somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুনশি আলিমের ছোটগল্প 'অস্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধা'

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এক
সাপের গমন পথের মতোই আঁকাবাঁকা মেঠোপথ। দুধারে নয়ন জুড়ানো সারি সারি গাছ। হাজার বছর ধরে যেন প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধ ছুঁয়ে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে। শহরের বিক্ষুব্ধ জনজীবনের কর্মকোলাহল থেকে অনেক দূরে, পল্লির নির্জন পথ মাড়িয়ে চাবাগানের একেবারে শেষ মাথায় থাকে ধীরেন। বয়স ষাট ছুঁই ছুঁই করছে। সাত সন্তানের জনক। গত বছর এক মর্মান্তিক ট্রাজেডির শিকার হয়ে তার চার সন্তানেরই অকালমৃত্যু হয়েছে। ট্রাজেডি বলতে ভয়াবহ ডায়রিয়ার প্রকোপ আর কি! শুধু তার পরিবার নয় এ মড়ক সমস্ত বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। বিটিভির অনুষ্ঠানগুলো যেমন একযোগে বিটিভি ওয়াল্ডসহ সকল জায়গায় সম্প্রচার হয় তেমনি ডায়রিয়ার প্রকোপও যেন সমস্ত শ্রমিকের গৃহ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল!

আতঙ্কের ঘুরেই তখন তাদের দিন কাটত। কিন্তু করার মতো তেমন কিছুই ছিল না। একে তো বাগানের সাহেব ছিল দেশের বাইরে তার ওপর বাগানে ভালো কোন ডাক্তারও নেই। মড়ক লাগলে যেমন খুব দ্রুতই ফার্মের অনেক গৃহপালিত পশু-পাখির মধ্যে ছড়ায় তেমনি সেবার ডায়রিয়াতেও শ্রমিকদের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ আক্রান্ত হয়েছিল। যারা বেঁচে ছিল তারা যে কেবল পথ্যের জোরেই বেঁচে ছিল তা কিন্তু নয়। নিজের অদম্য বাঁচার আগ্রহের কারণেই হয়ত বিরূপ পরিবেশেও বেঁচে ওঠেছিল।

বাগানের মালিক কিরণ চৌধুরী পুঁজিবাদী মানুষ। তার চিন্তা চেতনা জুড়ে নিউটনের তৃতীয় সূত্র যেমন ভর করে তেমনি সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও শোষণের সূত্রও সর্বদা ঘুরাফেরা করে। তিনি অত্যন্ত কূটকৌশলী মানুষ। লোক দেখানো জনসেবাতে তার জুড়ি মেলা ভার! বাগানের শ্রমিকদের কাছে তিনি হলেন দেবতা তুল্য। তার কারণও আছে - তিনি যে সকল চা শ্রমিকদের শ্রমের সাথে মদ ফ্রি দেন! কোন কোন রেস্টুরেন্টে যেমন ভাতের সাথে ডাল ফ্রি ঠিক তেমনি আরকি! শুধু তা-ই নয়, মাঝে মাঝে ব্যাপক ঢাক-ঢোল পিটিয়ে দু-এক ভীষণ দারিদ্র শ্রমিকের চিকিৎসার খরচও দেয়; ফলে চতুর্দিকে তার নামে ধন্য ধন্য পড়ে যায়। মদ্য ফ্রি দেওয়ার মাধ্যমে যে তাদের কতবড় ক্ষতি হচ্ছে কিংবা তাদের মস্তিষ্ক যে একেবারে ডেমেজ করে দিচ্ছে সে কথা হয়ত তারা একবারও তলিয়ে দেখে না। হয়ত মদ্য গলাধকরণ করতে করতে এখনও তা তাদের বোধেরই বাইরে!

শ্রমিকদের ছেলেমেয়েরা এমনিতেই পড়াশোনার সুযোগ পায় না। কেননা তাদের নুন আনতেই যে পান্তা ফুরায়! পড়াশোনা করার মতো বাড়তি খরচ কই? আর যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করে বাড়তি উপার্জন করে সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করে, তাদের সন্তানের পড়াশোনার দৌরাত্ম্যও বড় জোর পাঠশালা পর্যন্ত! তার অবশ্য কারণও আছে। বাগানের সাহেব কিরণ চৌধুরী ঐ সব পাঠাশালা পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের বাগানের হিসাবরক্ষণ সংক্রান্ত, কিংবা তদারকি সংক্রান্ত কাজে লাগিয়ে দেন। এতে করে বাগানের কুলি হিশেবে পরিচিত চা শ্রমিকরা যারপর নাই খুশিই হয়।

