somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষা মন্ত্রণালয় কি 'লিমিটেড' কোম্পানিতে রূপান্তরিত হচ্ছে?

১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের ওপর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্যসংযোজন কর বা ভ্যাট আরোপ করে শিক্ষা যে আসলেই পণ্য হয়ে উঠেছে তার বাস্তবিক প্রমাণ দিয়েছেন মাননীয় মন্ত্রী। বাস ট্রাক লঞ্চের মতন এদেশে ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিক সমিতি’ নামে একটি সংগঠনও আছে! প্রশ্ন হলো আসলেই যদি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হয় তবে মালিকানার এই মহাযজ্ঞ কেন?

যাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে শিক্ষার এই মহানব্রত তারা কারা? কি তাদের পরিচয়? সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে যে বিষয়গুলো সাধারণের নজরে আসে তা রাজনৈতিক পরিচয়ে গণমাধ্যম লাইসেন্স এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলের অনুমোদন এখন পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবসায় আমরা কি একজনও শিক্ষা অনুরাগীকে দেখেছি? অনুমোদন পাওয়ার পর আমরা গণমাধ্যমের সাহায্যে জানতে পারি কোন কোন লগ্নিকারী একবার শিক্ষাখাতে লগ্নি করতে যাচ্ছে।

গুণগত উচ্চশিক্ষার থেকে কর্পোরেট লগ্নিকারির আসল উদ্দেশ্য মুনাফা বছর শেষে লাভ কিংবা লোকসানের খতিয়ান। একটু হিসেব কষলেই দেখবেন; একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গড়তে দেশের কর্পোরেট জায়ান্টরা লগ্নি করছে এমন নজিরবিহীন নজির আমরা আজও দেখিনি। যদি নাই থাকে তবে অলাভজনক ব্যবসা করতে তারা কেন আগ্রহ দেখাচ্ছেন? একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ার নিয়ে কর্তা মহাদয়ের তোরজোড় কেন? সাথে আমরা একটা উদাহরণও দিতে পারি; দেশের নামকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ট্রাস্টি সদস্য নিয়ে দেশের প্রভাবশালী গণমাধ্যম লিখেছিলো ‘নজিরবিহীন দুর্নীতি, লুটপাট, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন সিরিজ অপকর্মের কারণে ডুবতে বসেছে’ একটি বিশ্ববিদ্যালয়।

একটু চোখ খুললেই দেখা যাবে কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পরে ছোট করে কোন গ্রুপ অব কোম্পানির নাম লেখা। কোথাও কোন শিক্ষানুরাগী পাওয় যাবেনা যে শুধুমাত্র শিক্ষাবিস্তারের জন্যই একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন।সেই ১৯৯২ থেকে এখন পর্যন্ত ব্যাবসায়ী এবং রাজনীতিবিদের দখলেই রয়ে গেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাণিজ্য।

ভ্যাট বিরোধী আন্দোলনে যারা আছেন তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে শিক্ষার্থীরা ব্যানার বানিয়েছে। চাঁদা তুলে ওরা ফেস্টুন করেছে। ওরা চেষ্টা করছে ওদের কথা আমাদের কানে পৌঁছানোর।

বিভিন্ন স্তরে ভাগ হওয়া উচ্চশিক্ষার গুণগত মানের প্রভাব পড়েছে চাকুরি দেওয়া প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও। কোন কোন প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট কিছু বিশ্ববিদ্যাল্যের ছাড়া অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবেদন পর্যন্ত গ্রহণ করেন না। পাস করেই যে একটু নিশ্চিত ভবিষত তৈরি হবে বিষয়টি এমন না তার সাথে জুড়ে দেওয়া নানা শর্ত যা অন্য দেশে বিরল ও নজিরহীন।

ছোট বেলায় পড়েছিলাম ‘ভবিষতের ভাবনা ভাবা জ্ঞানীর কাজ’। সেই ভাবনা পাল তুলেছে রাষ্ট্রের সব মহলে। প্রশ্ন তবে কি দিনে দিনে প্লাল্টে যাচ্ছে কি আমাদের ভবিষত?

মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, ‘তারা ৫০ হাজার টাকা ৩০ হাজার টাকা বেতন দিতে পারে। মাত্র সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট কেনো দেবে না? তাদের আন্দোলনে আমার কোনোভাবেই সমর্থন নেই’।

এদেশে উচ্চশিক্ষার এতটাকা কেন বেতন দিতে হয় সেই প্রশ্নটি আজও মন্ত্রী মহাদয়কে কেউ করেনি। গড় মাথাপিছু আয়ের হিসেবে একজন মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত কি ভাবে এই শিক্ষাখরচ বহন করেন তাও কেউ খতিয়ে দেখেনি।

জানতে ইচ্ছা হয় এই ভ্যাট নিয়ে রাষ্ট্র কোন খাতে ভর্তুকি দিতে চায়? কাদের জন্য এই ভর্তুকি? আগামীর জন্য? আমাদের আগামী তো ক্লাসরুম থেকে বেড়িয়ে রাস্তায় চলে এসেছে; পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করছে। কোন আগামীর জন্য একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চলেছে সরকার যেখানে এই তরুণরা এতটা উপেক্ষিত?

এ কেমন রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি? কিছু শিক্ষার্থী যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর এগিয়ে যায় তখন মাঝপথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় পুলিশ। অথচ আমরা আশায় ছিলাম প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের কেউ না কেউ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একরাশ শুভেচ্ছাসহ ওদের কাছে আসবে ওদের কথা শুনবে।

যে স্বপ্ন বুকে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি আগামীর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন এই তরুণরাই সেই স্বপ্নের হাতিয়ার। ওদের সাথে এমন আচরণ কেন? ওরা আক্রান্ত কেন? ওরা রাজপথে কেন? বিগত বছরগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতার মাশুল গুণতে হয়েছে সব শিক্ষার্থীকে তারপর এখন চলছে আন্দোলন শিক্ষার এই অস্থিরতা তবে কি একটি চলমান প্রক্রিয়ায় রুপ নেবে?

সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের কাছে আর্জি জানাই দায় করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে শিক্ষা মন্ত্রণালয় লিমিডেটে রূপান্তরিত করার পাঁয়তারা বন্ধ করে শিক্ষার উপর আরোপিত ভ্যাট বাতিল করে। শিক্ষার্থীদের আবার ক্লাস রুমে ফিরে যেতে সাহায্য করুন।
- See more at: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৩
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×