বিগত দিনগুলিতে যারা পান থেকে চুন খসলেই মুরতাদ আর মুশরিক বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলত সেই সব দাড়ি টুপি জোব্বা সর্বস্ব মোল্লারা এখন জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছে আর যেসব ইমামরা এতদিন তরিকতপন্থীদের বেদাত বলতে বলতে কাহিল হয়ে গিয়েছেন তাদের হটাৎ উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে ঘনঘন সংবাদ সম্মেলন করে বক্তব্য দেয়াকে যেন ভূতের মুখে রাম নাম নেয়ার মতই হাস্যকর প্রচেষ্টা মনে হচ্ছে।
যেসব মোল্লা-মাওলানা, গ্র্যান্ড ইমাম সাহেবরা এখন সংবাদ সম্মেলন করে বলছেন 'কুরআন আঘাত করা বা হত্যা করার আদেশ করেনি' অথবা 'বলছেন যে কুরআনে এমন কোন কথা নাই' বস্তুতপক্ষে তারা সম্পূর্ণভাবে বানোয়াট বক্তব্য দিচ্ছেন।পবিত্র কুরআনে কমপক্ষে এমন আট থেকে দশটা আয়াত আছে যেখানে হত্যা এবং আঘাতের কথা বলা হয়েছে। মোল্লাদের অস্বীকার করাতে সেসব আয়াত নিশ্চয়ই কুরআন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে না। আজ যারা ঐসব অর্ধ শিক্ষিত মোল্লাদের কথা মেনে নিবেন অদূর ভবিষ্যতে তারা যখন নিজেরা ঐসব আয়াতগুলো জানবেন বা কোনো ইসলাম বিদ্বেষীরা যখন সেসব আয়াত উপস্থাপন করবে তখন তাদের বিশ্বাস তাসের ঘরের মতই ভেঙে পড়বে। এসব বানোয়াট বক্তব্যের মাধ্যমে আরও কিছু মানুষের বিভ্রান্ত হয়ে ইসলাম ত্যাগ করা ব্যতীত আর কোনোই উপকার হবে না।
এই মুহূর্তে প্রয়োজন সেই সব আয়াত গুলির ভুল অনুবাদ গুলোকে সংশোধন করে শুদ্ধ ভাবে উপস্থাপন করা, প্রয়োজন সেই সব আয়াত গুলির আরবি ব্যাকরণ ভিত্তিক বিশ্লেষণ যাতে ঐসব আয়াতগুলোর সঠিক প্রায়োগিক দিক সমূহ বাংলাদেশের সাধারন মুসলমানরা বুঝতে পারে। ঐসব আয়াতগুলো যে কেবলই নিজের অভ্যন্তরের নোংরামী আর সত্য গোপন করার অভ্যাসকে সংশোধন করার জন্য এসেছে তা পরিস্কার করে বলা এখন খুবই প্রয়োজন। অবশ্য এসব কাঠ মোল্লারা কোনোদিনই সেসব আয়াতের দেহতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করতে পারেনি, তাই আজ কুরআন নিয়ে মিথ্যা বলে নিজেদের গা বাঁচানোর চেষ্টা করছে আর এতে করে বাংলাদেশের মুসলমানদের ক্ষতির পরিমাণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশে ইসলামী উগ্রবাদের উত্থানের পেছনে সেইসব অকর্মণ্য অর্ধ-শিক্ষিত মোল্লা-মাওলানাদের বিরাট অবদান রয়েছে এবং বাংলাদেশের নিস্ক্রিয় আলেম সমাজের এই দায় এড়িয়ে যাবার কোনো সুযোগ নেই।