এ কলির যুগে সাহেব বাবুর এমন মহানুভবতা অবলোকন করে শ্রদ্ধায় তাদের মাথা নুয়ে আসে। অবাধ মাদক কেন্দ্রিক জীবন আবর্তিত হওয়ায় তাদের চিন্তার পরিধি হয়ে ওঠেছে শৃঙ্খলিত। ফলে তাদের ছেলেমেয়েরা যে বিএ, এমএ পাশ করে নিজের পায়ে দাঁড়াবে কিংবা দেশের হাল ধরবে এমন উচ্চশা তাদের স্বপ্নঘুরেও হয় না। যেন চায়ের বাগানই হচ্ছে তাদের পৃথিবী! বাগানের সাহেবই হচ্ছে তাদের ত্রাণকর্তা! মোল্লার দৌঁড় যেমন মসজিদ পর্যন্ত তেমনি এইসব চা শ্রমিকদের চাহিদার দৌরাত্ম্যও বাগানের পরিদর্শক হওয়া পর্যন্ত!

ধীরেনের চার সন্তান ডায়রিয়াতে মারা যাওয়ার পর সে অনেকটা বিমর্ষ হয়ে পড়েছিল। দরিদ্রদের চিকিৎসা না পেতে পেতে অনেক রোগই ভাল হয়ে যায় আর এ থেকে মোটেও ব্যতিক্রম নয় ধীরেন। কষ্টের সমুদ্রে অবগাহন করতে করতে এখন সে নিজেই কষ্টের কষ্টিপাথর হয়ে গেছে। সহজে মনে কোন কিছু দাগ কাটে না। অর্থাৎ তার কোন কিছু পাওয়ার বিপুল আনন্দ যেমন নাই তেমনি তা হারানোর বেদনাও নাই। চা শ্রমিকদের মধ্যে সকলেই জানে ধীরেনের মতো সৎ ও শান্ত আর দ্বিতীয়টি নেই।

দুই

সেদিন ছিল রবিবার। যথানিয়মেই ধীরেন চাবাগান পরিষ্কার করার জন্য দা-কাঁচি নিয়ে বের হল। আজ 'সতের নম্বর' এলাকা খ্যাত চাবাগান পরিষ্কার করার কথা। তার বাড়ি থেকে সতের নম্বর স্থানটা হাঁটা পায়ে মিনিট চল্লিশের পথ। জায়গাটি নানা কারণে ভয়ংকর। একদিকে এলাকার যত জুয়াখোর রয়েছে প্রায়ই তারা সেখানে আড্ডায় মেতে ওঠে, অন্যদিকে স্থানীয় ডাকাতরা প্রায়ই এখানে এসে মিলিত হয়।

ধীরেনের এসব তথ্য মোটেও অজানা নয়। এবারই প্রথম সে সতের নম্বর চাবাগান পরিষ্কারের জন্য এসেছে। তার আঠার বছরের সুন্দরি মেয়ে পিংকী রানি 'সতের নম্বর' স্থান সংলগ্ন চাবাগানে চাপাতা তুলছে। ধীরেন বিকেল পাঁচটা অবধি বিরতিহীনভাবে কাজ করে ফিরতি পথে রওয়ানা দেয়। তার সাথে রয়েছে নরেন চন্দ্র। গামছায় চোখ-মুখ মুছতে মুছতে সে হাঁটে। অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটায় হঠাৎই লোহা জাতীয় কিছুর সাথে পা লেগে হোঁচট খায়। সাথে সাথে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটে। ধীরেনের চোখ রক্তের কিন্তু দিকে নয়, লোহার দিকে। লোহাটি তুলতে গিয়ে বড় বিপাকে পড়লো সে। লোহার এক চতুর্থাংশ বের করা আর বাকী অংশটি মাটির মধ্যে। নরেনকে কাছে আসার জন্য ধীরেন ইশরা করে মৃদু স্বরে বলে- বাক্সটা নাই ধরবে?
- ক্যানে ধরবে?
- পয়ছার বাক্স লাগে ওঠা

নরেন বিস্ময়ী দৃষ্টি নিয়ে ধীরেনের দিকে তাকায়। বয়সে দুজনেই প্রায় পিঠাপিঠি। দুকলম হিসাব জানার কারণে বাগানের সাহেব তাকে ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব দিয়েছে। ছোট ইন্সপেক্টর! ছোটবেলা থেকেই দুজনে একসাথে বেড়ে ওঠেছিল বলে তাদের মধ্যে মনিব ও শ্রমিক সম্পর্ক বেশ একটা প্রাধান্য পায় নি। বরং অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতোই থেকেছে। নরেন তার দিকে পিটপিট করে তাকিয়ে রয়েছে বলে ধীরেন একটু ব্যাঙ্গ করে বলে- বাবু, তুই হামার কথার বিশ্বাছ নাই করছিছ?
- ক্যানে রে ধীরেন? হামার কাপড়ে নো মাটি লাগে যাবেক...
- হু, হামদের পয়ছায় তোদের কত ফুটানি রে বাবু...!

