একসময় আমাদের বোনেরা সন্ধ্যার পর ঘরের বাইরে থাকলে আমরা উৎকন্ঠায় থাকতাম। আমাদের মায়েরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতেন। এই দেশে মেয়েদের নিরাপত্তার যে বড় অভাব। ধর্ষনের সেঞ্চুরিয়ান দের কথা আমাদের মায়েরা ভুলে যাননি।
কিন্তু এখন? এই ডিজিটাল যুগে?
এখন আমরা, ছেলেরা, সন্ধ্যার পর বাইরে গেলে আমাদের মায়েরা দুশ্চিন্তা করেন। সুস্থভাবে বাসায় ফিরলে তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। তারা নিশ্চিন্ত হন। কারন আর কিছুই না, দেশে যে ডাকাত বেড়ে গেছে।আমাদের পুলিশ বাহীনি হঠাত করেই খুব দেশপ্রেমিক হয়ে উঠেছেন।
আমরাও অনেক দেশপ্রেমিক হয়ে উঠছি। কার ছেলে কিংবা ভাইকে মারে ফেলছি তা দেখারও প্রয়োজন বোধ করছি না।
আমাদের বাবারা, বাজারে গিয়ে নিয়মিত বানিজ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করছেন। আমরা দেশপ্রেমিক হিশেবে কম খাচ্ছি। বাধ্য হচ্ছি। নিম্মবিত্তরা আরো বেশী দেশপ্রেমিক, তারা কি খাচ্ছে তা নিজেরাও জানেন না।
আমাদের বাবারা যখন ব্যাগের তলানীতে বাজার নিয়ে বাসায় ফিরেন,স্বাভাবিকভাবেই তাদের মেজাজ খিটমিট করে। তখন আর আমাদের বোনেরা তাদের হিন্দী শেখার কোর্স সম্পুর্ন করতে পারে না। তাদের মেজাজও খারাপ হয়।
তখন,বাবারা টিভিতে দেশের উত্তোরোত্তর উন্নতির কথা শুনে খুশি হন এবং তারা বুঝতে পারেন সব দোষ ব্যাবসায়ীদের।
আমাদের ভাইয়েরা যখন শেয়ার বাজারে সর্বশান্ত হয়ে ঘরে ফিরেন, আমাদের বাবারা তখন আবার দুশ্চিন্তায় পড়েন। সকালবেলার পত্রিকায় বুদ্ধিজীবিদের লেখা পড়ে তারা আবার নিশ্চিন্ত হন যে, সরকার খুবই দেশপ্রেমিক। পার্শবর্তী রাষ্ট্র আমাদের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছে।
অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে যানবাহন সংকটে অথবা অসহনীয় যানজটে তারা রুষ্ট হন।কিন্তু, নির্মিতব্য ফ্লাইওভার দেখে তারা সবকিছু ভুলে যান। বাসায় এসে যখন লোডশেডিং এর বিড়ম্বনায় পড়েন,তাদের মেজাজ আবার খারাপ হয়।
বাবারা বলে উঠেন-“বাল ছিরার লাইগা স্বাধীনতা আঞ্ছিলাম??”
স্বাধীনতা প্রাপ্তির এই তিক্ত অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে তারা আমাদের বোনদের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার কথা বলেন।
আমাদের বোনেরা চারিদিকের এই অসহ্য অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বিস্বস্ত প্রেমিক এর বুকে মাথা গুজেন। আমরা উৎসাহ নিয়ে সেই ভিডিও ডাউনলোড করি। জুম করে,পস করে চুলচেরা বিশ্লেষন করি।
ছেলেটির যায়গায় নিজেকে কল্পনা করি, কিন্তু মেয়েটির যায়গায় নিজের বোনকে কল্পনা করতে ভুলে যাই। আমরা কাম চরিতার্থ না করতে পেরে আফসোস করি। আবার আমরাই ব্লগে এগুলর বিরুদ্ধে গলা ফাটাই।
আমাদের শিক্ষকরা ছাত্রী ধর্ষন করেন। তারাই আবার প্রশাসনে গিয়ে পুরো জাতিকে ধর্ষন করেন।
আমরা হতাশ হয়ে যাই। প্রতিবাদে ফুসে উঠি। কিন্তু আমাদের বাবাদের ফ্লাইওভার দেখার মত-আমরা যখন শেয়ারবাজারে লাভ দেখি-তখন সব কিছু ভুলে যাই।
এই দেশের সর্বাঙ্গে বিষফোড়া। পুজ জমে বিষাক্ত অবস্থা।আমরা দেখেও না দেখার ভান করছি।হয়তবা চিতকার করছি,বলছি এর চিকিতসা দরকার-কিন্তু কেউ কি এগিয়ে আসছি??
আমরা জানি পরিবর্তন দরকার।
আমরা বুঝি পরিবর্তন এখনি দরকার।
আমরা জানি কিভাবে তা করতে হবে।
কিন্তু দিনের পর দিন সবকিছু এভাবেই চলে।
আমরা আমাদের পুর্ববর্তী প্রজন্মকে ক্ষমা করিনা।
কিন্তু আমারা কি ভাবি,আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে কিনা?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




