somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিলভার জুবেলি - বড় গলপ

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গায়ের চাদরটা আরেকটু জড়িয়ে নিল, মিতা। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি এবার শহর কলকাতায়, জাঁকিয়ে বসেছে শীত, এ যেন সেই ফেলা আসা ছোটবেলার শীতকাল। পৌষের কামড় হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে শহরবাসী।
অনেকক্ষণ বাসের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে, ক্লান্ত মিতা অনাবশ্যক মোবাইল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে। ফেসবুকে বন্ধুরা দার্জিলিং এর ছবি পোষ্ট করেছে, অনেক বছর পরে আবার সাদা চাদরে ঢাকা শৈলমালা। প্রায় ১০বছর আগে, শীতে এভাবেই বরফ পড়েছিল দার্জিলিং এ। যে বছর হানিমুনের জন্য সে ও অনন্য দার্জিলিং এ গেছিল। কয়েকটা মায়াবী দিন এখন বিস্মৃতির জালে ঢেকে গেছে, নাহ হারিয়ে যায়নি। স্মৃতির উপর আমাদের কোন শাসন খাটে না। সে যে কখন কোন দৃশ্য এনে আমাদের সামনে হাজির করে, সুখের, দুখের, ওঠাপড়ার, জীবনযুদ্ধর - আমরা নীরব দর্শক তখন। ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে, অতীত থেকে বর্তমানে ফেরে সে। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ক্লান্তিতে, ঘাড় নুয়ে পড়ছে, যদি কোথাও বসা যেত। বয়েস হচ্ছে - মনে মনে ভাবে মিতা, আগের সেই রক্তের উত্তাপ শরীরে টের পায় না। ক্লান্তি, অবসাদ জর্জর দিনগুলি অফিসের বড় ঘড়ির কাঁটার দিকেই যেন তাকিয়ে থাকে, কখন পাঁচটা বাজবে?


আজ ব্যাগ গুছিয়ে রেডি হচ্ছিল মিতা, পৌনে পাঁচটা তখন, রায় সাহেব ফাইল হাতে হাজির। বড় সাহেবের জরুরী তলব। যখন অফিসের গেট পার করে রাস্তায় পা রাখলো মিতা, ঘড়ির কাঁটা আটটা ছুঁই ছুঁই করছে। অটো স্ট্যান্ড থেকে বাস স্ট্যান্ডে চেনা মুখেরা নেই কেউ। তারা এতক্ষণ বাড়িতে বসে চা খাচ্ছে হয়ত।
আরেকবার এক জোরালো উত্তুরে হাওয়ায়, হাঁড় কেঁপে ওঠে মিতার, দূরে একটা বাসের আলো দেখা যেতেই শীতঘুমে থাকা সরিসৃপের মত শান্ত লাইনটা সজাগ হয়ে ওঠে। বাসের জানলার ধারের সীট শীতকালে সহজেই পাওয়া যায়, গরমকালে তা কোহিনুরের থেকেও দুর্লভ। বন্ধ কাঁচের জানালায় মাথা রেখে চোখ বোজে সে। কখন হালকা ঘুমে তলিয়ে যায় মিতা।
মিঠে রোদে কার্ডিগান গায়ে মিতা ও শাশ্বতী ব্যাডমিন্টন খেলছে, শাশ্বতীই এগিয়ে,
এইবারে ওকে হারাতেই হবে। পিছনে বাবার গলা, মিতু তোরা কমলালেবুটা নিয়ে যা, খুব মিষ্টি। কুয়াশা ফুঁড়ে মা এগিয়ে আসছে হাতে মাংকি ক্যাপ, এটা পড়তে ভারী আপত্তি মিতার, মাও নাছোড়বান্দা - টানাটানিতে মাথাটা জোরে ঠুকে যায়, বাসের জানলায়। বাস ব্রেক কষে মিতাকে বাস্তবে নিয়ে আসে এক পলকে। ক্ষুণ্ণ হয় মিতা। ভারী মিঠে এক স্বপ্ন নেমেছিল চোখ জুড়ে, শীতের নরম রোদে, শান্তিনিকেতনের খোয়াইএ পিকনিক তাদের পারিবারিক রুটিন ছিল। বাবা ওখানে বিডিও অফিসার ছিলেন, তার ছোটবেলার অনেকটা সময় কেটেছে, শান্তিনিকেতনে। শাশ্বতী ছিল ছোটবেলার প্রিয় বান্ধবী। আজ অনেকেই আর নেই, আর অনেকে থেকেও নেই।


কতক্ষণ ঘুমিয়েছে ঠাহর হয় না মিতার, বাসের ঝাপসা কাঁচে চোখ দিয়ে দেখে কতদূর এল? আর পাঁচ মিনিট। ভালো সময় ঘুম ভেঙেছে।
বাস থেকে নেমে তার বাড়ি ১০ মিনটের হাঁটা পথ। খেয়াল হল, হরির মা নিশ্চয় চলে গেছে, মানে আজ রান্নার ঝক্কি তারই ঘাড়ে, নাহ ঝক্কি আর কি? দুধ পাঁউরুটিতেই কাজ চালাবে আজ। একার জন্য কে আবার রান্না করে?
