somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

আজ শীতের শেষ দিন

২০ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজ শীতের শেষ দিন কাল থেকে শুরু হবে বসন্ত তিন মাসের জন্য। ফুল ফুটুক না ফুটুক বসন্ত এসে যাবে।
আজ বড্ড কুয়াশা ঢাকা দিন। ঘন সরের মতন কুয়াশা জমে আছে চোখের সামনে। একটু পরে বৃষ্টি শুরু হবে কদিন বেশ বৃষ্টি হবে। আর বৃষ্টিতে ধুঁয়ে যাবে সকল বরফের স্তুপ। কদিন ধরে চারপাশে ছুটেছে বরফগলা নদীর স্রোত।কলকলঝলঝল বয়ে যাচ্ছে যে দিকে পথ পাচ্ছে ঢালুর দিকে। কোথাও ঝমে আছে বরফ জল আপনমনে সৃষ্টি করেছে নতুন এক হৃদ।
গত পরশু হাঁটতে গিয়েছিলাম অনেক দূর মাঠের ভিতর দিয়ে। কোথাও এখনও বরফের স্তুপ কোথাও খড় ঘাস জেগেছে। পা ডুবে যাচ্ছিল ভুস করে বরফের ভিতর। হাঁটতে না জানলে ঠ্যাং ভাঙ্গার সমুহ সম্ভাবনা। পুকুরে নামতে গিয়ে তলিয়েই যাচ্ছিলাম ভিতরে প্রায়। ভয়ের চেয়ে হাসি আসল আমার। কদিন আগে স্কেট করার সুযোগ ছিল যেখানে এখন কিনারা জুড়ে জলের দেখা আর কি ভীষণ সুন্দর কারুকাজ জেগেছে গলে যাওয়া বরফের পাশ দিয়ে।
লেক গুলোতে ছোট ছোট কেবিন বানিয়ে মাছ ধরছিল সৌখিন জেলেরা। এবার আমার যাওয়া হয়নি। দূর থেকে দেখলাম শুধু। কিনারা থেকে সেই বরফের স্তুপ ভেঙে জলের উপর ভাসছে ভিশাল একটা দ্বীপ যেন। হাঁস পানকৌড়ি বসে আছে। আরো আসছে ঝাঁক বেঁধে। রাত ভর শোনা যায় তাদের ক্যাক ক্যাক ডাক উড়তে উড়তে সঙ্গীদের ঠিক পথে রাখার জন্য ডেকে যায়। ঝাঁক থেকে যেন কেউ হারিয়ে না যায়। অবাক লাগে তাদের এই জিপি এস ছাড়া পথ চিনে চলে আসার শক্তি দেখে।
কাল সারা দিন গাছের উপর বসে ছিল কয়েক শত স্টারলিং। এরা যখন বসে এক সেকেন্ড চুপ থাকে না। এদের কথায় হাট বসে যায় যেন এত কথা বলে। নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে সরব শব্দ ছড়ায়, চারপাশ সরগরম হয়ে উঠে। কাছে গেলেই ঝাঁক বেঁধে উড়াল দিয়ে একটু দূরের গাছগুলোতে গিয়ে বসে। আর ওদের মিটিং চলতেই থাকে।

সাধারনত এদের এই দল ধরে মিটিং শুরু হয় আগস্টের শেষে কিন্ত এবার বসন্তর শুরুতেই এরা চলে এলো কেন বুঝলাম না। আবহাওয়া কি পরিবর্তন হয়েছে ওরা যেখানে ছিল সেদিকে বেশি গরম পরে গেছে, কে জানে । পাখি , প্রাণীরা নিজেরা অনুভব করে সব কোন বৈজ্ঞনিক আয়োজন ছাড়া তাদের ছোট মস্তিক তাদের ঠিক সিগন্যাল দিয়ে দেয়। কি করতে হবে।
আর দিন দশেকের মঝেই। জেগে উঠবে ফুলগুলো। মাঠ জুড়ে ফুটবে ভূঁই চাপা। বেগুনী নীল আর হলুদ সাদা রঙের ছড়াছড়ি। যেন অদ্ভুদ আলপনা আঁকা হবে প্রকৃতির খেয়ালে মাঠ জুড়ে। তারপর আসবে লিলি অফ দ্যা ভ্যালি, সাদার মধ্যে ছোট ছোট জুঁই ফুলের মতন ফুলগুলো মাটির দিকে মুখ করে চেয়ে থাকবে। অসম্ভব সুন্দর তাদের সুবাস কিন্তু ভীষণ বিষাক্ত। দূরে থেকে দেখাই ভালো কাছে না গিয়ে।



এরপরই আসবে নার্সিসাস, টিউলিপ, নানা রঙের আকারের আরো লিলি আর ব্লিডিং হার্ট । হার্টের মধ্য থেকে ঝরে পরবে যেন কান্না যে কোন সময় এমন অনুভব নিয়ে জেগে থাকবে তারা শরত পর্যন্ত।



পাতা গজানোর আগে জাগবে ফুলের সম্ভার গাছে গাছে। মনে হবে পাতা নয় ফল নয় শুধুই ফুলের গাছ আর তার মাঝে যত পাখিদের ঝাঁক। বসে থাকবে মধু খাওয়ার জন্য। হলুদ ফার্টিসা, ম্যাগনলিয়া, ক্যামেলিয়া আরো কত শত রঙ বাহার আকৃতি আর সব ফলের গাছ ভর্তি ফুল। বসন্ত বাহার জাগিয়ে দিবে প্রকৃতির প্রাণ সঞ্চার হবে। যেদিন গাছ জুরে ভ্রমর, মৌমাছি প্রজাপতির প্রথম দিনের মেলা বসবে। সারাদিন জুড়ে চলবে তাদের হামং সেদিন সারাদিন আমি বাইরে বসে উপভোগ করব এই আনন্দ। প্রতি বছর প্রথম দিনের এই সুখ অনেক দিন ধরে ঠাণ্ডায় জমে ঘরে বসে থাকা একদম ভুলিয়ে দেয় একদিনে।
শুরুর ছবিটা আমার করা একটা কোলাজ বসন্তের সুখ। বাকিরা বাগানের ফুল।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১:০৩
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×