“হিজড়া” -শব্দটা শুনলেই কেমন জানি লাগে, তাই না? অস্বীকার করব না, ছোটবেলায় এদের দেখলে চরম ভয় পেতাম, দৌড়িয়ে বাসায় চলে যেতাম। লেখা পড়ে ভাববেন না যেন আবার যে আমি হিজড়াদের অসম্মান করছি। আসলে ছোট থেকেই আমাদের মনে তাদের সম্পর্কে ভয়ংকর কিছু ধারনা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। ওদের সম্পর্কে সত্য-মিথ্যা অসংখ্য ঘটনা প্রায় শুনতাম, যার ফলে ওদের নিয়ে মনে একটা ভীতির সৃষ্টি হয়েছিল, এবং এখনও কিছুটা আছে।
যায় হোক, এখন ওদের সম্পর্কে স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করছি। কিছুদিন আগে ট্রেইনে ওদের মুখোমুখি হয়েছিলাম, একজনের সাথে টুকটাক কথাও বলেছি, চেহারাটা মায়াবি ছিল। চাদা তোলার জন্যে ট্রেনে উঠেছিল ওরা, আমার কাছে টাকা চাওয়ামাত্রই দিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার পাশের ভদ্রলোকটাকে অনেক খোচাতে হয়েছিল টাকার জন্যে...
হিজড়াদের সাধারনত আমাদের মত সাধারন মানুষদের মত জীবন চালাতে হয় না। তারা মানুষের দয়া-মায়ার (ভিক্ষাবৃত্তি কিংবা চাদাবাজ যায় বলেন না কেন) উপর নির্ভর করে থাকতে হয়। এপাড়া-ওপাড়া, এবাড়ি-ওবাড়ি, এই দোকান-ঐ দোকান, এই গাড়ি-ঐ গাড়ি থেকে তারা দল বেধে ঘুরে ঘুরে চাল-ডাল টাকা পয়সা সংগ্রহ করে। আর আমার জানামতে প্রত্যেকে একপ্রকার বাধ্যই থাকে তাদের সাহায্য (এটাই আইন কিনা জানি না) করার জন্যে। সপ্তাহে একবার অথবা দুইবার তারা বের হয়ে এই কাজটা করে। তবে আমাদের এলাকায় কিছুটা ব্যাতিক্রমতা আছে, (অন্য এলাকার খবর জানি না) কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে কিছু হিজড়া পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করে। ব্যাপারটা অবশ্যই পজিটিভ কিছু।
তবে সবচেয়ে বড় পজিটিভ নিউজ হচ্ছে সরকার এদের ট্রাফিক পুলিশ হিসেবে নিয়োগ করা সহ তাদের পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্যে বেশকিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। এই বিষয়টা অবশ্যই সময়ের সেরা সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম। এতদিন মানুষ হয়েও তারা রাষ্ট্রীয় অনেক সুবিধায় ভোগ করতে পারত না, আশা করি খুব শীঘ্রই তারা এই অবস্থানটা থেকে মুক্তি পাবে। আর চারজন সাধারন মানুষের মত তারাও নিজে কাজ করে নিজেই নিজের ভরন-পোষন চালাতে পারবে...

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



