গতকাল ঠিক সন্ধ্যার পরে আমি, আমার বিদেশী সহকর্মী এবং আমাদের অফিস ষ্টাফ বের হলাম গুলিস্থানের সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেট থেকে। এবং ফেরার জন্য সিএনজি খোজ করতে লাগলাম তিনজনে। কিন্তু কোন সিএনজি ড্রাইভারই যেতে রাজি হয়না। দুই একজন রাজি হলেও ভাড়া চায় অনেক বেশী গুলিস্থান থেকে কাকলী ৩০০/৪০০টাকা চায়। আবার সাথে বিদেশী দেখে ভাড়া পারলে আরো বাড়িয়ে দেয়। অগত্যা সামনের দিকে ২/১ টা সিনজি দেখে ঐদিকে হাটতে থাকলাম যদি একটু কমে পাই। এরমধ্যে হঠাৎ এক পুলিশ সার্জেন্টের আগমন এবং কোনদিকে না তাকিয়ে সরাসরি এক সিএনজি ড্রাইভারের গলার টুটি চেপে ধরল। আমি কৌতুহলি হয়ে এগিয়ে গেলাম ঘটনা জানার জন্য এবং সার্জেন্টকে বলতে শুনলাম কিরে তুই নাকি যাত্রিদের লাথি মারিস? তোর ইচ্ছামত ভাড়া আদায় করিস? এরমধ্যে ঘটনা বুঝে গেছি এবং আবার সিএনজি খোঁজ শুরু করলাম এবং সাজেন্ট সাহেবের নজরে পড়ে গেলাম এবং তিনিই ঐ বেয়াড়া ড্রাইভারকে যাবার নির্দেশ দিলেন এবং অবশ্যই মিটারের ভাড়াতে। আমিতো মনে করলাম যাক কপাল বুুঝি খুলল। কিন্তু সিএজিতে উঠে কিছুদুর যেতে না যেতে ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে দিল এবং সুইচ অফ করে সেলফ মেরে শব্দ শুনিয়ে বলল গাড়ীতে সমস্যা হচ্ছে বসেন দেখি ঠিক করা যায় কিনা। আমিতো ঘটনা বুঝে গেছি সে নাটক সাজানোর চেষ্টায় আছে মিটারের ভাড়াতে যাবেনা বলে। যাহোক সে যন্ত্রপাতি নিয়ে নেমে পড়ল এবং মেরামতের জন্য সিএনজির পিছন খুলে কাজ করতে লাগল আমরা গাড়িতে বসে থাকলাম নাটকের শেষ দেখার জন্য। কিছুক্ষনের মধ্যে সে ফিরে এলো এবং আবারো সেলফ মারল কিন্তু কোন শব্দ নাই আমি ঘটনা আবারো বুঝে গেলাম সে সেলফের তার খুলে রেখেছে। ড্রাইভারকে কড়া কথা শুনাতে লাগলাম ঘটনা কি জানার জন্য সে বলল অপেক্ষা করেন আমি অন্য গাড়ি দিয়ে ধাক্কা দিয়ে নিলে ষ্টার্ট হবে, বলে সে আবারো রাস্তায় নেমে অন্য গাড়ীর জন্য অপেক্ষা শুরু করল কিন্তু কেউ থামেনা। আমি বললাম আপনি বসেন আমার লোক ধাক্কা দিয়ে দিবে। সে এসে বসল এবং আমার লোক ধাক্কা শুরু করল কিন্তু ষ্টার্টের শব্দ শুনে বুঝলাম এবারো হবেনা। আমি বললাম ভাই আপনি ঠেলে সামনের মোড়ে নামিয়ে দেন আমরা অন্য গাড়ীতে চলে যাব কিন্তু সে সামনের মোড়ে যেতে রাজি হয়না কারন সামনের মোড়ে সার্জেন্ট আছে। এবার আমি ধৈয্য হারিয়ে নেমে বললাম (মারমুখী হয়ে) তুই যাবি কিনা বল তোর নাটক আমি বুঝে গেছি। মুখ দিয়ে তোর সাথে অনেক কথা বলেছি এবার আমার হাত কথা বলা শুরু করবে গাড়ী ঠিক কর এখনি। তুই যতই নাটক করিসনা কেন আমি আজ তো গাড়ীতেই যাব। আমার অগ্নিমূর্তি দেখে মনে হয় সে কিছুটা ঘাবড়ে গেল এবং আবার যন্ত্রপাতি নিয়ে সিএনজির পিছন খুলে নাটক করতে লাগল। আমি দেখতে থাকলাম কি করেছে সে কারন আমার অল্প অটোমোবাইল সার্ভিসিংয়ের জ্ঞান আছে। দেখলাম সে প্লাগ এর তার ঢিলা (লুজ) করেছে এবং ব্যাটারি থেকে বডি কানেকশন খুলে রেখেছে। আমি দাড়িয়ে থাকলাম সে লাগাল এবং ফিরে আসা মাত্রই গাড়ী ষ্টার্ট নিল। আর কোন সমস্যা নাই গাড়ী চলতে শুরু করল এবং কাকলী পর্যন্ত আসতে একবারের জন্য কোনই সমস্যা হলনা।
এই হলো আমার মিটারে সিনজি চড়ার অভিজ্ঞতা। হা হা হা ............