এইসব দিনরাত্রি, সংশপ্তক, বহুব্রীহি, অয়োময়, বারো রকম মানুষ, ফিরিয়ে দাও অরণ্য, কোথাও কেউ নেই - কতো কালজয়ী নাটক আমরা দেখেছি। তারপর ডিশ কালচার পরবর্তী যুগে বাংলা চ্যানেলের সংখ্যা বাড়তে থাকলো। ফরীদি/আফজাল/সুবর্ণা/নূর পরবর্তী যুগে হাকিম/সেলিম/জাহিদ/বিপাশা/শমীরা বেশ ভালো করলো। কিন্তু তার পরের প্রজন্মের শিল্পীরা মেধার দিক থেকে তাদের সমকক্ষ হতে পারে নাই। পাশাপাশি, নতুনদের সম্পর্কে পুরনোদের যাবতীয় অভিযোগ তো আছেই।
সময় বদলাচ্ছে। নতুনদের মধ্যে থেকে একঝাঁক উদীয়মান শিল্পী আত্মপ্রকাশ করছে। তাদের নিয়েই লেখা।
অপূর্ব: বর্তমান প্রজন্মের সবচেয়ে বড় তারকা। তার সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নাই। শহুরে চরিত্রে সে অদ্বিতীয়। 'বড় ছেলে' নাটকে তার অসাধারন কাজ দেখার পর এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নাই।
সানজিদা প্রীতি: টিভি নাটকে বেশ ক'বছর হয়ে গেলো। মঞ থেকে টিভি। তাই স্বাভাবিকভাবেই তার কাজ বেশ ভালো।
আফরান নিশো: তার বেশ কয়েকটা নাটক দেখেছি। খুব ন্যাচারাল। চরিত্রের সাথে ভালো মিশতে পারে।
অ্যালেন শুভ্র: ছোট মরিচে ঝাল বেশি।
চঞ্চল চৌধুরী: অসাধারন শিল্পী। কিন্তু সীমাবদ্ধতা অাছে। শহুরে/আরবান চরিত্রে তাকে মানায় না।
লুৎফর রহমান জর্জ: বাকের আর বদির বিশ্বস্ত সহচর হিসাবে সেইই কবে ক্যারিয়ারের শুরু! দীর্ঘ, মারমুখী শারীরিক গঠন, অসামান্য রূক্ষতা, জিন্স/কেডসের সাথে কোমরে গোঁজা ড্যাগার আর দিনরাত মোটরসাইকেল হাঁকানো - সব মিলিয়ে মজনু আসলেই ভীতিকর ছিলো। ৪২০ নাটকে আমি মুগ্ধ হয়ে শুধু তাকেই দেখেছিলাম।
আরেফিন শুভ: আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সে আজকের অবস্থানে এসেছে। নতুন চলচ্চিত্র 'ঢাকা অ্যাটাকে' তার কাজ বেশ ভালো।
স্বজল: তার কাজ আমার ভালো লাগে না। কিন্তু লেজেন্ডারি টিভি ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের মতে, তার পর্দা উপস্থিতি বেশ উচ্ছল। তাঁর কথা তো আর ফেলে দেওয়া যায় না।
ফজলুর রহমান বাবু: উনি লেজেন্ড পর্যায়ে চলে গেছেন। হুমায়ূন ফরিদীর পরে এরকম একজন চরিত্রাভিনেতা অনেক বড় পাওয়া।
পার্থ বড়ুয়া: গায়ক থেকে অভিনেতাদের মধ্যে সবচেয়ে সফল।
তিশা: তার অভিনয় আমার ভালো লাগে না। কিন্তু সে যে দারুণ মেধাবী, এটা স্বীকার করতেই হবে।
বিদ্যা সিনহা মীম: অভিনয় কেমন, তা নিয়ে সংশয় আছে। তবে কোলকাতার কোন এক চলচ্চিত্রে সোহমের বিপরীতে তার নাচ দেখে আমার চিবুক প্রায় মাটি ছুঁয়েছিলো। বলিউডকে টেক্কা দেওয়ার মতো শিল্পী সে।
জয়া আহসান: আমি আর কি বলবো? দেশে বিদেশে তার পুরস্কার আর খ্যাতিই বলে দেয় বর্তমানে মেয়েদের মধ্যে সে সেরা।
রুনা খান: অামার খুব পছন্দের শিল্পী। মঞ্চ আর টিভি - দুই জায়গাতেই দারুণ শক্তিমান।
সবশেষে বলতে চাই নতুন ছবি ঢাকা অ্যাটাকের ভিলেনের কথা। দূর্দান্ত অভিনয় করেছে সে। নিঃসনেন্দহে ভবিষ্যৎ তারকা। নামটা জানি না।
মিশু সাব্বির, মোশাররফ করিম - এরা জনপ্রিয় হলেও একই ধরনের চরিত্রেই দেখা যায়।
নির্মাতাদের মধ্যে থেকেও দারুণ সব ট্যালেন্ট উঠে আসছে। অামি বিশ্বাস করি, আমাদের টিভি আর চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ বেশ ভালো।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৮:৩১