somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

সংসার বিচ্ছেদ

০৩ রা আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং উনার স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ার ট্রুডো আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন আজ সকালে। তাদের এক সাথে থাকার সম্পর্কটা আগের মতন সুন্দর নেই হয় তো।
কেন কি কারণে তারা আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এটা একান্ত তাদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার। দুজন মানুষ ভালোবেসে কাছে এসে সারা জীবন এক সাথে কাটিয়ে দেয় আবার ভালো না বেশে অভিভাবকের সিদ্ধান্তে বিয়ে করে এক সাথে ঘর সংসার করে সারা জীবন কাটিয়ে দেয় দম্পতি।
এই সারা জীবন এক সাথে থাকার মধ্যে তাদের শুধুই ভালোবাসা ছিল কোন মতের অমিল ছিল না, দুঃখ যন্ত্রনা ছিল না তা কিন্তু কেউ জানে না। মানুষ শুধু দেখে দুটো মানুষ দীর্ঘ সময় এক সাথে সংসার করেছে। এই দীর্ঘ সংসার জীবনে অবশ্যই দুজনে দুজনের অনেক কিছু মেনে নিয়েছে, অনেক ছাড় দিয়েছে নিজস্ব ভালোলাগার একক জীবনের। অথবা হতে পারে একপক্ষ শুধু মেনে নিয়ে মানিয়ে গুনিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে। এক পক্ষ মেনেছে এটা শুধু নারী করেছে এমন ভাবার কোন কারণ নেই, অনেক পুরুষও মানিয়ে নেয় ছাড় দিয়ে চলে, সংসার ধরে রাখে ।
আবার ভালোবেসে বিয়ে করলে বা অভিভাবকের সিদ্ধান্তে বিয়ে করলে যে সারা জীবন সে বিয়ে টিকে থাকবে এমন কোন গ্যারান্টি কেউ কখনো দিতে পারবে না।
মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক এমন প্রথমত রক্তের সম্পর্ক পরিবার । এই পরিবার শুরু হয় দুজন অচেনা মানুষের এক সাথে থাকার সিদ্ধান্তে। যার এক মাত্র মাধ্যম ভালোবাসা, বিয়ে নামক সামাজিক নিয়ম মানুষের মধ্যের মায়ার বন্ধন দৃঢ় করে। রক্তের বন্ধনের সম্পর্ক
আত্মিয় স্বজন নিকট জনের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয় । সম্পর্ক নষ্ট হয় ভাই বোনের মধ্যে। এমন কি মা বাবার সাথেও সম্পর্ক নষ্ট হয় নানা রকম অমত অমিলে। সেখানে শুধুই ভালোবাসায় গড়া সম্পর্ক নষ্ট হতেই পারে নানা কারনে। দুজন মানুষের দুই রকম পরিবার দুই রকম পরিবেশ থেকে আসা দুজন মানুষের মানসিক ভাড় সাম্য বজায় থাকে শুধু ভালোবাসার মাধ্যমে। সেখানে যখন টান পরে তখন সেই বন্ধন ভেঙ্গে যেতেই পারে।
আমাদের সামাজিক চিন্তা ভাবনায় অনেক পরিবার আবার স্বামী স্ত্রীর নিজেদের ভাবনা বোঝা পরার চেয়ে পরিবারের অন্যদের ভালো না লাগার কারণেও বিয়ে ভাঙ্গে। তবে পশ্চিমা বিশ্বে দুজন মানুষ যখন নিজেরা সিদ্ধান্ত নেয় আর সহ্য হচ্ছে না, ভালোলাগছে না একে অপরকে তখন আলাদা হয়ে যায়।
এছাড়া বর্তমান সময়ে এই বিয়ে আর ডিভোর্সের মতন সামাজিক বা ধর্মীয় নিয়ম রীতির বাইরেও অনেকে এক সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেয় লিভটুগেদার পার্টানার হয়ে। অনেকে এক জীবন দুজনের ভালোলাগায় ডুবে কাটিয়ে দেয় বিয়ে নামক কোন নিয়ম না মেনেও। অনেকে যেমন দুজনে মিলে এক সাথে থাকতে শুরু করে ছিল কোন অনুষ্ঠান আয়োজন না করে তেমন আবার আলাদাও হয়ে যায় ভালোলাগায় না পোষালে । কোর্ট আইন আদালতের কোন ঝামেলা নাই নিজেরাই নিজেদের সিদ্ধান্তের মালিক তারা।
রক্তের সম্পর্ক ছাড়া বন্ধন গড়ে উঠে দুটো মানুষের মধ্যে ভালোবাসার মাধ্যমে। সংসারের মায়া নির্ভরতা, সন্তানের কথা ভেবে মানুষ সংসার আগলে রাখতেই চায়। দেশি মানুষ বা বিদেশি মানুষ যেই হোক কেউ সহজে সংসার ভেঙ্গে দিতে চায় না।
