somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বোধ !

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবি নেট ।

একবার না ঠিক বহুবার এমন হয়েছে। এখনো চলছে।আমার আসলে খাবার এর বেলায় বরাবর ছিল অনীহা। অনীহা বলতে তেমন বাছবিচার নাই হালাল কিছু একটা হলেই হলো। 

আমি আলু ভর্তা, ডিম ভাজি, ডাল হলে যেমন খুশী তেমনি আবার পোলাও কোরমা হলেও সই। মানে শরীরে তাপ উৎপাদন এর মতন কিছু খেতে পারলেই হলো। অমন স্পেশাল কিছু চাই বা হতে হবে তা নয়।

একবার হলো কি! মা অনেক তরকারি করেছেন। সারাদিন রান্না করতে করতে ক্লান্ত। আমি লক্ষ্য করেছি দিনের বেশির ভাগ সময় তিনি রান্না ঘরে পাড় করে দেন। বাবা যথারীতি দুপুরে কাজের জায়গা থেকে বাসায় খেতে এসেছেন। উনি খাচ্ছেন বেশ আয়েস করে কিন্তু হলো কি ডাল নিয়ে মুখে দিয়ে মাকে বললেন, " কি রান্না কর? " ডালে লবন হয়নি এক ফোঁটা ! " মা তো অবাক!  বলতে শুরু করল আমার কথা। ও না একটু আগে ভাত খাইল। কই কিছুই তো বলল না। আব্বা হাসতে হাসতে বলতে লাগলো "তোমার ছেলের সেই বোধ বা অনুভূতি আছে ? "

মা আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করল,  " কিরে তুই না ভাত খালি তা ডাইলে যে লবন কম হইছে আমায় বলবি না ! " আশ্চর্য! এখন তোর বাবা হইচই করছে। লোকটা পেট ভরে ভাত না খেয়ে চলে গেল। আসলে তুই কি? আমি হা, হুম বলে আমার কথা শেষ করলাম। মা বিরক্ত হয়ে বলল," যা আমার চোখের সামনে থেকে। এইডার লগে কথা কওন আর কলাগাছের লগে কথা কওয়া এক সমান! "

এখন গভীর রাতে এসব পুরনো স্মৃতি যখন মগজ কামড়ে ধরেছে তখন অনেক কথাই মনে পড়ছে। এই যেমন, একবার ঈদে আমার সাথে যে সব মেয়ে বান্ধবীরা পড়তো ওরা বাসায় এলো। তখন নয় ক্লাসের ছাত্র আমি। ওরা বাসায় এসে দেখে আমি হাফ প্যান্ট পড়া খালি গায়ে টিভি দেখছি। আমার তো তখন লজ্জায় মুখ, চোখ লাল!তার ভিতর এদের মাঝে যাকে একটু মনে ধরেছে সে ও আছে।ওরা তো হাসছে। মনে হয় দুনিয়ায় আমি একমাত্র উদোম গায়ে হাফ প্যান্ট পড়া ছেলে!ওরা জিজ্ঞেস করল, কি খবর? ভালো আছ? আমি, হুম বলে, ওদের বসতে বলে, সোজা মায়ের কাছে।

মা তো অবাক! কিরে কি হইছে? আমি কিচ্ছু না বলে একদম বাসা থেকে বেরিয়ে সোজা মাঠে। অবশ্য এখন সেখানে আর মাঠ নাই বড় বড় ইমারত!

এই খবর মোটামুটি মহল্লায় চাউর হয়ে গেল যে, আমার লজ্জা অতিরিক্ত বেশী ! তারপর ওদের এক রাস্তায় দেখলে আমি অন্য রাস্তায়।

তবে যাকে দেখলে আমার ভেতর কবুতরের মতন বাক-বাকুম করতো। এখনো মনে আছে প্রতিদিন সকালে একটা নির্দিষ্ট সময় ওরে দেখার জন্য বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা হতো। ও নীচ থেকে চেয়ে ভেজালমুক্ত হাসি দিত একটা। আহ! এত বছর পরেও ভেতর কেমন জানি করে! তারে কোনদিন অবশ্য বলতে পারেনি ভালোবাসি। ঐ নীচ থেকে উপর চাওয়াচাওয়ি, রাস্তায় দেখা হলে একটু আধটু হাসি। এই ছিল। ওর বাবা ছিলেন সরকারি চাকুরীজীবি। তিনি যেদিন বদলি হয়ে চলে যান অন্যত্র আমাদের মহল্লা ছেড়ে। মনে হয়েছে একি সর্বনাশ হলো আমার! কি থেকে কি হয়ে গেলো নিমিষেই। আমি ছাদে যেয়ে অনেকক্ষণ কেঁদেছিলাম।

এরপর আর যোগাযোগ হয়নি বা করার সাহস ছিল না উপায় ও ছিল না। তখন তো এখনকার মতন ফেসবুক বা মোবাইল ফোন হাতে হাতে ছিল না! এখন মনে হলে ভীষণ হাসি। কি ছিলাম ! আর বর্তমানে দেখি আজকে এর সাথে কালকে ওর সাথে মানে বিছানার চাঁদর বদলের মতন প্রেম!

আমি যার কথা বললাম, অনেক পরে মানে যখন কলেজে পড়ি। তখন একদিন মা, বাবার সাথে ডাইনিং টেবিলে বসে খাচ্ছি। এমন সময় বাবা, মা কে বললেন,  আরে শোন! আজকে একটা ঘটনা ঘটছে। মা স্বাভাবিক ভাবে জিগ্যেস করল কি হইছে? বাবা বললেন, ঐ যে আমাদের মহল্লায় থাকতো শিক্ষা অফিসার শওকত সাহেব। উনার সাথে হঠাৎ দেখা। লোকটা শুকিয়ে গেছে। চেনা যায় না। ডায়াবেটিস! মা এতদূর শোনে বাবাকে বললেন , তা বাসায় নিয়ে আসতেন? ভাবী?  তারপর রোমা কেমন আছে?

বাবা বললেন, উনি ভালো আছেন। আর রোমার বিয়ে হয়ে গেছে। এখন ইউ এস এ থাকে। আমার এ কথা শোনার পর ভাত আর গলা দিয়ে নীচে নামছিল না মনে হয় আটকে গেছে। চোখ জলে ছলছল কিন্তু এতদিনে আমি অনেক বদলে গেছি দুঃখ লুকাতে কান্না লুকাতে উস্তাদ হয়ে গেছি। ভীষণ পটু !

তুমি ছুঁলে
ভেতরকার নোনা ধরা দেয়াল
মজবুত প্রাণবন্ত হয়
তুমি ছুঁলে
ঝুলিয়ে দেয়া হয়
রাজ্যের প্রতিটি দ্বারে
" প্রেম চলছে
ঝামেলা কম ! "

শুভ রাইত দুপুর ! যা মন চায় করেন তবে বেশী চাপাচাপি করবেন না যা গরম ইদানীং চলছে ! হা হা হা। জীবন বড্ড বিচিত্র ! ভালো থাকবেন সকলে। টা টা.....


সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:৪১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×