ঘড়িতে দশটা, টিভিটা চালিয়ে সোফায় একটা বইএর পাতা উল্টায় মিতা, আনমনে। বাসের স্বপ্নটা এখনো চোখে লেগে আছে, যারা তার জীবনের সোনালি দিনের সাথী, তারা আজ শুধু স্বপ্নে দেখা দিয়ে যায়। সোনালি দিনের সাথে সাথে
তারাও মিলিয়ে গেছে জীবন থেকে। একা মিতা হেঁটেই চলেছে, না থেমে, পথের শেষে আবার সবার সাথে কি দেখা হবে না? সেই তাগিদেই যে হেঁটে চলেছে মিতা, ফাঁকি দিয়ে, শর্টকাটে এই পথ অতিক্রম করার উপায় নেই, তাতে খেলার যে অলিখিত শর্ত আছে, তা লঙঘিত হয়। পুরো যাত্রাই মাটি হয়। তাই মিতা হাঁটে, ক্লান্ত পায়ে, শ্রান্ত মনটার ভার বহন করে হাঁটে, বয়েসের ভারকে মেনে নিতে নিতে হাঁটে, কাল থেকে আজ, আজ থেকে কাল আর পরশু। অন্যমনস্ক ভাবে অভ্যস্ত হাত চাবি ঘুরিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা খোলে রোজ। বাড়ি পৌঁছায় মিতা, আরো একদিন, প্রতিদিন।
আরো দুটো ওষুধ খাওয়া বাকি, মাঝবয়েসের রোগ, প্রেশার, থাইরয়েড, কোলেষ্টরেল। নাহ সত্যি বয়েস হল। যতই ম্যাগাজিনে লিখুক 'Age is a number' কিন্তু সত্যিই কি তাই! শেষ দুটো ওষুধ একসাথে গিলে নেয় মিতা। আলস্য ঝেড়ে উঠে পড়ে। ঘরের সব দরজা, জানালার ছিটিকিনি দুবার করে পরীক্ষা করে, টিভি বন্ধ করে, আলো নিভিয়ে শোবার ঘরে ছিটকিনি দিয়ে, মশারির ভিতরে ঢোকে। বালিশে মাথা দিয়ে আরামসূচক শব্দ করে, হাতের বইটাতে আবার চোখ রাখে, বেডসাইড টেবিল থেকে হাত বাড়িয়ে পেজ মার্কারটা নিয়ে বইএ গুঁজে দেয়। এবার শুধু মোবাইলটা সাইলেন্ট করে বিছানার পাশের আলো নেভানোর অপেক্ষা, কাল আরেকটা এক্কেবারে একরকম দিনের মোকাবিলার প্রস্তুতিতে ঘুম একান্তই দরকার।


হাত বাড়িয়ে বেড সাইড ল্যাম্পের সুইচটা নিভানোর আগেই অপ্রত্যাশিত ভাবে, মোবাইল বেজে ওঠে হঠাৎ। এত রাতে কে ফোন করছে, ১১ টা প্রায় বাজে! বিস্মিত মিতা ফোনের ডায়ালে চোখ রাখে। অচেনা নাম্বার। সামান্য ইতস্তত করে সে, এই সমাজে একা মহিলা হিসেবে মাথা উঁচু করে বাঁচা কত কঠিন, সেটা শুধু মিতার মত ভুক্তভোগীরাই বোঝে। তবে তার সতর্ক মন কৌতূহলের কাছে পরাস্ত হয়। রিসিভ বোতাম টিপে ফোন ধরে মিতা,
