নরেন্দ্র মোদি'র নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার গরু নিধন আর ভক্ষণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকে সেখানকার আমিষভোজীদের অবস্থা বড়ই করুণ। গরু ব্যবসাও একপ্রকার বন্ধই বলা যায়। বাংলাদেশে কোরবানি'র ঈদের সময় ভারতীয় গরুর ব্যাপক চাহিদা আছে। এবার কি হয় কে জানে! চোরাই পথে ভারতীয় গরু আসবে - সেই উপায়ও তো নাই। বিএসএফ সেখানে ওঁৎ পেতে বসে আছে। তাই আশা করা যায়, এবার দেশের টাকা দেশেই থেকে যাবে। আমাদের খামারিরা ফাটায় ব্যবসা করবে।
শুনেছিলাম, বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন অংশে নাকি বিশালায়তনের একাধিক চর জেগে উঠছে। এইরকম কয়েকটা চরে সেনাবাহিনীর লোক দিয়ে নাকি অাধুনিক আবাসন গড়ে তোলা হচ্ছে। তা আমার কথা হলো, রামপালের বদলে এইরকম একটা চরে/দ্বীপে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করলেই হয়। বনদস্যুদের অস্ত্র জমা দিয়ে খুব কি কাজ হলো? বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে সুন্দরবনের প্রাণীরা এমনিতেও ক্ষতিগ্রস্থ হবেই।
গত এক বছরে জঙ্গিবাদ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। অার অাশংকাজনকভাবে বেড়েছে ধর্ষণ অার খুন। অামি চার বছর বয়সী একটা মেয়ের পিতা। প্রতিনিয়ত হতভম্ব হয়ে যাচ্ছি শিশু ধর্ষণ আর খুনের খবর দেখে! মেয়ের জন্য দুশ্চিন্তা হয়। কিশোরী মেয়ে কয়দিন পর স্কুলে যাবে। স্কুলে দিয়ে আর নিয়ে আসার মাঝখানে যে কোন সর্বনাশ ঘটে যেতে পারে। শিক্ষকরাই তো বদমায়েশ! আমি অফিসে, মেয়ের মা বাসায় - প্রচন্ড টেনশনে প্রতি মূহুর্ত পার করা। সবচেয়ে বড় কথা, আল্লাহ না করুন, কিছু একটা যদি হয়ে যায়, বিচার তো পাবো না। কি অসহায় আমরা এই দেশে!
অফিসে গত সপ্তাহে নতুন এক জন জয়েন করেছেন। গুলশান শাখা থেকে বদলি হয়ে এসেছেন। ভদ্রমহিলার বয়স ৩২ কি ৩৩। লম্বা, চমৎকার দেখতে। কাজেও দক্ষ। যাই হোক, অন্য এক সহকর্মীর ব্যক্তিগত গাড়ি আছে, ছুটির সময় তাকে নিতে আসে। ওই লাইনে যারা থাকে, তারা উনার গাড়িতে করেই যায়। তো গতকাল নতুন আপাও তাদের সাথে গাড়িতে উঠেছেন। উনার বাসাও ওই লাইনে। পথে ড্রাইভার হার্ডব্রেক করলে আপার ছোট্ট পার্স হাত থেকে পড়ে যায়, অার তার মধ্যে থেকে লাইটার, চকচকে নোট দিয়ে বানানো পাইপ ইত্যাদি বের হয়ে আসে। সবার চোখ ছানাবড়া!
ইয়াবা'র কাছে নব্বইয়ের ফেন্সিডিল আর পরবর্তী সময়ের হেরোইন হার মানতে বাধ্য হয়েছে। 'কারা খায়?' - এই প্রশ্ন না করে বলতে হবে, 'কে না খায়?' কয়েক মাস আগে পেপারে দেখলাম, মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প থেকে ১৬০০ কেজি (আট বস্তা) গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। কে যেন বললো, ইয়াবার ওপর শতভাগ emphasis দেওয়ার কারণেই নাকি এই ধরপাকড় উদ্যোগ। জানি না সত্যি কি না। জানি না এর পরিণতি-ই বা কি।
'আগস্টে বন্যার আশঙ্কা' শীর্ষক সংবাদ দেখে না সারতে্ই ঠিক এক তারিখ থেকে বৃষ্টি শুরু! উত্তরের মেয়রের স্বরল স্বীকারোক্তি ভালো লেগেছে - ঢাকাকে জ্যাম আর জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করার কোন উপায় আদতে নাই। দুই মেয়রের মধ্যে আনিসুল হক সাহেবের প্রতি সাধারন মানুষের চাওয়া পাওয়া বেশি কারণ পরিবার আর ক্যারিয়ার বিবেচনায় টাকা খাওয়ার প্রতি তাঁর তেমন আগ্রহ থাকার কথা না। সেটা তাঁর যথেষ্ঠই আছে। উনি কাজে বিশ্বাসী, কাজ যে টুকটাক করছেন সেটাও দৃশ্যমান। কিন্তু যখন দেখবেন ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় যেখানে সেখানে ময়লার স্তূপ পড়ে আছে, তখন আসলে উল্টা মেয়র সাহেবের জন্য মায়া-ই হবে। জাতি হিসাবে আমরা তো 'ওয়ান পীস।'
ওইদিন এক বন্ধু বলছে, ভালো-কে ভালো, আর খারাপ-কে খারাপ বলতে হবে। অবশ্যই ঠিক। বলে বর্তমান সরকারের দুইটা কার্যক্রম তার পছন্দ হয়েছে। কি কি? হাজারিবাগ থেকে ট্যানারিশিল্প সাভারে স্থানান্তর করা আর রাজাকারগুলাকে ঝুলানো। বললাম, কয়েকদিন আগে টিভি-তে সাভারের অবস্থা দেখলাম। আই মীন দুরবস্থা। কি রকম? বললাম, বুড়িগঙ্গা বাঁচাতে গিয়ে এখন ধলেশ্বরী'র পোঁদ মারা হচ্ছে (বাজে ভাষা'র জন্য ক্ষমা চাই)। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কোন দ্বিমত পোষন করলাম না। করার সুযোগ-ও নাই। তবে এই একটা বিষয় দিয়ে ব্যর্থতাগুলাকে আড়াল করার চেষ্টা দৃষ্টিকটু বটে।
সবেশেষে বলতে চাই, সৃষ্টিকর্তার দেওয়া আমাদের এই জীবনটা মহামূল্যবান। জীবনে সুখ, আনন্দের পাশাপাশি দুঃখ, হতাশা থাকবেই। সুখ আর দুঃখের এই সংমিশ্রণ-ই জীবন-কে মহিমান্বিত করে। পৃথিবীর স-ক-ল সমস্যার সমাধান আছে। পরিবারের চুপচাপ স্বভাবের ছোট ছেলেটা বা মেয়েটার তারুণ্যের প্রথম দিককার দিনগুলাতে তার মহাব্যস্ত বাবা-কে প্রয়োজন হতে পারে। অনেক কথা অাছে বাবা তোমাকে বলার। আমরা যেন কষ্ট করে হলেও অামার ছোট্ট ছেলে অার মেয়েটা-কে সময় দেই।
ভালো হোক সবার...
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৭:১২