somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

আলো অন্ধকার শীত উত্তাপের গল্প

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত পরশু রোদ জড়িয়ে ধরল বাইরে পা রাখার সাথে সাথে সোহাগে। মিষ্টি একটি উত্তাপ বারো সেলসিয়াসের উপরে। অনেকটা সময় উপভোগ করলাম বসন্ত সময় যেন কিন্তু বসন্ত আসার অনেক দেরি এখনও।
শুয়ে থাকা সব বরফ ছড়ানো ছিটানো। ছেঁড়াফাটা সাদা কাপড়ের মতন জমিনটা এখন। বরফের নিচে চাপা পড়ে থাকা শুকনো পাতারা উড়ছে মনে হয় যেন চড়ুই পাখিগুলো ফিরে এসেছে। প্রকৃতির মাঝে গেলে আমি সব ভুলে যাই বাস্তবতা, ব্যাস্ততা।
নিঃশ্বাস নিতে খুব ভালো লাগছিল টাটকা হাওয়ায়। কিন্তু আমাকে যেতে হবে অনেক দূর তাই গাড়িতে চেপে বসতে হলো । গায়ে চাপানো জ্যাকেট খুলে রাখলাম। টেম্পারেচার বন্ধ করে দিলাম গাড়ির। জানলা খুলে দিলাম খোলা হাওয়া পাওয়ার জন্য । সবটাই মন মতো কিন্তু বরফ গলা জলে কোথাও কোথাও থক থকে কাঁদা, কোথাও পানি জমা হ্রদ। গাড়ির অবস্থা অল্প সময়ে করুণ হয়ে গেল। কাঁদা ছিটা একটা প্রলেপ পরে, গাড়ির আসল রং আর বোঝার উপায় নেই ।
কোন পাখি নেই, পাতা নেই গাছে। শুকনো ধূসর এক রঙ চারপাশে। কিছু কাক উড়ছিল, ডাকছিল। এদেশে কাককে খুব বুদ্ধিমান প্রাণী ভাবা হয় । তাদেরকে দেখলে খারাপ কিছু ভাবা হয় না বরঞ্চ খুবই ভালোবাসে এদেশের মানুষ কাক পাখীকে। অনেকে পোষে কথাও শিখাচ্ছে। যা হোক জানলা বন্ধ করে দিতে হলো গাড়ির ।
দুটো দিন কেটে গেল শহুরে জীবনে, ব্যস্ততায় আর ভালোবাসায়, আনন্দে ।
গতকাল মাঝ রাতে যখন বাড়ি ফিরছি আমার সাথে সাথে চলছিল অনেকগুলো গাড়ি । পেছনে সামনে হেডলাইট আলোর বন্যা , চোখ ঝলসানো অথচ এই রাস্তায় আমি একাই চলতাম প্রায় সময় । এবং বেশ একটা অহংকার ছিল রাস্তাটা আমার একার। জনসংখ্যা বৃদ্ধির মাত্রা টের পাচ্ছি। স্থানীয় ছাড়াও ফ্রাইডে নাইটে অনেকেই চলেছে রিসোর্ট গুলোতে শেষ শীতের আমেজ অনুভব করতে। এটাও একটা নতুন বিষয় শিখেছি, বরফের সাথে খেলা। প্রচন্ড ঠান্ডায় মানুষ আনন্দ করতে নেমে যায় বরফের মাঝে। কি আনন্দ। অনেক টাকা পয়সা খরচ করে অনেকে, এই বরফের সাথে খেলার জন্য। এ বছরটা তাদের বেশি আনন্দ করার সুযোগ হলো না। যেমন আমার কাছেও খুব ভালো লাগল না শীত জুড়ে বরফের স্বল্পতা।
শীতের এখনো মাঝামাঝি সময় কিন্তু উপভোগ করতে পারলাম না বরফ খেলা। মাঝে মাঝে প্রকৃতি একটু ভিন্ন রূপ দেখায়। তেমনি মনে হচ্ছে আর হবেই না মনমতন বরফপাত এবছর।
অনেকটা পথ পেরিয়ে আসার পরে গাড়িগুলো থেকে একটু নিস্তার পেলাম, একা চলার সুযোগ পেলাম। জোসনামাখা বনভূমি, রাস্তা নিস্তব্ধ নীরবতা একাকী সময় উপভোগের সুযোগ পেলাম ।
মাইনাস দশ সেলসিয়াস ঠান্ডা এই রাতে গাড়ি উড়িয়ে নিবে এমন মনে হচ্ছিল প্রচন্ড হাওয়ায়। আপস এন্ড ডাউন এমনই চলছে সারাক্ষণ তাপমাত্রার উঠা নামা। বাড়ি ফিরে সব আলো নিভিয়ে অনেকটা সময় বাইরে জোসনা উপভোগ করলাম। পূর্ণিমা আসেনি এখনো কিন্তু পঞ্চমীর দিন থেকেই তুমুল জোসনায় ভাসাচ্ছে প্রতিরাতে। বরফের মাঝে জোসনার বিচ্ছুরণের এই সৌন্দর্যটা অসাধারণ । যা উপভোগ করার জন্য আমি সব সময় অপেক্ষা করি শীতকালের আর অনেক বরফপাতের। ঠান্ডা বাতাস যেন সুঁচ ফোটাচ্ছে গায়ে তাই বাইরে বেশিক্ষণ থাকতে পারলাম না। জোসনা মাখা শীতের এক অপরূপ সৌন্দর্য অল্প দেখেই ঘরে ঢুকতে হলো। ঘরে ঢুকে, আমাকে বাতি জ্বালাতে হলো না ঘরের ভিতর ঝকঝক করছে চাঁদের আলো। অনেকটা সময় দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলাম , ঘরে অন্ধকারে বাইরের চাঁদের স্নিগ্ধ মায়াবী আলোয় ডুবে রইলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:৫০
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×