somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রেলগাড়ি রেলগাড়ি...

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ষ্টেশনে ট্রেইনের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। মাকে দেখলাম রেললাইনের একদম কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার কেমন জানি ভয় লাগলো। মাকে ধরে টেনে দূরে নিয়ে আসলাম। তখন দূরে দেখলাম ট্রেইনটা দেখা যাচ্ছে। ট্রেইনটা দেখতে খুবই অদ্ভুত লাগছে। ট্রেনের দু'পাশে অনেক মানুষ ঝুলে আছে। আরও অদ্ভুত লাগলো যখন ট্রেইনের হুইসেলের বদলে নিজেরা চিৎকার করে ট্রেইনের উপস্হিতি জানান দিতে লাগলো।কি অদ্ভুত!

মা আমার সাথে একদমি কথা বলছেনা। :( ট্রেইন কাছে এসে থামতেই মা ট্রেইনে উঠে গেলো। আমি উঠতে গিয়ে খুব অবাক হলাম। কারণ, ট্রেইন লাইন হলো বাঁশের, এই লাইনে ট্রেইন চলা কি করে সম্ভব! মা ট্রেইন থেকে নেমে গেলো আমিও নামলাম। পাশে দেখি একটা খুব সুন্দর ট্রেইন। ও মা! এটা এলো কখন? কি জানি! মা'র পিছু পিছু আমিও ঐ ট্রেইনের দিকে গেলাম। ট্রেইনটা খুব সুন্দর। নীলচে রং-এর, ট্রেইনের সিঁড়িগুলো খুব উঁচু উঁচু, উঠলাম অনেক কষ্ট করে। কিন্তু আমার ছোট বোনটা ‌উঠতে পারছেনা। আমি ওকে টেনে হিঁচরে ট্রেইনে তুললাম। ট্রেইনে খুব ভিড় কোথাও বসায় জায়গা নেই। আমরা পিছনের দিকে যেতে থাকলাম। কিছুদূর যাবার পর দেখি আমার একটা কাজিন! কত্তোদিন পর দেখলাম। কতো বড় হয়ে গিয়েছে!

আমরা একদম পিছনে যায়গা পেলাম। আমার ভাই ও আমাদের সাথে এসে বসলো। ট্রেইনটা উপরের দিকে চলতে শুরু করলো। হঠাৎ ট্রেইনের পিছনের বগির দরজাটা খুলে গেলো। আমি ভয়ে মা আর বোনকে ধরে রাখলাম, যদি ওরা পড়ে যায়! একটু পর আপনা-আপনি দরজাটা বন্ধ হয়ে গেলো। আমি আর আমার ভাই গিয়ে সেই দরজাটায় হেলাম দিয়ে পুরনো এ্যালবাম দেখতে লাগলাম। আমাদের ট্রেইনটা ভীষণ গতিতে উপরের দিকে ছুটে চলছে...

***********************************************************************
আমার ঘুম ভেংগে গেলো। যাক ঘুমিয়েছি তাহলে! ঘড়িতে দেখলাম মাত্র ১০ মিনিট ঘুমিয়েছি। সারারাত পর সকালে ১০ মিনিট ঘুম! মাথা ব‌্যাথায় মা, আম্মু...বলে কঁকিয়ে উঠলাম।মা'কে ভীষণ কাছে পেতে ইচ্ছা করলো। কেঁদে ফেললাম‍...মা তুমি এখন কাছে থাকলে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেই হয়ত মাথা ব্যাথাটা কেটে যেত...মা, আম্মু...প্লিয একটু মাথায় হাত রাখো না...চোখের জলে বালিশ ভিজে উঠে...

আমার চোখের সামনে একটা বড় চকোলেট কেইক ভাসে। কেইকের উপর ১৩টা মোমবাতি জ্বলছে। ১৩টা মোমবাতি কেনো!?! ১৩ তো আনলাকি :( আমি কি আবার ঘুমিয়ে গেলাম! চোখ খুলে আমার কেইক খেতে ইচ্ছা করে...চকোলেট কেইক...

আমি চুপচাপ বিছানায় শুয়ে থাকি। আম্মুকে ডাকলে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে বললে হাত বুলিয়ে দিবে কিন্তু আমার ডাকতে ইচ্ছা করেনা। আমি শুয়ে শুয়ে তা'এর কথা ভাবি। ওর কি এখন মাথা ব‌্যাথা হয়? হয় না বোধহয়। এখন তো আমি কাছে নেই, বক বক করে, ঝগড়া করে ওর মাথা ধরাই না। এক আধটু হলে আম্মু নিশ্চয়ই হাত বুলিয়ে দেয়। ব্যাথা না হলেও দেয়...আমি জানি। :)

আমার মাথা ব‌্যাথা হলে ও সবসময় আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতো। ওর আমার মাথায় হাত রাখলেই মনে হতো আমার সব ব‌্যাথা নেই! মাথা ব‌্যাথা হলে ও হাত বুলিয়ে দিবে তাই ঔষুধ খেতাম না। ও আমাকে বলে বলে ঔষুধ খাওয়াতো। আমার খুব ইচ্ছে করে ওকে ডেকে বলি, "আমার খুব মাথ‌া ব্যাথা..."। ও শুনে নিশ্চয়ই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতো আর আমার খুব ভালো লাগতো, মনে হত আমার মাথ‌া ব‌্যাথা সেড়ে যাচ্ছে...কিন্তু আমি কাউকে ডাকি না, চুপচাপ বিছানায় শুয়ে থাকি। শুয়ে শুয়ে ছড়া বানাই,

রেলগাড়ি রেলগাড়ি
উড়ি উড়ি
মেঘের দেশে
যায় ভেসে...
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১১ ভোর ৬:২১
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×