somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বপ্ন, স্মৃতি,অভিজ্ঞতা এবং বাস্তবতা। (পর্ব- ১) :|

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাহিরে আজ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। ঠিক যেমন দেশের বর্ষাকালের পূর্বমুহূর্ত। কিন্তু এখানে এটা কোন বর্ষাকালের আগমনবার্তা নয়। এইতো গতপরশু আমার জীবনের প্রথম বাস্তব "তুষার মানব" দেখলাম। হয়তোবা কিছুদিনের মাঝে নিজের হাতে বানানোর সৌভাগ্যটাও হয়ে যাবে।

এইতো প্রায় ১ বছর ১ মাস ২৮ দিন হল নিজের দেশ থেকে ৫৫০০ কিমি দূরে রাশিয়াতে আমি এখন "ডক্টর অফ মেডিসিন" হবার উদ্দেশে অবস্থানরত। দেশে থাকতে আমি একদম ই শহরের বাইরে মানে ঢাকা এর বাইরে যেতাম না বললেই চলে। সবথেকে বড় কথা, একা একা তো না ই। মাঝে মাঝে মা-বাবা আর বড় ভাইয়ের সাথে মামার বাড়ি অথবা অন্যান্য আত্মীয়ের বাড়িতে বেরাতে যেতাম। তবে সেটা ছিল খুবই কম, কারন আমি একা থাকতেই বেশি পচ্ছন্দ করি। মনে করে দেখলাম, আমি ঢাকা এর বাহিরে ১০-১২ দিনের বেশি কখনো থাকিনি। এইটাই আমার সবথেকে বেশিদিন বাইরে থাকা এবং একেবারে বছর। যাইহোক।
এয়ারপোর্টে ঠিক যেই মুহূর্তে ঢুকলাম আর দেখলাম মা-বাবা আর ভাই অন্যপাশে দাড়িয়ে আর আমি আর একপাশে, তখনি বুঝে ফেললাম আর দেরি করে লাভ নেই, এখন থেকে,আমি আর কারো ছায়ায় নেই। নিজের ছায়াকে অতিক্রম করে,ছায়াকে পিছনে ফেলে দিলাম।শুরু হল এক নতুন যাত্রা বিভিন্ন রকমের অনুভূতিকে সাথে নিয়ে। একদিকে পরিবারের লোকজন,দেশ ও বন্ধুবান্ধব আর অন্যদিকে, জীবনের এক নতুন মোড়, এক নতুন অভিজ্ঞতার সাগর।

আমার এই অভিজ্ঞতার সাগরে ঝাপ দেওয়া শুরু হল, বিমানে চড়ার মাধ্যমে। এই অভিজ্ঞতাটা সারাজীবনই আমার মনে থাকবে। কাস্টমস অফিসারদের পাড় করে যখন বিমানে উঠলাম তখন একটু অন্যরকম মনে হল। অভিজ্ঞতাটা নতুন বিধায়, চারিদিকে উৎসাহে তাকানোটাই মাথায় সবথেকে বেশি কাজ করল। বিমানে যাত্রা শুরু হল, জি,পি,এস এর পর্দায় গতিবিধি আর বিমানের জানালা দিয়ে বাহিরের অপরূপ দৃশ্য দেখতে দেখতেই ।কিছুটা সময় কেটে গেল, ঠিক যেমনটা কেটে গেল,বিমানে চড়ার কৌতূহল। বলা বাহুল্য, ক্রিস্টফার নোলানের " ইনসেপশন" দেখার ইচ্ছাটাও বিমানে মিটিয়ে ফেললাম। ফিল্ম বাফ বলে কথা।আর একটা জিনিশ লক্ষ্য করলাম যে, আমি যেই বিমানটায় চরছিলাম, আমার দেখামতে, সেটা ৩১,১৮৯ ফুট উঁচুতে আর ৫৮৮ মাইল/ ঘণ্টা বেগে চলছিল। সাদা মেঘদের খেলা দেখতে দেখতে দোহা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট হয়ে নতুন আর এক বিমানে চড়ে
চলে আসলাম মস্কো দামোদেদোভা এয়ারপোর্ট। দোহা এবং মস্কো- দুটাতেই অবতরন ছিল মনে রাখার মতন। দোহাকে মনে হচ্ছিল একটি ছোটখাটো উন্নত দ্বীপ, আর রাতের আকাশে মস্কো অবতরনের দৃশ্য এখনও আমার চোখে ভাসে। অসাধারণ ছিল সেই দৃশ্য। এইতো গেল আমার বিমানে চড়ার অভিজ্ঞতা। ছোট জীবনের এক ছোট অভিজ্ঞতাই বলা সঠিক হবে। কারণ অন্য ভাষাভাষী এক মানুষের দেশে, গোর্কি টলস্তয় আর গ্যাগারিনের দেশে, আসা মানে এক অভিজ্ঞতার সাগরে ঝাপ দেওয়াই বটে।

আজকে আর লেখার ইচ্ছা হচ্ছে না। বাকিটা আর একদিন বলবো।তবে নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশ, নতুন আবহাওয়া, নতুন ভাষা সাথে নিয়ে এখনো সাঁতরে যাচ্ছি সেই অভিজ্ঞতার সাগরে। তার সাথে চলছে নিজেকে মানিয়ে নেবার সংগ্রাম এবং আমি এইসব খুব উপভোগ করছি।

সবসময় কোন লেখা শেষ করার সময় একটা উক্তি দিয়ে শেষ করা,আমার মতে ভাল।
"Get Busy Living Or Get Busy Dying" - আশা করছি যে আমি উক্তিতার প্রথম অংশে আছি।
শান্তনু সেন। ( বিকাল ৫ টা বেজে ৫ মিনিট, শনিবার ০৭-০১-২০১২)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×