প্রথমত আপনার দুঃচিন্তার কারণটা নির্ধারণ করুন। তারপর ধাপে ধাপে আসছি সেটার প্রতিকারে।
.
ধরুন আপনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চান। এজন্য আপনার দুঃচিন্তায় রাতের ঘুম আর দিনের কাজ মাটি হয়ে যাচ্ছে। আপনি বরং প্রধানমন্ত্রী না হয়ে হয়ে যাচ্ছেন প্রধান ফকির (ফকিরদের আদর্শ)। তাহলে আম গেলো সাথে ছালাও।
.
এবারে আধঘণ্টার জন্য পৃথিবীর সকল কাজকে ছুটি দিন। ঘরের সবচেয়ে নির্জন স্থানটি খোঁজ করুন। এবারে হাদিসে উল্লেখ্যভাবে অর্থাৎ দুই পা একটা আরেকটার উপরে তুলে বসুন। হাত দু'টো হাটুর উপরে রাখুন। চোখ দু'টো বন্ধ করে আনুন। সজোরে নিঃশ্বাস নিন এবং ছাড়ুন।
.
এবারে আসল কাজ শুরু হবে। মনে করুন আপনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সংসদ ভবন থেকে বেরিয়ে কোনো সাথী ছাড়াই নিজ বাসভবনে আসছেন। রাস্তার মধ্যে আপনাকে একজন দেখেই চিনে ফেলল। সে দৌড়ে একটা লাইব্রেরীতে গেল। একটা কলম আর একটা ডায়েরি নিয়েই আপনার দিকে ছুটে আসছে অটোগ্রাফ নেবে বলে। আপনি তো ভয়ে আধখানা! একা বেরিয়ে কি বিপদেই না পরা গেল! অথচ সে আপনার কাছে আসছে একটা অটোগ্রাফ পাবার আশায় যাতে সবার সাথে বুক ফুলিয়ে বলতে পারে সে প্রধানমন্ত্রীর খুব কাছের লোক। সে আপনার পেছনে দৌড়াচ্ছে আপনিও ভয়ে দৌড়াচ্ছেন। দৌড়াতে দৌড়াতে লোকটা ঢুকে গেল ম্যানহোলের ভিতরে। এদিকে খুবই সচেতন এক লোক হেটে যাচ্ছিলেন সেই ম্যানহোলের পাশ দিয়ে। ম্যানহোলের ভিতরে ব্রু.. ব্রু.. শব্দ শুনে তিনি গন্ধ ছড়াবে ভেবে ম্যানহোলটা ভাল করে আটকে দিলেন। এদিকে আপনার অটোগ্রাফ নিতে আশা ভদ্রলোক পটল তোলেছেন। যে লোকটা ম্যানহোলটা এটে দিয়েছিল সেই লোকটা দায়িত্বশীল এক পুলিশ অফিসারের চোখে পরল। তিনি এর আগে সোনালি ব্যাংক-এর টাকা ছিন্তাই(যেটা হয়েছিল সুরুংগ কেটে) সেই কেসের তদন্ত করছিলেন। তিনি এসে ওই সচেতন লোকটাকে নিয়েই হাজতে ভরলেন সন্দেহজনক ভেবে।...
কি অনর্থই না ঘটে গেল! এর পরেও কি আপনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীত্ব চান?
.
এটাকে সায়েন্সের ভাষায় মেডিটেশন বলে। এটা একজন মানুষের জন্য খুবই উপকারীও বটে। এরকম আরও কিছু মেডিটেশন ডাক্তারেরা রোগীদের দিয়ে থাকেন এবং এটা বেশ কার্যকর। এটা আপনাকে বাস্তব জগতের সাথে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করবে।
.
হযরত মুহাম্মদ(সঃ) একদা নিজ অস্তিত্ব নিয়ে সংকটে পরে গেলেন। তিনি ভাবলেন- "আমি কে? কোথা হতে এসেছি? আর কোথায়ই বা যাব? আমায় কে বানিয়েছে? সবকিছু সৃষ্টির উদ্দেশ্য কি? চারিদিকে কি ঘটছে এসব?"
এসব প্রশ্নের সমাধা পেতেই তিনি জাগতিক সকল চিন্তা ভুলে গিয়ে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটিয়েছেন বছরের পর বছর। অবশেষ, আল্লাহ্ সুবনাহু তায়ালা হযরত জিবরাইলকে(আঃ) দিয়ে পাঠালেন কোর'আনের সেই অমিত বানি। নবীজিকে(সঃ) করলেন মানবজাতির জন্য আইডল আর কোর'আনকে করলেন মানব প্রজাতির ম্যানুয়াল। আর এখানে সবচেয়ে বড় মেডিটেশন হল নামাজ। যেখানে আপনার সাথে আপনার স্রষ্টার মৌন মিলন। যা সকল দুঃচিন্তার মহৌষধ!
.
আমি ছোট্ট মানুষ। গুছিয়ে লিখতে জানি নে। ভুল হলে দয়া করে শুধরে দিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৮