কিছু ব্লগার এবং ফেবু ইউজার আছে যারা ধর্মকে কটাক্ষ করে নিজ নিজ মত প্রকাশ করে, এদের সহজেই চেনা যায়; যদিও বেনামে থাকে তবুও চিনতে ভুল হয় না যে এরা নাস্তিক। এদের বিরুদ্ধে আমরা একাট্টা হয়েছি, অনেকেই এদের মৃত্যু দণ্ডও চেয়েছে।
কিন্তু যারা ধর্মীয় লেবাস পরে ধর্মকে অবমাননা করছে তাদের জন্য আমরা কি শাস্তি ভাবছি, কিংবা আমরা কি খতিয়ে দেখেছি তারা কিভাবে তা করছে। আমি এর আগেও বলেছি "আমি নাস্তিক কে ভয় পাইনা, সে আমার ঈমান নষ্ট করতে পারবেনা। কিন্তু ধর্মের লেবাসধারী যে আমার ধর্ম নিয়ে খেলছে সেই আমার ঈমানের জন্য বিপদজনক"
জাময়েতে ইসলামির জন্ম কেন হয়েছে? এই ব্যাপারে জামায়েত দলটির প্রতিষ্ঠাতা জনাব মওদুদি কি বলেনঃ
“সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার বাহিরে নন। তাদের দোষ বর্ণনা করা যায়। সাহাবাদের সম্মান করার জন্য যদি ইহা জরুরী মনে করা হয় যে, কোনভাবেই তাদের দোষ বর্ণনা করা যাবে না তবে আমার (মওদুদী) দৃষ্টিতে ইহা সম্মান নয় বরং মূর্তি পূজা। যার মূলোৎপাটন এর লক্ষ্যেই জামাতে ইসলামীর জন্ম”। (তরজুমানুল কুরআন ৩৫শ’ সংখ্যা, পৃষ্ঠা ৩২৭)
সাহাবা কেরামদের বিরুদ্ধে এমন অনেক ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য মওদুদি মতবাদের মধ্যে পাওয়া যাবে। এটি একটি নমুনা। আরও আছে...
রসুল (সঃ) এর হাদিস সম্পর্কে জামায়েত দলের প্রতিষ্ঠাতা কি বলেন " “হাদীস কিছু লোক থেকে কিছু লোক পর্যন্ত অর্থাৎ মানুষের মুখে মুখে বর্ণিত হয়ে আসছে। এসবকে বড়জোর সঠিক বলে ধারণা করা যেতে পারে কিন্তু দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করার কোন অবকাশ নেই। আর একথা স্পষ্ট যে, আল্লাহর দীনের যে সকল বিষয় এতো গুরুত্বপূর্ণ যে, এগুলোর দ্বারা ঈমান ও কাফেরের মাঝে পার্থক্য নির্ণীত হয় সেগুলো গুটিকয়েক লোকের বর্ণনার উপর নির্ভর করে মানুষকে বিপদগ্রস্ত করা আল্লাহ তায়ালা কখনো পছন্দ করতে পারেন না।” (রাসায়েল ও মাসায়েল, ৬৭ পৃষ্ঠা)
“হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদত, আখলাককে সুন্নত বলা এবং তা অনুসরণে জোর দেয়া আমার (মউদুদি) মতে সাংঘাতিক ধরনের বিদয়াত ও মারাত্মক ধর্ম বিকৃতি। (রাছায়েল মাছায়েল, ২৪৮ পৃষ্ঠা)
অথচ কোরআন (সূরা আহযাব, আয়াতঃ ২১) এবং হাদিস (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৫৪৪) থেকে আমরা পাই ; হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদত,আখলাক ও স্বভাব-চরিত্র আমাদের অনুকরণের জন্য উত্তম নমুনা বা সুন্নত। মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-তোমাদের জন্য নবীজীর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ।
স্বয়ং রসুল (সঃ) সম্পর্কে তার মন্তব্য ঃ
“মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানবিক দূর্বলতা থেকে মুক্ত ছিলেন না। অর্থাৎ তিনি মানবিক দূর্বলতার বশীভূত হয়ে গুনাহ করেছিলেন।”
