গত কিছুদিন ধরে নর্থ সাউথ কিছুটা যেন ঝিমিয়ে পড়েছিল। ক'দিন আগের অপ্রীতিকর ঘটনাটি কাটিয়ে ওঠার জন্য উত্সবমুখর কিছু একটার দরকারও ছিল। আমার ধারণা ছিল, আমাদের স্বনামধন্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের বার্ষিক সাংস্কৃতিক উত্সব “এইস” দিয়েই আমরা আবার প্রাণ ফিরে পাব। কিন্তু সবার মুখে যা শুনলাম, এবার নাকি এইস একদমই জমেনি
সিনে এ্যাণ্ড ড্রামা ক্লাব নামে পরিচিত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার ক্লাবটির নামডাক খুব বেশি না। তবে যখনি সিডিসি কোন নাটক মঞ্চস্থ করেছে, সেটি ভাল না হয়ে পারেইনি! আর এবারও তার নড়চড় হবে কেন? এইতো গতকাল হেনরিক ইবসেনের “লীগ অফ ইয়ুথ” নাটকটির কথাই যদি ধরি, তবে তা এক কথায় অসাধারণ।
নাটকটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চেই হয়েছে। সবার জন্য বিনামূল্যে উন্মুক্ত থাকায় সময় মতই আমি গুটিগুটি পায়ে এসে হাজির হই সন্ধ্যা ৬ টায় (ডিজিটাল সময়
তবে ভাল লাগার তখনো অনেক বাকি! একটু পরই নাটকের নেতা (কতিপয় নেতার অন্যতম) লতিফ যখন মঞ্চে প্রবেশ করলেন, তখন তা মোটেই গতানুগতিক হল না। মঞ্চের ডান কিংবা বাম দিক দিয়ে না ঢুকে তিনি ঢুকলেন গ্যালারির পিছন দিয়ে, দর্শকদের মধ্য দিয়ে তার সাকরেদদের নিয়ে ধেই ধেই করে এগিয়ে চললেন। শুধু কি তাই, পাকা নেতাদের মত আমাদের দিকে হাত নাড়তে নাড়তে আর হ্যাণ্ডশেক করতে করতে চলতে থাকলেন লতিফ। নেতার মহান গতিপথ থেকে দু'তিন কলাম ভিতরে বসেছিলাম আমি, আর কি দারুণ ব্যাপার, তিনি কি না ঢুকে পড়লেন আমার সারিতে! তার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ধন্য হলাম আমিও
তবে শুধু মঞ্চের বাইরেই নয়, মঞ্চের ভিতরেও জমেছে দারুণ। অভিনয় দেখে সত্যি ভাষায় তাজ্জব বনে গিয়েছি আমি। আর আরেক মজার ঘটনা হল, আমার বন্ধু মাহদীকেও দেখি অভিনয় করছে। আর মাহদীর অভিনয় তো ছিল সবার মধ্যে সেরা। ঠিক “রাঢ়াং” নাটকে চঞ্চল চৌধুরী যে ভাবে মাতিয়ে রাখেন, এখানে সেই একই কাজটিই করেছে “দানিউল হাজারী” ওরফে মাহদী। আর বাকিরাও করেছে বেশ, তার মধ্যে আবার এজাজ নামের একজন অভিনেতাও আছে!
নাটকের পুরোটা সময় গ্যালারি ছিল ঠাসা। একান্ত জরুরী কাজ থাকায় খুব আফসোস করতে করতে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তাদের জায়গা ভরে যাচ্ছিল নতুন দর্শকদের দিয়ে। নাটক যখন শেষ হল, তখন আর বলতে হল না, মুহুর্মুহু করতালি যাকে বলে তাই শোনা গেল সবার কাছ থেকে। নাটকটির সার্বিক নির্দেশনায় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শান্তনু। শুনলাম, নাটকটি নাকি এরপর এক্সপেরিমেণ্টাল সিনেমা হলেও হবে, তখন বাকি সবাইও দেখতে পারবে।
নাটক শুরুর আগে যখন গ্যালারিতে এসে বসি, তখন মন একটু একটু উদাস উদাস লাগছিল। আমাকে এখানে একা ফেলে প্রেয়সীরা বসেছিল সব সামনে

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