তীব্র খোঁচাত্মক কথা শুনে নরেন কেবল মাথা নিচু করল। ধীরেন নিজেই খুঁড়তে লাগলো। যতই সে খুঁড়ছে ততই যেন তার মধ্যে কৌতূহলের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। প্রথমবার ভেবেছিল টাকাভর্তি লোহার কলসি-টলসি হবে হয়ত, কিন্তু পরক্ষণে দেখা গেল কলসি নয় বোমা!

নরেন ভয় পেয়ে একটু দূরে সরে যায়। এ যে তাজা বোমা! এখনো ফোটে নি! তাকেও দ্রুত সরে আসতে বলে। কিন্তু ধীরেন সরে না। তার ভেতর প্রচণ্ড সাহস। এটি যে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি আর রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির মালিকে যে তা যে কোন মূল্যেই ফিরিয়ে দেয়া উচিত; বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় বড় ডিগ্রি না থাকলেও চা শ্রমিক ধীরেনের এ জ্ঞানটুকু ছিল। সে দূঢ় প্রত্যয়ের সাথে বলে- বোমা হামি কমান্ডারের গরে লিয়ে যাবে, কমান্ডার বাবু বহুত খুছ হইবেক।

এই বলেই সে বোমাটি মাটি থেকে তুলে ফেলল। অবস্থা দেখে মনে হল জিনিসটি বেশ কয়েকবছর আগের। কেউ হয়ত অগোচরে এখানে লুকিয়ে রেখেছে অথবা এটি নিক্ষিপ্ত হয়েছিল কিন্তু তা ফোটেনি। বোমার মুখ না খুললে সেটি বিস্ফোরিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম এমনটিই ধারণা ছিল ধীরেনের। কেননা, মুক্তিযুদ্ধের সময় সে যখন ট্রেইনিং নিয়েছিল তখন তাকে সব ধরনের অস্ত্র সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিয়েছিল।

সরকার যে এখন মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দিচ্ছে কিংবা সন্তানদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে ধীরেন এখনো তা জানে না। যুদ্ধ শেষে যখন নিজের মাতৃভূমি নন্দীপুরে গিয়েছিল তখন মর্মাহত হয়ে শুনেছিল- একএক করে তার মা-বাবা, বড় ভাইকে পাকিস্তানীদের হাতে নির্মমভাবে শিকার হওয়ার কাহিনি। একটি মাত্র আদরের বোনকে ধর্ষণ করে হত্যা করার মতো লোমহর্ষক কাহিনি। তাদের ঘরবাড়ি পর্যন্ত জ্বালিয়ে দিয়েছিল স্থানীয় রাজাকারের সংঘবদ্ধ চক্র। অনেকটা নিরুপায় হয়েই সেদিন ধীরেন লজ্জায়-ক্ষোভে সে গ্রাম ত্যাগ করে। নিজের কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় ভালো কোন চাকরিও হয়নি।

এই চাবাগানে নরেনই তাকে আশ্রয় দিয়েছে। এজন্যই সে নরেনের প্রতি একটু বেশিই দুর্বল। নরেনের বিপদে সে যারপর নাই সাহায্য করার জন্য পাগল থাকে। শুধু সে নয়, তার বড়ে মেয়ে বিজলীও নরেন কাকার প্রতি বাবার মতোই নজর রাখে। আজ বোমা দেখে নরেন ভয় পাওয়ার কারণে ধীরেন সেই কৃতজ্ঞতাবোধ স্মরণ করে মৃদু স্বরে বলে- এ বাবু, তুই ছামনে আগুয়া, হামি হিয়া আছি...। তুই ডরাস না হাম আসছি পেছে।