(তরজমানুল কোরআন ৮৫ তম সংখ্যা, ২৩০পৃ. ও তরজমানুস্ সুন্নাহ, ৩য় খণ্ড, ৩০৫ পৃষ্ঠা)
“মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে মনগড়া কথা বলেছেন এবং নিজের কথায় নিজেই সন্দেহ পোষণ করেছেন।”
(তরজমানুল কোরআন, রবিউল আউয়াল সংখ্যা, ১৩৬৫ হিজরী)
হযরত মুহাম্মদ (সা.) রিসালাতের দায়িত্ব পালনে ত্রুটি করেছেন, তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
(তাফহীমুল কুরআন, সুরায়ে নসর এর তাফসীর)
আল্লাহ্ স্বয়ং রাসু (সঃ) এর হেফাজত করেছেন, রাসুল পাপ মুক্ত এবং পবিত্র। বিদায় হজের ভাষণের পর উপস্তিত সবাই সাক্ষ্য দিয়েছেন হুজুর পাক (সঃ) তার দায়িত্ব সম্পূর্ণ ভাবে পালন করেছেন।
এত গেলো সাহাবা কেরাম এবং রাসুল (সঃ) সম্পর্কে, পবিত্র কোরআন সম্পর্কে জামায়েতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতার বক্তব্য, সব কিছু ছারিয়ে আরও ঔদ্ধত্বপূর্ণ ঃ
"কোরআন করিম হেদায়েতের জন্য যথেষ্ট, কিন্তু নাজাত বা মুক্তির জন্য নয়।” (তাফহিমাত, ১ম খণ্ড, ৩১২ পৃষ্ঠা)
(নাউজুবিল্লাহ)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ কি বলেছেন "আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি যেন আপনি (নবী) মানবজাতিকে অন্ধকারের অতল গহবর থেকে উদ্ধার করে আলোর পথ দেখাতে পারেন।" (সূরা ইবরাহীম, আয়াতঃ ১)
মুফাসসিরীনে কেরামের ব্যাখ্যানুযায়ী আলোর পথই হচ্ছে মুক্তির পথ।
তাহলে কে সত্যবাদী? মহান মালিক আল্লাহ্ রাব্বুল আল আমিন নাকি মাওদূদী সাহেব? কোনটি সত্য আল কোরআন না মউদুদি মতবাদ? (নাউজুবিল্লাহ)
এরুপ আরও অনেক অনেক আছে। জামায়েতের প্রতিষ্ঠাতা মউদুদির সকল প্রকার বই বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে কিন্তু এই সমস্ত বই আপনি এখনও পাবেন জামাতীদের হাতে হাতে। তারা যে এই মউদুদি মতবাদে বিশ্বাসী। যারা বিশ্বাস করে আপনি মুসলমান নন, আপনি মুরতাদ কারণ আপনি জামাএত-শিবির করেন না। আর তাদের শেষ কথা ক্ষমতায় গেলে তারা সকল মুরতাদ কে হত্যা করবে।
এরাই ১৯৭১ সালে ধর্মের নাম ব্যবহার করে ফতোয়া দিয়েছিল যে " যুদ্ধ ক্ষেত্রে নারী নির্যাতন করা জায়েজ"
একবার ভেবে দেখুন, ইসলাম ধর্ম রক্ষার নামে আপনারা যারা এদের রক্ষা করতে চাইছেন, আপনি আসলে কি বা কাকে রক্ষা করতে চাইছেন? কেন এই সব লেবাসধারীর পিছনে দাড়িয়ে এদের শক্তি যোগাবেন? এদের সমর্থন করে আপনি নিজেও কি এদের মতই হয়ে পরছেন না?
নাস্তিকরা উড়ন্ত কীট, এদের সহজেই রোধ করা যাবে, নিজের ঘরে লুকিয়ে থাকা ঘুন পোকা রোধ না করলে সব হারাবেন। ঈমান,পতাকা সব।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের মওদুদী ফিতনা থেকে আমাদের দেশে সাধারণ মুসলমানদের হিফাযত করুন।
মওদূদী ও তাঁর অনুসারীদের (জামায়াত) সম্পর্কে উপমহাদেশের প্রশিদ্ধ আলেমগনের মতামত
জামায়াতী ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর ভ্রান্ত মতবাদ
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৪