ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নিজেকে বিধাতা মনে করে । দেশের মানুষও এই বিধাতাকে মেনেই চলে। নিজের দেশে প্রচুর উন্নতি করেছে তাই বিশ বছরের শাসনে মানুষ আবারও তাকে ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট বানিয়েছে। নিজের দেশে নিয়ে থাক খুশি। রাশিয়া তো পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূখণ্ড কিন্তু তার মন ভরছে না এত বড় দেশের শাসক হয়েও।
ইউক্রেনকে নিজের দখলে নিয়ে নেওয়ার জন্য ব্যাস্ত হয়েছে। মনে হচ্ছে এ যুগের আরেকজন হিটলার দেখতে পাচ্ছি আমরা।
পৃথিবীর মানুষ যখন মহামারীর জন্য জর্জরিত। সে অবস্থা ভালো ভাবে শেষ হওয়ার আগেই ইউক্রেনের মানুষদের উপর নেমে এসেছে অন্য এক আতংক। নিজের দেশে নিজের বাড়িতে এখন মানুষ রিফিউজি শরনার্থি।
যে সব জায়গা আক্রান্ত হচ্ছে বাড়ি ঘর, ভেঙ্গে পরছে মানুষ ছুটছে সেখান থেকে অন্য জায়গায় বেঁচে থাকার তাড়নায় ঢুকছে বেজমেন্টের গর্তে। পালিয়ে যাচ্ছে মানুষ দেশ ছেড়ে । খাবার, গাড়ির তেল কেনার জন্য লাইন লেগেছে মানুষরে। তেমনি অনেক মানুষ হাসপাতালে রক্ত দেয়ার জন্যও লাইন দিয়েছে। ব্যাংক থেকে তুলে নিচ্ছে অর্থ।
ফেব্রুয়ারি প্রচণ্ড রকম শীতের সময় আর রাশিয়ার শীত বিখ্যাত । শীতের চরম অবস্থার জন্য এমন ভয়াহব আবহাওয়া বা মহামারীর কষ্ট ভয়ঙ্কর অবস্থা মানুষের এসব কিছুরই তোয়াক্কা না করে একটা দেশকে কুক্ষিগত করতে চায় যে শাসক সে কেমন মানুষ। মানবিক কোন অনুভুতি কি তার মাঝে আছে? প্রশ্ন জাগে মনে।
বিশ্বের যুদ্ধ আইন অমান্য করে, সকল নেতাদের যুদ্ধ নয় শান্তি, আহবান উপেক্ষা করে বরং অন্য দেশে খাদ্য, তেল, নানা প্রয়ােজনীয় বস্তুর সাপ্লাই বন্ধ করে অসুবিধার অবস্থা তৈরি করার হুমকি দিয়ে নিজের ইচ্ছা পুরনে মাতোয়ারা পুতিন।
নিজের ঘরে শান্তিতে বসবাস করা মানুষের জন্য যেমন নাই চিন্তা। তেমন হাজার হাজার সৈন্য নিজের সংসার পরিবার পরিজন রেখে অবস্থান করছে এখন যুদ্ধ ক্ষেত্রে নেতার হুকুমে।
মনে হচ্ছে যেন চর দখলকারীর মতন লাঠিয়াল হামলা হাঙ্গামা করছে ভ্লাদিমির পুতিন। চরে তবু মানুষ থাকে না জেগে উঠা জমি দখল করার জন্য দাঙ্গা বাধে। ইউক্রেন একটা আস্ত দেশ, মানুষ নিজের মতন বাস করছে, কাজ করছে ওদের একটা সরকার আছে। অথচ ইউক্রেন দখল করার জন্য আক্রমণ শুরু করে দিয়েছে পুতিন। মানুষের কি হলো না হলো তা দেখার কোন দরকার নাই। অবৈধ ভূমি দখলকারীদের শাস্তির জন্য দেশের ভিতর শাস্তির ব্যবস্থা আছে।
অথচ দেশে দখল করে নেওয়ার মতন অবস্থা তৈরি করে যখন শক্তিমান এক শাসক তখন তার কি শাস্তি হওয়া উচিত। যে বিশ্বের সব নেতা, জোটে মিলে গনতান্ত্রিক ভাবে তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছিল। সবার কথা অমান্য করে সাধারন মানুষের কথা না ভেবে নিজের ইচ্ছা পূরনে ব্যাস্ত। মিশাইল হামলা, বোমা,এ্যাটাক চলছে সাধারন মানুষের উপর।
সাজান বাড়ি ঘর ভেঙ্গে উদবাস্তু শরনার্থী হয়ে যাচ্ছে মানুষ।