তিন
বোমাটি ওজনে প্রায় পনের-ষোল কেজির মতো হবে। মরিচা পড়ায় বেশ পুরনো বলে মনে হল। আর সে মরিচাকেই কিছুটা সান্ত্বনা হিশেবে দেখল নরেন। তথাপিও তার গা ছমছম করছে। যদি... ! কথাটি একবার ভাবতেই অজানা শংঙ্কায় এই শীতের মধ্যেও সে ঘামতে থাকে। তার চিন্তার সুশ্রী পৃথিবী শংঙ্কায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে ওঠে। এজন্য ভয়ে ভয়ে সে একটু জোরেই পা চালাচ্ছে। কিছুদূর হাঁটতেই নরেনের চোখ পড়ল রাস্তার অদূরে চা গাছের নিচে আধো আলোতে পড়ে থাকা লাল ওড়নার প্রতি। সে ভাল করে তাকাল। কোন এক তরুণী পা বাঁধা অবস্থায় মাটিতে উপুর হয়ে পড়ে রয়েছে। সন্নিকটেই চায়ের ঝুরি।
নরেনের মন ছ্যাৎ করে ওঠলো। এ তো ধীরেনের মেয়ে বিজলীর মতো লাগছে। চেহারাটা আরেকটু স্পষ্ট হতেই নরেন চিৎকার করে ওঠলো- ধীরেন! তর ব্যাটি গাছের নিচে বান্দা পড়েছেক রে।
কথাটি বলেই সে দৌঁড়ে মেয়েটির কাছে যায়। উপুর করা মুখটি সোজা করে। কী আশ্চর্য! এ যে তার ভাতিজি, ধীরেনের কন্যা বিজলী! মুখ জুড়ে ক্ষতাক্ততা। সাদা জামা জুড়ে অলঙ্কারবিহীন ছুপছুপে রক্ত। অর্ধ উলঙ্গ বুক। যৌনাঙ্গের বলয় জুড়ে রক্তের নহরা এখনো বয়ে চলছে। হয়ত খানিক পূর্বেই কোন নরপশুর দল তার ওপর পাশবিক নির্যাতন করেছে!
নরেন চিৎকার করে ডাকলো - ধীরেন! বিজলী! মাইজি!! হামার মাইজি!!! তার আর্তচিৎকারে হাহাকার করে ওঠে স্নিগ্ধ বিকেল। গগণবিদারী চিৎকারের অণুরনন নিঃশব্দের গভীর অরণ্যে ঢেউ তুলে। ধীরেনের টনক নড়ে। কিন্তু কিছু না বুঝতে পেরে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি নিয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকায়। নরেন বলে- এরে জলদি আয় তর বেটিটা গিরে আছে।
- কি বলছিছ তুই? হামার বেটি নো আরেক জায়গায় কামে গেছে রে!
- এই দেখ নো তর ব্যাটি লাগে, জলদি আয়।
সূর্য তখন গোধূলির আল্পনায় রং মাখাতে নিমগ্ন। চারদিকে শুনশান নীরবতা। ডানে বামে যতদূর চোখ যায় শুধু বিস্তৃর্ণ চাবাগান। কেউ কোথাও নেই। সমস্ত বাগান জুড়ে যেন অদ্ভুত নীরবতা বিরাজ করছে। আকাশে সাদামেঘের ভেলা আঁধারের নীল গালিচায় মুহ্যমান হওয়ার পথে। কোথাও পাখপাখালিরও কোন কিচিরমিচির নেই। হয়ত সারা দিন ক্লান্তির পর নীড়ে ফিরে সন্তান-সন্ততিদের সাথে বিশ্রাম নিচ্ছে। কেবল একটি দুটি ঘাসফড়িংকেই এলোপাথারি ছুটতে দেখা গেল।
এমন নীরব ক্ষণে নরেনের চিৎকারে ধীরেন দৌঁড়ে এল। এখনও নিঃশ্বাস চলছে, বন্ধুর মেয়ের জন্য কিছু একটা করা চাই-ই চাই, তার কর্মী বাহিনীদের আনলেই বেশি উপকার হবে। তাই সে একটু দূরে সরে উচু টিবিতে দাঁড়িয়ে কাকে যেন ফোন করে। দ্রুত আসার জন্য জানায়। এদিকে রাতের অন্ধকার ক্রমেই দিনের আলোকে গ্রাস করার নিরন্তর পায়তারাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেছে।

সারাদিনের কর্মক্লান্ত ধীরেন। তদুপরি মেয়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখে তার শরীর আরও নিস্তেজ হয়ে আসে। হাড়-কাঁপানো শীতে দুর্বল ব্যক্তির মতোই সে ঠকঠক করে কাঁপতে থাকে। কাঁপতে কাঁপতে তার হাত থেকে পড়ে যায় পুরনো বোমা। কাকতালীয়ভাবে বোমাটি পড়ে ছোটগর্তের ওপর রাখা কালো একটি পাথরের ওপর। নিমিষেই অপ্রত্যাশিত বিকট শব্দ হয়। প্রচণ্ড ধোঁয়া। কয়েক মিনিট পর ধোঁয়া থামলে নরেন এগিয়ে আসে।

শতাব্দীর নিংড়ানো বেদনা ভারাতুর বিস্ময়ী দৃষ্টি নিয়ে সামনে তাকায়। অবলীলায় সন্ধ্যার ঘনায়মান অন্ধকারের মতোই আরও অন্ধকার হয়ে ওঠে তার চোখ।

-----------------------
০৮.১২.২০১৪
মুনশি আলিম
জাফলং, সিলেট
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×