- হ্যালো মিতা সেন আছেন? ওপাশ থেকে এক রাশভারী পুরুষ কন্ঠ, অচেনা। বিস্ময় বাড়তে থাকে
- বলছি, সংক্ষিপ্ত জবাব মিতার।
- চিনতে পারছিস? সোজা তুইতোকারি ওপর পার থেকে। ভারি অস্বস্তিকর এই প্রশ্নটি; অধিকাংশ সময় এটা তারাই জিজ্ঞেস করে, যাদের নাম/মুখ সত্যিই মনে নেই। অথচ বোঝাই যাচ্ছে মনে থাকার কথা ছিল। এককথায়, এক অপরাধবোধ, আচ্ছন্ন করে উত্তরদাতাকে, এবারেও তার ব্যতিক্রম হল না। মিতা আমতা আমতা করে সেই চিরন্তন এক্সকিউজ দেয়, নতুন ফোন, নাম্বার সেভ নেই ইত্যাদি।
- ওপার থেকে ভেসে আসা হালকা হাসি বুঝিয়ে দেয়, মিতা ধরা পড়ে গেছে। আরে আমি প্রেসির সমী। এবার চিনতে পারলি? সমী, মানে সৌমেন্দ্র? কত বছর পরে, নাহ চিনতে না পারাই স্বাভাবিক। সেই কলেজ ছাড়ার সময় শেষ দেখা, তারপরে আদি গঙ্গা আদিতম হল, চেনা, পৃথিবী গেল পালটে, জীবনে, চাওয়া পাওয়ার হিসেব শেষ হল। কারো বা অংক মিলল, কারো মিলল না। তা বলে জীবন তো থেমে থাকলো না। আজ সমীর নামে মুহূর্তেই কলেজের কত স্মৃতি মাথায় ভিড় করে আসে মিতার। সমী কি শুধুই সহপাঠী ছিল? মিতা কোনদিন সমীকে বলেনি তার ভালোলাগার কথা, আজ যদি বলে দেয়, সমী কি খুব অবাক হবে? কয়েক মুহূর্তের নীরবতায়, কতকিছু মাথায় ভিড় করে, তার গলায় বিস্ময় চাপা থাকে না,
- সমী তুই, what a pleasant surprise! কেমন আছিস? কোথায় আছিস? ভালো আছিস তো? এক ঝাঁক প্রশ্ন করে ফেলে মিতা।
- সমী হেসে বলে - ধীরে রজনী ধীরে, তুই আর পাল্টালি না মিতা। শুরুতেই জেরা। না রঙ নাম্বার যে নয়, এটা অন্তত বোঝা গেল।
- আর তুই সেই আগের মতই সারপ্রাইজ দিতে ভালোবাসিস দেখছি। এখন কোথায় আছিস এটা তো বল। বাড়ির সব খবর ভালো?
