somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

ফুল পাখি আর আমি

০৪ ঠা জুন, ২০১৯ সকাল ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ঘুম ভেঙ্গে জেগে চোখ মেলে জানলা দিয়ে দৃষ্টি মেলে দিলেই দেখতে পাই, সবুজ মাঠ শুয়ে আছে আলস্যে। কিছু পাখি আনমনে কথা বলছে হেঁটে হেঁটে মাঠের কানে কানে। দৃষ্টি আরো প্রসারিত করলে এক ঝাঁক ঘন গাছের মাঝে চলে যায়। সেখানে অনেক পাখির কোলাহল সেটা চোখে পরে না, তবে বুঝতে পারি।
ঘুম ভেঙ্গে এমন দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যের সাথে দৃষ্টির মিলন ঘটলে সকালটা হয়ে উঠে আনন্দিত।
হলুদ ডেনডেলিয়ন, চোখ মুদে আছে তখনো। সবুজের ফাঁকে ফাঁকে দেখা যায় কিছু হলুদ আভাস আড়ালে আবডালে। বেলা বাড়তে থাকলে, হলুদ কুড়ি গুলো ফুটতে থাকে একটু একটু করে। এক সময় সবুজ মাঠটাই হয়ে যায় হলুদ গালিচা। তখন হলুদ মাঠের পরে সবুজ গাছের সারি। রঙ বদলের পালা চলে দু বেলা পালা করে সকালে বিকালে। একটাই মাঠ একবেলা সবুজ একবেলা হলুদ কখনো হলুদের বুটি দেয়া সবুজ। রোদের আলোর সাথে ভালো বন্ধুত্ব ডেনডেলিয়নের, সূর্যেমুখির মতন। মাঝে মাঝে আমি মাঠের ঘাসে বসে পরি। ডেনডেলিয়নের মুকুট বানিয়ে পরি। বেশ হালকা মিষ্টি একটা সুঘ্রাণ আছে। তার মাঝে শুয়েও তাকি কখনো সময় পেলে। আজকাল ডেনডেলিয়নের উপকারিতার কথা শুনছি। অনেকে চা সালাদ খাচ্ছে।




আমি তখনো ঘুম চোখে আলস্য নিয়ে জানলায় ঝুলে থাকা ফুলদের সাথে কথা বলি। সকালের চা শেষ করে আনমনে হাঁটতে বের হই। দরজা খোলার সাথে সাথে ফুলের ঘ্রাণ জড়িয়ে ধরে। মাখিয়ে দেয় সুগন্ধ শরীর জুড়ে। মন ভরে উঠে। সাথে নানা রকম পাখির ডাক ভেসে আসে কানে। কেউ কথা বলছে আনমনে। কেউ ভালোবাসায় মগ্ন। কেউ বা অস্থির হয়ে ডাকছে শিশুকে । ঘর থেকে বেরিয়ে আসো, দেখো বাইরের পৃথিবী। ভয়ার্ত শিশু চিৎকার করছে না না, এখানে এই ঘরেই থাকি খাবার এনে দাও এখানে।
আর যারা উড়তে শিখে গেছে তারা ফুলের উপর হামলে পরছে। মধু খেয়ে নিচ্ছে ফুলের। এডাল থেকে ওডালে তাদের লাফিয়ে চলা এক মূহুর্ত স্থির না থেকে।
হামিংবার্ডগুলোর এক মূহুর্ত বিরাম নেই, এ ফুল থেকে ও ফুলে দ্রুত ডানা ঝাপটিয়ে উড়ছে নীল সবুজ লালের আভার ঝলক দেখা যায় ফুলের বনে। ভ্রমরা আর হামিংবার্ডের মধ্যে কাড়াকাড়ি লেগে যাচ্ছে জায়গা নিয়ে। তাদের সাথে এসে মিশছে মৌমাছি। এত্ত এত্ত ফুল অথচ ওদের কেন যে একটা ফুলের উপরই বসতে হবে বুঝতে পারি না।
গুচ্ছো ফুলের ভিতর একটা ফুলে কি বেশি মধু থাকে, বোটানিরা বলতে পারবে হয় তো। আমি শুধু আনমনে প্রকৃতির চলা দেখে হৃদয়ঙ্গম করার চেষ্টা করি। ভাবি সমস্যাটা কি? এক জায়গায় এতো কেন রেশারেশি।
সাদা ধুষর, নীল, কালো রঙের পাখি ঝাকঝাক ফুলের আড়ালে সারাদিন বসে থাকে।
হলুদ লাল কমলা মৌটুসিগুলো ( হয় তো বাহারি অন্য নাম থাকতে পারে তাদের। কিন্তু ওদের দেখলে আমার মৌটুসি নামটাই মনে আসে) ওরা কেবল এই সময়ই আসবে প্রতিবছর। তিন বেলা তাদের খাবার জোগার দেয় এই সময় গাছ। এই বিষয়টা বেশ মজা লাগে আমার নিজের আবিস্কারে। পাখিরা তিনবেলা খাবার খায় সকাল বিকেল সন্ধ্যায়। এরা একদম বিদেশিদের মতন সন্ধ্যা নাগাদ ডিনার শেষ করে উড়ে যায় বাড়িতে।



