পথে নেমে পরে উষার আলো তখনও ফুটেনি
অভিমান শব্দের উৎস খুঁজে কখনো সময় ব্যয় হয়নি।
মুখে গায়ে আঘাত লাগা পাঁচ আঙ্গুলের দাগ, যার যখন ইচ্ছে কয়েক ঘা শরীরে বসিয়ে দেয়,
চোখের পানিও কখনোও আসে না আর।
এটা স্বাভাবিক জীবনের অংশ।
সন্ধ্যার আলো গাড় হলে তাকিয়ে দেখা,
লাল লিপিষ্টিক রাঙানাো ঠোঁট। হাই হিলের সোনালী রঙ।
কাচুলির চিকন সোনালী ফিতার পাশে পুরুষালী হাতের বেষ্টন ।
যত্ন করে নিয়ে যায় পার্টি রুমে। মায়াবী দৃশ্য সুখ ঝরেঝরে পরে।
বাজনার শব্দ তালে তালে নাচ, আলোর ঝলকানী একটু ফাঁকফোকর দিয়ে চোখে ভাসে।
মনোহারী খাবারের ঘ্রাণ ভেসে আসে, পারফিউমের সুগন্ধ ম্লান করে।
পাতাকুড়ানী জীবন অবাক দৃশ্য দেখে যেন রূপকথার গল্প তাদের জীবন।
নদী গিলে খেয়েছে সবুজ কুঁড়ে ঘর। সাথে গল্প বুড়ি দাদী।
ভাসান জীবন শহরের পথে পথে।
বাবাটাও চলে গেলো চকমকি মেয়ের সাথে।
ঝিয়ের কাজে মায়ের সময় কই, কাছে বসার।
কখন শুরু হলো কুড়ানী জীবন। আর সব পথ শিশুরাই চিনাল জীবন।
কত কিছু ফেলে দেয় মানুষ যাদের আছে
আর ফেলানী কুড়িয়ে জীবন বাঁচে পথশিশুর।
অবাক হয়ে দেখে রূপকথার রাজ্যের মানুষ, ভালোবাসে কুকুর বিড়ালও কত,
কোলে নিয়ে ঘুরে, খাওয়ায় মজার বিস্কুট।
আহা কতদিন অপেক্ষায় আছে দোকানে সাজানো বোতল থেকে একটা বিস্কুট মুখে দিবে বলে।
কেমন স্বাদ জানতে ইচ্ছা করে।
অথচ পেটে পরে না প্রতিদিন খাবার।
কখনো বাসি খাবার নিয়ে আসে মা। কখনো শুখনা ভাত পান্তা করে খায় মরিচ ঢলে।
কুড়িয়ে পাওয়া একটা শিশির ঘ্রাণে কাটিয়ে দিয়েছিল এক সারাদিন।
লুকিয়ে রেখেছিল নিজের কাছে শিশিটা মাঝে মাঝে ঘ্রাণ নিত।
আতরের ঘ্রাণের মতন বাবার কথা মনে পরত।
সেটাও বেঁচে দিল মা তাকে না বলে।
অনেক নাকি দাম। সেদিন এক বেলা মাছ খেতে পেয়েছিল বহু বছর পরে।
খালি শিশির দামে মাছ পাওয়া যায় তাই আরো বেশি খুঁজে তেমন শিশি
মাছ ভাত জুটবে তবে। আরো ভোরে পথে নামে আর সবার আগে।
কখনো মনে আসে না কেন এমন জীবন, না খেতে পেয়ে পথে ঘোরা।
ময়লার মাঝে গড়াগাড়ি খেয়ে হাসিতে আকাশ ছোঁয় তারা।
দল বেঁধে কখনো মিছিলে হাঁটে পুলিশের লাঠি পিঠে পরে।
তবু দুহাত উঁচিয়ে চিৎকার করে শিশু অধিকার দিতে হবে।
যদিও অধিকার শব্দের কোন মানে জানা নাই।
এটা একটা কাজ মিছিলে চিৎকার করে পুলিশের ডান্ডার বাড়ি খাওয়া।
এই একটা খেলা তাদের সেদিন কিছু কড়কড়ে নোট পাওয়া যায় আর বাক্স ভর্তি খাবার।
এটাই অধিকার হয়তো। দিগন্তে চোখ মেলে হাড় মাংস চিবুতে চিবুতে ঘাসে বসে ভাবে।
যদি প্রতিদিন এমন মিছিল হতো, ডান্ডার বাড়ি খেলেও
মুরগির ঠেং চিবুনো যেত মজায়, পাওয়া যেত সাথে টাকা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:১২