অত্যধিক ধূমপানের কারণ খুঁজে পেয়েছেন
ব্রিটেনে বিজ্ঞানীদের একটি দল। এজন্যে তারা
দায়ী করেছেন মানুষের শরীরের বিশেষ
একটি জিনকে।
তারা বলছেন, ওই জিনটির কারণেই কিছু মানুষ
সিগারেটের নেশায় অতিরিক্ত মাত্রায় আসক্ত হয়ে
থাকে।
চিকিৎসা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী দ্যা
ল্যান্সেটে প্রকাশিত এই গবেষণা প্রতিবেদনে
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সারা জীবন ধরে ধূমপান করার
পরেও কোনো কোনো মানুষের ফুসফুস
কেনো ভালো থাকে, তার রহস্য উন্মোচন
করতেও তারা সক্ষম হয়েছেন।
ব্রিটেনে ৫০ হাজারের মতো লোকের কাছ
থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে ওপর গবেষণা চালিয়ে
এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা।
যারা ধূমপান করেন, যারা করেন না, যাদের ফুসফুস-
জনিত অসুখ আছে, যাদের নেই- এরকম
লোকজনের মধ্যে তুলনা করে বিজ্ঞানীরা
বলছেন, গবেষণার এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন রকমের
প্রায় তিন কোটি জিন তুলনা করা হয়েছে।
ঢাকায় ২০ বছর ধরে ধূমপান করছেন, প্রতিদিন যাকে
৪০টির মতো সিগারেট খেতে হয়, তিনি বলছেন,
তার এই আসক্তি যতোটা না শারীরিক তারচেয়েও
বেশি মানসিক।
বহুবার সিগারেট ছেড়ে দিতে চেয়েছেন তিনি।
কিন্তু পারেননি।
সর্বোচ্চ এক বছরও না খেয়ে থেকেছেন।
কিন্তু কি এক অজানা কারণে তাকে আবারও
সিগারেটের কাছেই ফিরে আসতে হয়েছে।
ব্রিটেনে এই গবেষণা নিবন্ধের অন্যতম একজন
লেখক অধ্যাপক মার্টিন টবিন বলছেন, ফুসফুসের
রোগের জন্যে যদিও ধূমপানকে প্রধানত দায়ী
করা হয়ে থাকে, তারপরেও এর জন্যে দায়ী
অন্যান্য কারণগুলোকে বুঝতে পারাও জরুরী।
তিনি বলেন, “বিভিন্ন রোগ ও তামাক সেবনের
জন্যে দায়ী ভিন্ন ভিন্ন জিন সম্পর্কে আমরা
জানতে পেরেছি। এসব জিনের যেসব কোড
আছে সেই প্রোটিন সম্পর্কেও আমরা জানতে
পেরেছি। অসুখ বিসুখ সারাতে কিম্বা প্রতিরোধ
করতে আমরা যেসব ওষুধ
তৈরি করি, সেগুলো আসলে শরীরের ওইসব
প্রোটিনকে টার্গেট করেই করা হয়ে থাকে।”
বিজ্ঞানীরা বলছেন, যারা ধূমপান করেন তাদের
অনেকের শরীরেই ডিএনএর এরকম এক রূপান্তর
ঘটে যা ফুসফুসের কর্মক্ষমতা আরো বাড়িয়ে
দেয় এবং ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাবকে প্রতিরোধ
করতে পারে।
ধূমপান করলেই যে সবার ফুসফুসের অসুখ হবে
সেটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। আবার সারা জীবন
একটি সিগারেট না খেলেও তার ফুসফুস ভালো
থাকে তারও কোনো গ্যারান্টি নেই।
ঢাকায় ওই ধূমপায়ীর দাবী ছিলো সিগারেটের প্রতি
তার আসক্তি যতোটা না শারীরিক, তারচেয়েও
বেশি মানসিক। আসলেই কি তাই- শুনুন বক্ষ-ব্যাধি
বিশেষজ্ঞ ড. এ কে এম মোশাররফ
হোসেনের সাক্ষাৎকার।
ধূমপানের কারণে হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও
বাড়তে পারে। কিন্তু এই গবেষণায় সেসব
রোগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।