কানাডা ইউক্রেনিয়ানদের রিফিউজি আনার চিন্তা ভাবনা করছে। ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য অর্থ এবং সৈন্য দল প্রেরণ করছে। অথচ তারা তো অন্য দেশে আসতে চায়নি। নিজের দেশে নিজের মতন জীবন যাপন করছিল। এখন অস্থির অবস্থার শিকার। আর নিজ দেশ যেমনই হোক, ভালো মন্দ নিয়ে মানুষ তাদের স্বদেশেই থাকতে চায়।
অথচ গনতান্ত্রিক একটা দেশকে দখল করে নিচ্ছে রাশান প্রেসিডেন্ট পুতিন। জোড় যার মুল্লুক তার এমনই ভাব দেখা যাচ্ছে।
নিজের দেশের মানুষ এবং বিরোধী দলের নেতাও ইউক্রেন আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায়, এ পর্যন্ত সতেরশ রাশান মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এবং রশার বিরোধী দলের নেতাকে শুধু গ্রেফতার না পনের বছরের জেলও দেয়া হয়ে গেছে।
বিশ্বায়নের এই সময়ে প্রতিটি দেশ একে অপরের পণ্যের উপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে গ্যাস এবং তেল। এমনিতেই এই সময়ে গ্যাসের দাম উর্ধগতি, জন জীবনে বিশাল প্রভাব পরেছে। এখন আরও কত উপরে উঠে, দেখার অপেক্ষা।
ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে অনেক বেশি লেনদেন পণ্যের, এর উপর নির্ভর করে পুতিন সবাইকে হুমকিও দিচ্ছে সরবরাহ বন্ধ করে সমস্যায় ফেলবে। ওর ব্যাপারে নাক না গলাতে বলছে, বিশ্ব নেতাদের। ইতিহাসে ঘটেনি এমন কিছু ঘটতে পারে বলেও ধমক দিচ্ছে বর্তমানের হিটলার, ভ্লাদিমির পুতিন যে চায় নাৎসি দমন করতে।
অনেক ইউরোপিয়ান দেশ রাশিয়ার সাথে পণ্যের লেনদেন বন্ধ করে দেয়ার এবং বন্ধ করেছে বলে ঘোষনা দিয়েছে। বিশ্ব জুড়ে একটা অস্থিরতার তৈরি করে, মানুষকে চাপে রেখে মহাআনন্দ পাচ্ছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। একক হাসি হাসছে সে কি ভাবে, কি আনন্দে কে জানে। মানুষের রক্ত ঝরিয়ে, মৃত্যুর উপরে পূরণ করছে তার উচ্চাকাঙ্খা।
আধুনিক উপায়ে পুতিনকে যোগাযোগ করার, তাকে কিছু বলার কোন সুযোগ নেই। আধুনিক অর্ন্তজালের সুযোগের সময়ে পুতিন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। ফেসবুক,ইন্সটগ্রাম এমন কি ইমেল কিচ্ছু ব্যবহার করে না। উনার ইচ্ছা না হলে তাকে কোন ভাবেই যোগাযোগ করা যাবে না।
বোমা ফেলে যাচ্ছে ইউক্রেনের একের পর একটা শহরে। মানুষ মারা যাচ্ছে, স্থাপনার ক্ষতি হচ্ছে । পারমাণবিক প্ল্যান্ট চেরনবিল যেখানে এখনও তেজস্ক্রিয়তা লিক হচ্ছে, ইউক্রেন সতর্ক করেছে রাশিয়ান বাহিনীকে চেরনোবিল আক্রমণ করার ফলে যদি স্টোরেজ সুবিধাগুলি ধ্বংস করা হয়, তবে তেজস্ক্রিয় মেঘ ইউক্রেনকে ঢেকে ফেলতে পারে। এই মেঘ শুধু ইউক্রেনে থাকবে না ছড়িয়ে পরবে ইউরোপ জুড়ে। রাশিয়াও কি এই মেঘের বাইরে থাকবে তখন। ভয়াবহ কতটা ক্ষতি হতে পারে মানুষের তার কোন তোয়াক্কা না করে ঠেলে দিয়েছে মিলিটারি ইউক্রেন দখল করতে।
রাশিয়ার ভিতরে এবং বিভিন্ন দেশে অবস্থিত ইউক্রেনিয়ানরা উদ্বিগ্ন নিজেদের দেশ, আত্মিয় স্বজন, বন্ধু পরিচিতর জন্য নিজের দেশের মানুষের জন্য।
প্রতিবাদ হচ্ছে অনেক দেশে স্টপ রাশা, স্টপ পুতিন। কিন্তু কানে পৌঁছাবে কি ভাবে তিনি নিজের প্রাসাদে আছেন,ক্ষমতা এবং শক্তি দেখানোর নিজের ভাবনায় মত্ত।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০২২ সকাল ৭:২৮