দুটো মানুষের এক সাথে থাকার সময়ে নানা রকম ঘটনা মত বিরোধ ঘটতে পারে। কখনো তারা সে সমস্যার সমাধান করে নিতে পারে কখনো আর সমস্যা নিয়ে মানুষের থাকতে ইচ্ছা করে না।
খাওয়া পরা সামাজিক মর্যাদা, অর্থনৈতিক দৈন্যতা, শারীরিক নির্যাতন, বাজে অভ্যাস দেখা যায় এমন ঘটনার বাইরে মানসিক দ্বন্দগুলো বড় বেশি যন্ত্রনাদায়ক দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে।
অনেকে সহ্য করার ক্ষমতা রাখে। অনেকে কিছুই সহ্য করতে পারে না অথবা সহ্য করতে করতে এক সময় হাঁফিয়ে উঠে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অনেকে আলাদা হওয়া মর্যাদাহানীকর মনে করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। মরে গিয়ে বেঁচে যায় সব কিছু জানার ঊর্ধে চলে গিয়ে। আবার ভালো না লাগার কারণে স্বামী স্ত্রীকে বা স্ত্রী স্বামীকে খুন করে ফেলার মতন ঘটনার কথাও শোনা যায়।
কিন্তু মানুষ থেকে যায় কথা বলার জন্য। মানুষ এক সাথে থেকে সংসার করলে খুব ভালো থাকলে তার দোষ ধরে, খুব খারাপ থাকলে তারও দোষ ধরে। ছাড়াছাড়ি তালাক হয়ে গেলে দোষের সীমা পরিসীমা নাই। আত্মহত্যা করেও মানুষ মানুষের কথা বলার বাইরে যেতে পারে না। নানা দোষে দোষী সাবস্থ হয় মানুষের আদালতে।
মানুষ নিজে কিছু পারুক না পারুক নিজে কতটা পারমাঙ্গ সঠিক ভাবে কিছু করতে পারার, সেটা বিবেচনা না করে অন্যকে পারফেক্ট দেখতে চায় সব কিছুতে। অন্যের দোষ যাচাই করার জন্য মুখিয়ে থাকে আলোচনা সমালোচনায় মুখর হয়।
অন্যের জীবনের সব সিদ্ধান্ত নিজে নিয়ে নেয়। এই স্বভাব, অসম্ভব বাজে একটা অভ্যাস।
আগে বাড়িতে ঘুরতে গিয়ে একে অপরের সাথে কথা বলত অন্য মানুষকে নিয়ে এখন সেটা শুরু হয়েছে পত্রিকার পাতা থেকে ফেসবুকের পাতায়। চেনাজানা নেই যার তার বিচ্ছেদের খবর শুনে নিজের মতন সিদ্ধান্তের মন্তব্যে দিয়ে ভাসিয়ে দেয় মানুষ।
তারকাদের তো এই তালিকায় মানুষই ভাবা হয় না। ওদের কোন অনুভুতি নেই ওরা শুধু বিয়ে করে আর তালাক দেয় আবার বিয়ে করে।
এই সব মানুষ কি একবারও ভাবে আমি কেন তার জীবনের ব্যাপারে কথা বলছি। আমার কি অধিকার আছে অন্যের জীবনের ব্যাপারে তার নিজের সিদ্ধান্তের বাইরে কথা বলার।
জাস্টিন ট্রুডো এবং সোফি গ্রেগোয়ার ট্রুডোর বিচ্ছেদের খবর জানার সাথে সাথে অসংখ্য মানুষ ঝাঁপিয়ে পরেছে মন্তব্য করতে। এবং এই মন্তব্য বিদ্বেষপূর্ণ অশালীন মন্তব্য। বাংলাদেশিরা ক্যানাডার মতন দেশে থেকে ট্রুডোর গে প্যারডে যাওয়ার কারনে তার বিচ্ছেদ হয়েছে এমন ধারনা পোষন করে। একজন প্রধানমন্ত্রীর বিরোধী অনেকেই থাকতে পারে কিন্তু তার ব্যাক্তিগত জীবনকে নিয়ে হাস্যকর বাংলাদেশি স্টাইলের সমালোচনা তাদের কে যে হাস্যকর করছে তারা সেটা বুঝতে পারে বলে মনে হয় না।।
ক্যানাডার মতন একটা দেশে থেকে নিজস্ব ধর্ম, সংস্কৃতি নিয়ে বাঁচার অধিকার পাওয়ার পর পুরোটাই নিজের করে নিতে চায় তারা। অন্য কোন সংস্কৃতি অন্য কোন ভাবনাকে সহ্য করার মতন ক্যানেডিয়ান হয়ে উঠে না । নিজেদের এই একপক্ষ চিন্তা ভাবনা তারা বুঝতে পারে না অথবা বুঝে শুনে ঘৃণা ছড়ায়। অনেকে বুঝে না বুঝে তাতে জড়িয়ে যায়। যে মানুষটি কথা বলছে তাকে নেতার মতন মনে করে সেজন্য।
প্রধানমন্ত্রী নিজে জানিয়েছেন তার সংসারটা টিকছে না স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদে যাচ্ছেন কি কারণ সেটা কেউ জানে না। অথচ কত রকমের কারণ ছড়িয়ে যাচ্ছে প্রতি মূহুর্তে মানুষের নিজের মন গড়া। সারাদিন আজ অনেক রকম ভাবনা চিন্তা দেখলাম মানুষের অশ্লীল চিন্তা ভাবনার।
মানুষ যদি এইসব মনগড়া কথা বলা কমাতো হয়তো আরো সুন্দর হতো জীবন যাপন।




সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:২২
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামপন্থী রাজনীতির বয়ান এবং জামাতের গাজওয়াতুল হিন্দ-এর প্রস্তুতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০


গোরা উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ নিজে ব্রাহ্ম হয়েও, ব্রাহ্ম সমাজের আদর্শের বিপরীতে "গোরা" নামে একটি চরিত্র তৈরি করেন। গোরা খুব কট্টরপন্থী হিন্দু যুবক। হিন্দু পরিচয়ে বড় হলেও, আসলে সে আইরিশ পিতা-মাতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি নেই, তাই শূন্য লাগে

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৬

তোমার চলে যাওয়ার পর
ঘরে আর আলো জ্বালাই না,
অন্ধকারে নিজের মতো করে
সবকিছু চিনে নেই।

জানো, আজ সকালে চা বানাতে গিয়ে দেখলাম
চিনি শেষ,
ভাবলাম ঠিক আছে,
মিষ্টি না থাকলেও চা হয়।

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ
তোমার মতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫ আগস্টের পর তো কিছুই বদলায়নি

লিখেছেন মুনতাসির, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৯

অনেকেই বলেন, ৫ আগস্টের পর তো কিছুই বদলায়নি। এই কথাটার সূত্র ধরেই এগোনো যায়। ৫ আগস্টের পর আমাদের কোন কোন পরিবর্তন এসেছে, সেটাই আগে দেখা দরকার। হিসাব করে দেখলাম, বলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল মাদ্রাসার দেয়াল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯



ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তেল আর জল কখনো এক হয় না......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



জুলাই ছিলো সাধারণ মানুষের আন্দোলন, কোন লিডার আমারে ডাইকা ২৪'এর আন্দোলনে নেয় নাই। কোন নেতার ডাকে আমি রাস্তায় যাই নাই। অথচ আন্দোলনের পর শুনি আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নাকি মাহফুজ। জুলাই বিপ্লবের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×