- হ্যাঁ রে চলে যাচ্ছে। ছেলেকে প্রেসি তে ভর্তি করতে কলকাতায় এসেছি, মা, বাবা তো এখানেই। আমি আর অপর্ণা বেংগালুড়ুতে - ওখানেই অফিস, বাড়ি। দু যুগের ইতিহাসের সারসংক্ষেপ শোনায় সমী, শেষে বলে, এবার তোর কথা বল।
- আমার আবার কথা, চলছে রে, চাকরী, বাড়ি আর বাড়ি, চাকরী। একার সংসারে এর বেশি আর কিইবা খবর থাকে বল।
- মাসীমা, মেশোমশাই? জিজ্ঞাসু গলা সমীর
- অনেকদিন হল তারা মনের মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন রে। সাথেই আছেন, অন্য রূপে
- আই এম সো সরি, কনডোলেন্স
- থ্যাংক ইউ
- কর্তা? সমী এক দিনেই সব জেনে নিতে চায়।
- আমি একা থাকি সমী - সিংগল উওম্যান হা হা,কথার সুর হালকা করার চেষ্টা করে মিতা, কে জানে কাজে দেয় কিনা।
- ওপাশে আবার কিছু নীরব মুহূর্ত, সমীকে অপ্রস্তুত করেছে মিতা, মনটা বেশ ফুরফুরে হয়ে ওঠে তার। এবার নিজেই কথা শুরু করে সে, তোর কথা বল সমী। কেমন আছিস তুই, ইচ্ছে করেই 'তুই' এর উপর জোর দেয় মিতা। সমীর পরিবারের সাতকাহন শুনতে তার আগ্রহ নেই।


আমি ভালো আছিরে, খুব ভালো। বোধহয় এতটা ভালো না থাকলেও হত। সমীর গলায় উদাসী সুর। ভালোর দেশটা বড় নিষঙ্গ, তাই পুরনো ডায়েরী উলটে উলটে তোদের রাত বেরাতে জ্বালাচ্ছি - হা হা করে খোলা হাসি ভেসে আসে অপর পাশ থেকে। নিজের সুক্ষ রুঢ়তার জন্য নিজেরই খারাপ লাগে মিতার। স্বাভাবিক গলায় সত্যিকারের আবেগ ঢেলে সে বলে, তবু তো মনে রেখেছিস, ফোন করেছিস, খুব ভালো লাগছে সমী; কোন কারন ছাড়াতো আজকাল আর কেউ ফোন করে না। খুব ভালো লাগছে। কতদিন আছিস কলকাতায়, চল একদিন দেখা করি। অন্যদের সাথে তোর যোগাযোগ আছে? আমার খুব কম। মিতা থামতেই সমী লঘু গলায় বলে, দেখা করার জন্যই তো ফোন করছি ম্যাডাম, আপনি তিন নম্বর। চিত্রা আর তমালকে তোর আগে চেষ্টা করলাম ধরতে, চিত্রা ফোনই ধরলো না। তমাল অবশ্য অনেক গল্প করল, খুব ব্যস্ত আজকাল, ইমপোর্ট - এক্সপোর্টের ব্যবসা, ঘন ঘন ফরেন টুর। ওর দেখা পাওয়া মনে হচ্ছে কঠিন হবে।
মিতা মনে মনে অবাক হয়, হঠাৎ সবাইকে ফোন করছে কেন সমী, গেটটুগেদার আয়োজন করতে চায় নাকি! ঠিক তার মনের কথা পড়ে নিয়ে সমী বলে - ২৫ বছর পুর্তির একটা উৎসব হবে না? মিতা অবাক, ইতস্ততভাবে জিজ্ঞেস করে- তোদের সিলভার জুবেলী? আবার প্রাণবন্ত হাসির প্লাবন ওপাশে - না রে আমাদের সিলভার জুবেলী, তোর, আমার, চিত্রার, তমালের, নমিতার - সবার। বছরটা খেয়াল নেই তো? আমাদের কলেজ থেকে পাশ করে বেরুনোর এটা ২৫ তম বর্ষ। আমাদের সিলভার জুবেলী এন্ড উই মাস্ট সেলিব্রেট।


- ২৫ বছর - স্বগতোক্তি মিতার, সময় কোথা দিয়ে কেটে গেল, এই তো সেদিন, কলেজ স্ট্রিটের জমা জল উপেক্ষা করে তারা কফি হাউসে আড্ডা মেরেছে অনেক রাত পর্যন্ত, শেষ ট্রেনে বাড়ি ফিরে, মা - বাবার কাছে বকুনি খেয়েছে, ২৫ বছর।
