'কোরবানি' নামটা শোনলেই যেন তথাকথিত
নাস্তিকদের মনে পশুর প্রতি দরদের ষোলকলাই
পূরণ করার সূযোগ এসে যায়। যদিও, হোটেল বা
রেস্তোরাঁয় যখন প্রতিদিন শত শত মুরগ-মুরগির ঠ্যাং
চোষে খায় তখন তাদের পশুপ্রীতির কিয়দংশও
প্রকাশ পায় না। কারণ পেট পুরতে মানবতা লাগে না।
_
কোরবানি? সেতো বর্বরতা। কোরবানি? সেতো
অমানবিকতা।
________________________________________________
যারা বিজ্ঞানের মোড়কে নাস্তিকতাককে পুরতে
যান তারাই কোরবানিককে বর্বরতা বলে চালান।
তাদের বিজ্ঞান সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলেও তারা সেটা
পার্শে রেখে নাস্তিকতার ঝাণ্ডা নিয়ে এগোয়।
কেন আপনারা পশুপ্রীতি দেখাচ্ছেন এতো?
১৪০০-১৫০০ বছর আগেই একজন সেটার ব্যবহারিক
প্রয়োগ করে গেছেন।
-
পশুর প্রতি দয়া করা ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করা। আর তা
নিমণরূপে সম্ভব: এমন ব্যবস্থা নিয়ে জবেহ
করা,যাতে পশুর অধিক কষ্ট না হয় এবং সহজেই প্রাণ
ত্যাগ করতে পারে। জবেহ যেন খুব তীক্ষ্ম
ধারালো ছুরি দ্বারা করা হয় এবং তা খুবই শীঘ্রতা ও
শক্তির সাথে জবেহ স্থলে (গলায়) পোঁচানো
হয়। মূলত; পশুর বিনা কষ্টে খুবই শীঘ্রতার সাথে
তার প্রাণ বধ করাই উদ্দেশ্য নবী (সা হাদিসে
এসেছে-
ﻋﻦ ﺷﺪﺍﺩ ﺑﻦ ﺃﻭﺱ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : « ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﺘﺐ ﺍﻹﺣﺴﺎﻥ ﻋﻠﻰ ﻛﻞ
ﺷﻲﺀ ﻓﺈﺫﺍ ﻗﺘﻠﺘﻢ ﻓﺄﺣﺴﻨﻮﺍ ﺍﻟﻘﺘﻞ ﻭﺇﺫﺍ ﺫﺑﺤﺘﻢ ﻓﺄﺣﺴﻨﻮﺍ
ﺍﻟﺬﺑﺢ ﻭﻟﻴﺤﺪ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﺷﻔﺮﺗﻪ ﻓﻠﻴﺮﺡ ﺫﺑﻴﺤﺘﻪ »
সাহাবি শাদ্দাদ ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত,
নবী কারীম (সা.) বলেছেন: আল্লাহ রাববুল
আলামীন সকল বিষয়ে সকলের সাথে সুন্দর ও
কল্যাণকর আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। অতএব,
তোমরা যখন হত্যা করবে তখন সুন্দরভাবে করবে
আর যখন জবেহ করবে তখনও তা সুন্দর ভাবে
করবে। তোমাদের একজন যেন ছুরি ধারালো
করে নেয় এবং যা জবেহ করা হবে তাকে যেন
প্রাশান্তি দেয়।
[সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৯৫৫]
বধ্য পশুর সম্মুখেই ছুরি শান দেওয়া
উচিত নয় (মাকরূহ)। যেহেতু নবী (সা.)
ছুরি শান দিতে এবং তা পশু থেকে
গোপন করতে আদেশ করেছেন
এবং বলছেন.যখন তোমাদের কেউ
জবেহ করবে, তখন সে যেন তাড়াতাড়ি
করে। (মুসনাদে আহমদ, ২/১০৮; ইবনু
মাজাহ, হাদিস নং ৩১৭২; সহিহ তারগীব,
১/৫২৯)।
আর যেহেতু পশুর চোখের
সামনেই ছুরি ধার দেওয়ায় তাকে চকিত
করা হয়; যা বাঞ্ছিত অনুগ্রহ ও
দয়াশীলতার প্রতিকূল। একইভাবে, একটি
পশুকে অন্য একটি পশুর সামনে জবেহ
করা এবং ছেচরে জবেহ স্থানে
টেনে নিয়ে যাওয়াও মাকরূহ। কোরবানি সম্পর্কিত
এরকম শতাধিক হাদিস রয়েছে।
কোরবানীতে পশু জবাই করা নিয়ে
কাদের এতো মাথাব্যথা? তারা কি পশুর মাংস খায় না? তখন
কোথায় থাকে পশুপ্রীতি? আসলে পশু জবাই
কোন মাথা ব্যাথা নেই ওদের মাথা
মুসলমানদের নিয়ে।
.
এবারে আসুন দেখি কোরবানির পশুকে কি পরিমাণ
কষ্ট দিয়ে আমরা জবাই করি?
কোরবানির পশুকে ১০০% ইসলামী নিয়মে জবাই
করতে পারলে সেটার কষ্টের পরিমাণ কমে
শূন্যতে চলে আসে। পশুকে জবাই করার
ক্ষেত্রে হাদিসে সাধারণত ধারালো অস্ত্র
ব্যবহারের তাকিদ দেয়া হয়েছে। এতে অল্প
সময়েই পশুর কোরবানি শেষ হয়। পশুকে গলা
দিয়ে জবাই করতে বলা হয়েছে। গলা দিয়ে জবাই
করার সময় পশুর প্রধান সবগুলো ধমনী ও কিছু শিরা
ও নার্ভা সিস্টেম কেটে ফেলা হয় ফলে পশু
কোনো ব্যথাই অনুভব করে না। এছাড়া, চারটি
পায়ের প্রত্যেকটির ধমনী কেটে ফেলা হয়।
পশু এসময় কষ্টের কারণে হাত-পা ছোড়াছুঁড়ি করে
না। বরং শরীরের সমস্ত রক্ত বেরিয়ে যাওয়ার
নিমিত্তেই এটা করে। তাহলে, একজন
অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষও কি এটা বর্বরতা বলতে
পারে? নাকি এটাই মানবতার চূড়ান্ত প্রকাশ?
-
কোরবানির প্রভাব-
কোরবানির প্রভাব সম্পর্কিত আমার বাস্তব অভিজ্ঞতাই
বলি। আমার মতো যারা দরিদ্র ঘরের তারা কেবল
বছরের এই সময়টাতেই সপ্তাহব্যাপী মাংসের দেখা
পায়। এটাই একমাত্র দিন যখন পুরো মুসলিম বিশ্বের
প্রত্যেক ব্যক্তি একই দিন মাংস আহার করে।
তাহলে আপনারাই বলুন- কোরবানি কি মানবতার
বিরুদ্ধে?
আমার বয়স কম। গুছিয়ে লিখতে জানি না। ভূলত্রুটির
জন্য অগ্রীম ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।
শারীরিক অক্ষমতার কারণে লিখতে খুবই কষ্ট হয়।
তারপরেও লিখলাম। আসসালামু-আলাইকুম।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৭