somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আরবের মিথ্যের চশমা

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ৩:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিগত চৌদ্দশত বছর ধরে মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ হবার চেষ্টা করছে, এগিয়ে যাবার চেষ্টা করছে কিন্তু বাস্তবে নিজেদের মধ্যে সহিংসতা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল মুসলমানদেরকে একটি পশ্চাৎপদ নৃ গোষ্ঠীর পরিচিতি ব্যতীত বেশী কিছুই এনে দিতে পারেনি।বানরের তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে ওঠার মতোই মুসলমানরা তিনফুট উপরে উঠলেও তৈলাক্ততার কারনে আবার দুই ফুট নিচে নেমে আসে৷ মুসলমানদেরকে এমন তৈলাক্ত বাঁশ উপহার দিয়েছে কিছু কিতাবী জ্ঞানের বাহক নামধারী আলেম, তারা আবু সুফিয়ানকে রাদিআল্লাহ বলা আর মুয়াবিয়াকে রাদিআল্লাহ এবং কাতেবে ওহী প্রমাণ করার জন্য এমন কোনো ব্যাবস্থা নেই যা গ্রহন করেনি৷ ইসলামের প্রকাশ্য এবং প্রমাণিত শত্রুদের যদি মুসলমানরা রাদিআল্লাহ মনে করতে থাকে তবে সেই সকল মুসলমানদের মধ্যে রাসুল করিমের গুনাবলীর চাইতে কাফিরদের স্বভাব বেশী প্রকাশিত হওয়াটাই স্বাভাবিক৷
এই সকল জ্ঞান পাপী আলেমরা ইসলাম প্রতিষ্ঠীত হওয়ার প্রাথমিক দিকের সেই মরনপণ যুদ্ধ গুলিকেও আজ মুসলমানদের চোখের আড়াল করার চেষ্টা করছে কারন সেই যুদ্ধ গুলিতে আবু সুফিয়ান এবং মুয়াবিয়ার অবস্হান স্পষ্টত রাসূল করিমের বিরূদ্ধে ছিল৷ রাসূল করিম সা. মদীনাতে হিজরত করার পর মক্কার কুরাইশদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেন৷এই যুদ্ধটি বদরের যুদ্ধ নামে পরিচিত, যুদ্ধে আনসার-মুহাজীর বাহিনীর নেতৃত্ব দেন রাসূল করিম সা. আর অপর দিকে কুরাইশদের নেতৃত্বে ছিল আবু জাহল৷যুদ্ধে কুরাইশদের বিশাল বাহিনী অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক মুসলমানদের কাছে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়৷এই চরম পরাজয় মক্কার কাফেরদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সন্ঞ্চার করে৷তারা বৃদ্ধ আবু জাহলের পরিবর্তে উমাইয়া গোত্রের আবু সুফিয়ান ইবনে হারব কে নতুন নেতা নির্বাচন করে এবং আবু সুফিয়ান তার স্বভাব সুলভ কূটকৌশলে অন্যান্য সকল মুশরিক গোত্র গুলিকে একত্রিত করতে সক্ষম হয়৷ এরপর কাফিররা সর্বশক্তি দিয়ে মুসলমানদের বিরূদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে, ইতিহাসে এই যুদ্ধকে উহুদের যুদ্ধ বলা হয়৷ কিছু বেদুঈন আর ইহুদী গোত্রের ষড়যন্ত্রে মুসলমানরা বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল ওহুদের যুদ্ধে৷ রাসূল করিমের চাচা আবু হামজা এই যুদ্ধে শহীদ হন আর রাসুল করিম সা. নিজেও মারাত্মক ভাবে আহত হন৷বদরের যুদ্ধে নিহত নিজের পিতা উতবাহ'র হত্যার প্রতিশোধ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে হিন্দা হযরত আবু হামজা রা. এর মৃতদেহের বুক থেকে কলিজা বের করে চিবিয়ে খেয়েছিল৷ এই যুদ্ধে মুহাজীর আর আনসারদের নেতৃত্ব দেন রাসুল করিম সা. আর মক্কার মুশরিকদের ঐক্যজোটের নেতৃত্ব দিয়েছিল আবু সুফিয়ান৷
এরপর রাসুল করিম সা. কে হত্যা করে ইসলামকে পাকাপাকি ভাবে বিলুপ্ত করার পরিকল্পনা করতে থাকে আবু সুফিয়ান এবং মুয়াবিয়া৷ ইহুদিদের প্রত্যক্ষ মদদ দ্বারা শক্তি সন্ঞ্চয় করে আবু সুফিয়ান আবার মদীনা আক্রমন করতে আসে কিন্তু এবার তারা অত্যাধুনিক পরিখা এবং আগুনের প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়৷ এভাবে নালা বা পরিখা খনন করে প্রতিরক্ষা বুহ্য তৈরী করার কারনে এই যুদ্ধকে খন্দকের যুদ্ধ বলা হয়৷ এমন অভুতপূর্ব পরিকল্পনা প্রণয়নে হযরত সালমান ফার্সী রা. ব্যাপক ভূমিকা রাখেন৷সাতাশ দিন ধরে মদীনা অবরূদ্ধ করে রাখলেও মুয়াবিয়ার নেতৃৃত্বাধীন কাফিররা মদীনাতে প্রবেশ করার কোনো সুযোগই পায়নি৷ এই যুদ্ধেও মুহাজীর আনসারদের নেতৃত্ব দেন হুজুর করিম সা. আর কাফিরদের নেতৃত্ব দেয় আবু সুফিয়ান৷ মক্কা বিজয়ের আগের দিন পর্যন্ত এইরূপেই আবু সুফিয়ান আর তার পুত্র মুয়াবিয়া রাসূল করিম সা. এর সাথে প্রকাশ্য শত্রুতায় মত্ত ছিল৷ এত ইতিহাসগত তথ্য প্রমাণ থাকার পরেও মিথ্যার প্রলেপ দিয়ে দুষ্ট ক্ষত চিহ্ন গুলিকে ঢাকতে রচনা করা হয়েছে শত শত ভুয়া হাদিস, হাজার হাজার অবান্তর কিয়াস৷ সেই হতে আজ অবধি 'আবু সুফিয়ান - মুয়াবিয়া' নামক তেল মুসলমানদের আকীদাকে রাসুল করিমের আদর্শ হতে পথভ্রষ্ট করে এজীদী আদর্শে পরিবর্তীত করে চলেছে আর সেই তেলের প্রভাবে মুসলমানরা দুই'পা আগেলেও নৈতিক মনোবলের অভাবে তিন'পা পিছিয়ে যাচ্ছে৷ হাজার বছর ধরে সাধারণ মুসলমানদের চোখে উমাইয়ারা মিথ্যের চশমা পরিয়ে রেখেছে, সেই চশমাকে যথাসাধ্য আকর্ষণীয় করে তুলেছে জ্ঞানপাপী আলেম সমাজ। তবে সত্য হারিয়ে যাবার বস্তু নয়, সত্য কখনোই হারিয়ে যায় না। আজ আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে অনেকেই হয়তো সত্যটাকে জানতে পারছেন, সত্য জানার পর নিজের চোখের মিথ্যের চশমাটাকে খুলে ফেলাটা কিন্তু নিজেরই দায়িত্ব।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ৩:৪৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×