ওল্ড কেয়ারে কেয়ার নেওয়ার ভাগ্য আছে।" তারপর আবার চোখের পানি মুছে। আরেক দল আছে বৃষ্টির দিনে দল বেধে ফুচকাওয়ালাকে বলে মামা ভালো করে পাঁচটা ফোচকা দাও। তারপর একজন বাবার দেওয়া দামী মোবাইল সবার সামনে এনে ঠাশ করে একটা সেলফি তুলে নেবে...
দিন আসলেই বদলে গেছে। তাই বলে আবেগ হারিয়ে যায়নি। আবেগের হয়তো ক্ষেত্রের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। প্রত্যেকটা মুহূর্তই কারো জন্য সুখের আবার একই সময় অন্য আরেকজনের দুঃখের স্মৃতি মনে করে দেয়। আসলে দুঃখ আছে বলেই সুখের এত দাম! তবে সবার জীবনের বেশীরভাগ মুহূর্ত যেন সুখের হয় সেই কামনা করি।