হ্যাঁ রে মিতা ২৫ বছর হল, আমরা তো সব এখন মাঝবয়সী সংসারী মানুষ। উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ পেড়িয়ে শান্ত মাঝ দরিয়ায়। এখনো যদি নিজেরা বিছিন্ন দ্বীপ হয়ে থাকি তাহলে আর কোনদিনই কি দেখা হবে! বয়েস তো হচ্ছে মিতা, অমিত কেমন হঠাৎ চলে গেল। যেদিন খবরটা পেলাম সেদিন থেকেই সবাইকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে, আমার এক ছেলেমানুষিই বলতে পারিস।
অমিতকে মনে পড়ল মিতার, সব থেকে পড়ুয়া ছাত্র, বিদেশে পাকাপাকি ভাবে চলে গেছিল কলেজের পরে। গতবছর হঠাৎ ক্যান্সার ধরা পরে খাদ্যনালীর, লাস্ট স্টেজ। মাত্র তিনমাসের মাথায় অমিত অমৃতলোকে পাড়ি দেয়। ওর মা, বাবা, স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে এখন দিল্লীতে থাকে। এই খবরটা অজানা নয় মিতার, কিন্তু সমীর মত তাকে নাড়া দেয়নি। নিজের জীবনে প্রিয়জনদের মহাপ্রস্থান তাকে ভিতর থেকে অসার করেছে অনেকটা, এক এক লাফে বয়স বেড়ে গেছে মিতার। মাথার উপর থেকে ছাতা গুলি সরে গেলে যা হয়।
- কি রে কি হল, নৈশব্দ ভেদ করে সমীর গলা, চুপ করে গেলি যে? পারবি না আসতে?
- পারব রে, পারতেই হবে, সিলভার জুবেলী কি জীবনে বার বার হয়, গোল্ডেন পর্যন্ত কজন থাকবো কে জানে! হালকা বিষাদের সুর মিতার গলায়। জোর করেই সে বিষাদ ঝেড়ে ফেলে মিতা। উৎসাহ নিয়ে বলে, thank you সমী এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। কতদিন পরে আবার হারানো সোনালী দিনের রোদে গা দিয়ে আড্ডা মারব সবাই মিলে। বয়েস হচ্ছে তো কি হল, কিছু জিনিষের কদর বয়েসেই হয়, যেমন বন্ধুত্ব।
সমী হাসল, তারপরে বলল, তাহলে ঐ কথাই রইল মিতা, আমি নেক্সট দুর্গাপুজা টার্গেট করছি, যারা বাইরে থাকে, ঐসময় তারাও অনেকে দেশে আসে, কলকাতার যোগাযোগ কিন্তু তোর দায়িত্ব।
সানন্দে সম্মতি দেয় মিতা। অনেক রাত হল রে, আজ রাখি - বলে সমী, শিগগিরি দেখা হবে।
অনেকদিন পরে, ছকে বাঁধা নিয়মের বাইরে গিয়ে সারা রাত ধরে গল্প করতে ইচ্ছা করে মিতার। কিন্তু আজো নিজের ইচ্ছের কথা বলতে পারে না সে, কোনকালেই পারেনি, এই বয়েসে কি বিদ্রোহী হওয়া যায়? সৌজন্যসহকার বিদায় জানায় সে , হঠাৎ দেখা দেওয়া অতীতকে। সত্যি কি সিলভার জুবেলী মিলন মেলা হবে? হয়ত হবে না, সেই সম্ভাবনাই বেশী। কিন্তু ইচ্ছেটা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে ভারি ভালো লাগে মিতার। লেপের গরম ওমের মত এক আরামদায়ক অনুভূতিকে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে মিতা। ঘুমের অঘোরে তলিয়ে যেতে যেতে মনে মনে বলে, Age is a number মিতা।
কাল আরেকটা সুন্দর দিন অপেক্ষা করছে। অনেকদিন পরে, ঘুম ভাঙার অপেক্ষায়, ঘুমিয়ে পরে মিতা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৩
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×