somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনীতিবিদদেরকেই এর দায় নিতে হবে

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৮:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একজন আবরার তৈরি করতে একজন মা-বাবা তাদের সারাটা জীবনই ব্যয় করে ফেলেন। সেই একজন আবরার দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ অবধি পৌঁছে যখন কোনরূপ অন্যায় করা ছাড়াই কিছু দুষ্ট লোকের নির্মম প্রহারে অপমৃত্যুর স্বীকার হন তখন তাঁর মা-বাবার সকল অভিশাপ গিয়ে রাজনীতিবিদদের উপরেই বর্তায়। কারন কেবল মাত্র ছাত্র রাজনীতির নামে নিতি হীন রাজনীতির বলী হয়েই আবরারকে অমন অভিশপ্ত মৃত্যু মেনে নিতে হয়েছে।

আবরারকে হত্যার দায়ে যে বিশ জনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হল এবং যে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন জেল দেয়া হল। সেই পঁচিশটি ছেলেকেও তাদের মা-বাবা একই ভাবে তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন। তাঁরা নিশ্চয়ই নিজেদের জীবনপাত করে এমন নৃশংস হত্যাকারী তৈরি করেন নি। এদের একজনের অভিভাবক বলছিলেন তাদের সন্তান মুরগির রক্ত দেখেও ভয়ে আঁতকে উঠত। সেটাই তো স্বাভাবিক। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পূর্বে এই ছেলে গুলি তো এমন ছিল না। তাঁরা সুবোধ এবং সুশীল ছিল। ছিল অধ্যবসায়ী। নয়ত তাঁরা কিছুতেই এখানে ভর্তির সুযোগ পেত না।
প্রশ্ন হল, এই মেধাবী সুবোধ সন্তানেরা কেন এমন হত্যাকাণ্ড ঘটাল? কারাই বা তাদের রাতারাতি হত্যাকারী হিসেবে তৈরি করে ফেলল? যাদের সামনে ছিল একটি ঝলমলে সুন্দর ভবিষ্যতের হাতছানি। তাঁরা কিসের প্রলোভনে, কাদের খুশি করতে এমন জঘন্য অপরাধে লিপ্ত হল? কারা তাদের অভয় দেন? কোন শক্তি তাদের অসুর করে তোলে? এই প্রশ্ন গুলির উত্তর তো এদের মা-বাবাকে দিতে হবে। সেটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিক কিংবা রাষ্ট্র। উত্তর পাওয়াটা ভীষণ জরুরী। এই প্রশ্নগুলির উত্তর যদি না মেলে তাহলে বার বার আমাদের সন্তানদের আবরারের ভাগ্য বরন করে নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানার্জন করতে এসে অসংখ্য সন্তান নষ্ট হয়ে যাবে। সে দায় কে নেবে? এ দায় তাদেরই নিতে হবে যারা ছাত্র রাজনীতি না থাকলে দেশ রসাতলে যাবে বলে সুর তোলেন। যারা বার বার ছাত্র রাজনীতির অতীত ইতিহাস টেনে এনে একে মহিমাময় করে তোলার চেষ্টায় রত থাকেন। আজ যখন অভিযুক্ত পঁচিশটি ছেলের মা-বাবা বলেন আমাদের ছেলেগুলি রাজনীতির সাথে জড়িয়ে না পড়লে ওরা এমন কান্ড ঘটাত না তখন কি আমাদের রাজনিতিবিদগন লজ্জিত হন? একটিবারের জন্যও ভাবেন ঐ জায়গায় আপনি থাকলে আপনি করতেন। মহান সৃষ্টিকর্তা ছাড় দেন ছেড়ে দেন না। যার যতটুকু দায় তাকে তাঁর ততটুকু ভাড় বইতেই হবে।

ছাত্র রাজনীতি একটি পরাধীন দেশে যে ভূমিকা পালন করে সেই ভূমিকা কখনোই একটি স্বাধীন দেশে পালন করে না। একটি পরাধীন দেশে ছাত্র রাজনীতির যে প্রয়োজনীয়তা সেই প্রয়োজনীয়তা কখনোই একটি স্বাধীন দেশের থাকে না। এটা আমাদের নেতারাও ঠিকই বুঝতে পারেন কিন্তু কেবলমাত্র তাদের বিরুদ্ধে যায় এই ভয়েই তাঁরা ছাত্র রাজনীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেন। আমাদের দেশে ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন কেবল মুল রাজনৈতিক দলগুলোর লাঠিয়াল বাহিনীর প্রয়োজনীয়তায়। আর সে প্রয়োজনেই মুল দলগুলো ছাত্রদের অন্যায় কাজে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। কিছু ছাত্র সেই সুযোগটাই গ্রহণ করে লেখাপড়া বাদ দিয়ে নেতাদের পদলেহনে ব্যস্ত হয়ে পরে। অল্প বয়সে অঢেল বিত্ত বৈভবের মোহে তারা অন্ধ হয়ে যায়। কে কার থেকে কতটা শক্তিশালী কে কতটা নেতাদের তুষ্ট করতে পারে এই প্রতিযোগিতায় নেমে পরে। আর সেই অসুস্থ প্রতিযোগিতার স্বীকার হন সৎ মেধাবী শান্ত প্রকৃতির ছাত্ররা। আর শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থা। এরপরেও যদি ছাত্র রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা করেন তাহলে এই যে সন্তানগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাঁর দায়ও নিতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৮:১৭
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×