somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেঁচে থাকা যখন অর্থহীন লাগে (চতুরভূজ)

২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ ছিল রোববার। সারাটাদিন ঘুমিয়ে কাটালাম। ঘুম থেকে উঠার পর থেকেই শুরু হয়েছে যন্ত্রনা। এক অন্যরকম যন্ত্রনা আর ভয়। ইচ্ছে করছে কোন জনমানবহীন স্থানে গিয়ে চিৎকার করি। ঝেড়ে ফেলি সব রাগ। রাগ? কার উপর রাগ? জানিনা আমার এই কথায় সবার প্রতিক্রীয়া কিরকম হবে, তবে হ্যাঁ, সত্যি কথা হল আমার রাগ হয়েছে সৃষ্টিকর্তার উপর!

কেন তিনি আমাদের সৃষ্টি করলেন? কেনইবা প্রত্যেকের জীবনে মিয়োসীস বিভাজনের ভেতর চরম বৈচিত্রতা এনে দিলেন, আর বৈচিত্রতা যখন এনেই দিলেন তখন কেন এত রহস্যের মাঝেও বোরিং লাগে পৃথিবীতে? একবার পড়েছিলাম, হিন্দু পুরানের অর্জুন নাকি যুধিষ্টিরকে বলেছিলেন, " এই পৃথিবীতে সবচেয়ে আশ্চর্য্য জনক কথা কি ? " যুধিষ্ঠির তখন জবাব দিয়েছিলেন এই বলে যে, " মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও তারা বেঁচে থাকার প্রানপন চেষ্টা করে- এর চাইতে আর আশ্চর্য্যের বিষয় কি হতে পারে?" আসলেই আশ্চর্য্য আর বিস্ময়ে ভরা এই পৃথিবী আর সকল বিস্ময়ের সীমানা ছাড়িয়ে বিস্ময়কর এই পৃথিবীর বাসিন্দারা আর তাদের কল্পনা। কল্পনা বিলাসের অদ্ভুত ক্ষমতা!

কে বলতে পারে, আমি এই পৃথিবীতে আগে এসেছিলাম কিনা! হয়ত এই পৃথিবীতে নয় অন্য কোন ভূবনে আমি তাঁর মুখোমুখি হয়েছিলাম কিন্তু সেই স্মৃতী Delete করে ফেলা হয়েছে আমার মস্তিষ্ক থেকে। আমি জানি এই কাজটি একারণেই করা হয়েছে যেন আমরা আর নতুন কোন মতবাদ তৈরী করতে না পারি তাঁকে নিয়ে, যেন তিনি ধোঁয়াটেই থেকে যান আমাদের কাছে। কেন এমন খেলা খেলছেন তিনি? বুদ্ধিমান হলেই কি এমন করতে হয়? জানিনা, মনে হয় করতে হয় কারণ, আমরা যখন Laboratory তে গিনিপিগ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করি তখন সেটা আমাদের কাছে অপরাধ নয়। তবে কি সৃষ্টিকর্তার কাছে গিনিপিগ? আমাদের নিয়ে তিনি কোন সূত্রের সত্যতা যাচাই করতে চাইছেন?

তিনি আমাদের ভাবতে শেখান, স্বপ্ন দেখান, আবার ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে দেন সেইসব স্বপ্ন- আমাদের মন ও মস্তিষ্কের উপর প্রবল চাপ পরে আমরা কষ্টে কুকড়ে যাই কেঁদে উঠি ডুকড়ে ডুকড়ে। কিন্তু তাতে তাঁর কি লাভ? চোখের সামনে দেখতে হয় প্রিয়জনদের চলে যাওয়া, তারপর নিজের চলে যাবার অপেক্ষা.....

সহস্র বছর আগে তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষ । মানবের সাথে সাথে তৈরী করেছেন মানবীকেও। তাদের ভেতর দিয়েছেন ক্ষুধা- তৃষ্ণা, জৈবিক সমস্ত ব্যাপার, যৌবনে দিয়েছেন কামনার তাড়না। তারা উৎপাদন করে নতুন সন্তান, তৈরী হচ্ছে নতুন সম্প্রদায়ের। তিনি টিকে থাকছেন মিলিয়ন ট্রিলিয়ন বছর! আমরা চলে যাচ্ছি আবার আসছি, আবার যাব আবার আসব। অথচ তিনি টিকে থাকবেন- অথচ তিনি আমাদের চাইতে আনলিমিটেড কোটি উপরের স্তরের বুদ্ধিমত্তা।

যখন একদল দোজখ আর আরেকদল বেহেশতে যাবে তারপর কি তাঁর খেলা শেষ হবে? যত মহাশক্তিধরই হোননা কেন তিনি সেটা করতে পারবেননা, তাঁকে উন্মোচিত হতেই হবে। কেউই চিরকাল নিজেকে লুকিয়ে রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেনা। কবে আসবে সেই মহেন্দ্রক্ষন? তখন কি আমারা বিবর্তিত হব নাকি অন্য কোন প্রজাতী আসছে? যারা মানুষের চাইতেও বুদ্ধিমান। নাকি সেই রহস্য মানুষেরাই উন্মোচন করবে?

এক চরম বুদ্ধিমান স্বত্তার দ্বারা নিয়ন্ত্রীত এই আমরা পুরোপুরি নগ্ন তাঁর সামনে, নিজের ভেতরকার নগ্নতা! কিন্তু এর প্রকৃত উদ্দেশ্য কি তা আমার জানিনা, কোনদিন হয়ত জানবও না। না ভুল বললাম, হয়ত একদিন জানব, আমাদের জানানো হবে। মানুষের সবচেয়ে বড় দূর্বলতাই হতে পারে তার শক্তি, মানুষ ইচ্ছে করলে মারা যেতে পারে। মৃত্যুযে খুব খারাপ জিনিস সেটা কি কেউ প্রমান করে দেখিয়েছে?

This world's is no float for us,
Nor blanks, it means intensely and means good" – Browning (Fra alippo lippi)



বিঃদ্রঃ - আমার এই লিখাটা কেবল মাত্র আমার দ্বীধাগ্রস্থ অশান্ত মনের প্রলাপ। আস্তিকতা এবং নাস্তিকতার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। মাঝে মাঝে যদিও এইসব অর্থহীন প্রশ্ন হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত হয় তবুও এক স্রষ্টার ভয়ে অথবা আতীব বুদ্ধিমান কোন শক্তির উপর শ্রদ্ধায় সেসব মূহুর্তের মধ্যেই কর্পুরের মত উড়ে যায়। আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল, সুন্দর জীবনের জন্য চমৎকার জীবন বিধান কুরআন, মৃত্যু এবং শেষ বিচার। আমি আরও বিশ্বাস করি উপরে বর্ণিত কিছু যৌক্তিক অথবা অবান্তর প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে স্রষ্টাকে আরও বেশি করে হৃদয়ে প্রোথীত করে নিতে পারব।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২০
৫৬টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×