ভালোলাগে আমার চোখে, তাদের আনাগোনা দেখতে।
এ বছর বড় বেশি পিছিয়ে গেছে ফুলের ফোটার সময়। বসন্ত প্রায় যাই যাই করছে অথচ এখনো শীতের পরশ ছাড়তেই চাচ্ছে না। গত রাতেও দুইয়ে নেমে ছিল তাপমাত্রার কাটা। রোদের দেখা নেই প্রায়। বৃষ্টি তার উপর আরো কাহিল করে রেখেছিল গাছগুলোকে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নে তাপমাত্রার এই পরিবর্তন মেনে নেয়া ছাড়া কি আর করার আছে আমার। সবাই মিলে তো নিজেদের ব্যবহারের জন্য ধ্বংস করছি প্রকৃতিকে। তারপরও মন খুলে দিয়েই আনন্দ এবং ভোগের যোগার দিয়ে যাচ্ছে আমাদের প্রকৃতি।
তবু জেগেছে ফুলের সম্ভার লয়ে গাছ বহু প্রতিকুলতা ঠেলে, হাসছে আঙিনায় বসে। উষ্ণতার উঠানামার সাথে পাখি মৌমাছির কাড়াকাড়ির সাথে বাতাসের তুমুল বৈমাত্রিক ব্যবহার চলছে ফুলদের ঘিরে। বেচারাদের দুটো দিন ভালো করে নিঃশ্বাস, নিতেও দিচ্ছে না। ঝরিয়ে দেয়ার জন্য প্রতিযোগীতা চলছে। চলার পথ হয়ে উঠছে ফুলের পাপড়ির মখমখল গালিচা বিছানো।এছাড়া সকাল দুপুর বিকাল সন্ধ্যা মেঘ রোদ্দুরের আলোয় বদল হয় তাদের অবয়ব। মন ভরানো নানা রূপের সাজ দেখার চোখ থাকলেই দেখা যায় আসে পাশে।
আমি ঘুরে ফিরে সময় কাটিয়ে দেই তাদের সাথে একটু অবসর পেলেই। ফুল পাখি গাছ, ঘাস, মৌমাছি প্রজাপতি ফড়িংয়ের চলাফরা পরখ করি মন ভরে। চোখ কান নাক মনের ইন্দ্রগুলোর অনুভূতি সজাগ হয়ে উঠে ওদের আগমনে। কটা মাত্র দিন এই চোখের ভিতর দিয়ে মনের হার্ড ডিক্সে জমিয়ে রাখি সুখ গুলো তাদের সাথে।


সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৯ সকাল ৭:৫৩
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×