এবার আমারা গিয়েছিলাম উত্তরবঙ্গের নীলফামারী জেলায়। বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত উত্তরবঙ্গের খেটে খাওয়া মানুষদের যা একটু টিভি বা খবরের কাগজে দেখা যায় তা এই শীত কালেই। আর সেটা কোন সুখবর নয়, তীব্র শীতে মানুষের মৃত্যুর খরব। গত বছরের ডিসেম্বর মাসজুড়েই তীব্র শীতে নীলফামারী জেলায় অন্তত ২০ জন মানুষের মৃত্যুর খরব পাওয়া গেছে।
দেশের সর্বউত্তরের জনপদ হিমালয়ের পাদদেশের জেলা নীলফামারী। বুধবার (১৪/১২/২০১১) নীলফামারীর সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেঃ। তবে এলাকায় যে ভাবে কনকনে শীত দেখা দিয়েছে তাতে অনেকে মনে করছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ বা ৬ ডিগ্রী সেঃ সিঃ নেমে এসেছিলো। শীতের তীব্রতায় কাজে যেতে না পারায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে তাদের দিন কাটাতে হচ্ছে।
প্রতি বছরের মত এবারও গরিব দুখী মানুষের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করেছে ড্রিম মেকারের সদস্যরা। সপ্তাহ জুড়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে পুরনো শীতবস্র সংগ্রহ করা হয়।
ড্রিম মেকার মনসুর
রাজধানীর মহম্মদপুর এলকায় ড্রিম মেকার
ড্রিম মেকার লিমন, মনসুর একং আদিল
দড়ি পদ্ধতিতে কাপড় সংগ্রহ করছে ড্রিম মেকার আলো
গর্ভীত ড্রিম মেকার মনসুর (ডানে)
ড্রিম মেকার পলাশ
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ড্রিম মেকার
ড্রিম মেকার জয়তু এবং সেতু
...........................................................................................
২৩শে ডিসেম্বর ভোর পাঁচটায় নীলফামীতে পৌছে ড্রিম মেকার।
..........................................................................................
কুয়াশা, কনকনে হাড় কাপানো শীত
আমাদের আগমন উপলক্ষে নীলফামারীতে অসংখ্য তোরন এবং বিলবোর্ড। (শেখ হাসিনার জায়গায় ড্রিম মেকার হবে, আমরাই আসল পুরুষ)
গ্রাম বাংলার পথে..
স্থানীয় এক চেয়ারম্যন সাহেবের বাড়িতে
ড্রিম মেকার আদিল এবং তৌহিদ
ঠিকাছে..
ফিট..
সেইরকম..
চেয়ারম্যান বাড়ির আশেপাশে বা স্থানীয় বাজারগুলোতে যে সবাই গরীব তা কিন্তু না। আমাদের বস্তাগুলো দেখে অনেকেই কাপড় নিতে এসেছে কোট জ্যাকেট পড়ে। অনেক কে দেখে মনে হচ্ছিলো সৌদী আরব থেকে তাদের আত্নীয় এসেছে লাগেজভর্তী কাপড় নিয়ে সাথে কম্বলও। উৎসবমূখর পরিবেশে ধনী-গরিব-ছেলে-বুড়া-নারী-পুরুষ-হিন্দু-মুসলীম সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে গেছে।
আমাদের লক্ষ ছিলো একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে গিয়ে প্রকৃতপক্ষেই গরীবদূখী শীতে কাতর মানুষদের এই সংগ্রিহীত শীতবস্রগুলো পৌঁছে দেওয়া। এবং এজন্যই আমরা এতদূর এসেছি।
পরদিন সকাল বেলা হাটা দিলাম অজানা গন্তব্যে.... সাথে দুটো ভ্যানভর্তী শীতবস্র। উদ্দেশ্য একটাই, তৃণমূল পর্যায়ে গিয়ে শীতবস্রগুলো পৌঁছে দেওয়া।
ছবিতে উনাকে দেখতে একজন সাধারণ ভ্যানচালক মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে উনি একজন মহান ব্যক্তিও বটে। উনার কল্যানে আমরা খুঁজে পাই সেই সব হতদরিদ্র মানুষদের যাদের কাছে শীতবস্রগুলো পৌঁছে দেওয়ার জন্যই আমরা এতদূর এসেছি। উনি আমাদের বিভিন্ন দরিদ্র পড়ায় নিয়ে যান যেখানকার মানুষগুলো আসলেই অভাগা হতদরিদ্র এবং মনে হলো এরাই শীতের তীব্রতায় মরে গিয়ে খবরের হেডলাইন হয়।
এইতো পেয়ে গিয়ে একজন। উনি আমাদের প্রথম বিজয়ী
প্রফেশনাল ভ্যান চালক...
ড্রিম মেকার তৌহিদ ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে...
চলছে ড্রিম মেকার-এর গরীব দুখী শীতার্ত হান্ট কর্মসূচী
যদি লক্ষ থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে........
বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চলছে
ড্রিম মেকার আদিল (লাল শার্টের পেছনে) এবং তৌহিদ (সাদা শার্টের পেছনে)
তাঁত বুনছেন শীতবস্র বিজয়ী আরেক তরুন
শীত শুধু মানুষের লাগবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই..
যদিও আপনার সাইজের কোন কাপড় আমাদের কাছে নেই...
ড্রিম মেকার মামুন...
খালেদ ইমরান অর্ণব (ড্রিম মেকার প্রেসিডেন্ট)
রাতে সৌয়দপুর ট্রেন ষ্টেশনে।
এই ছিলো আমাদের গত বছরের সর্বশেষ ইভেন্ট। অনেকে ছবিগুলো দেখে মনে করতে পারেন, পোলাপাইন অনেক মজা করেছে। হ্যাঁ.. আনন্দ, মজা, দুষ্টামি..... এই কয়েকটা বিষয়ে আমাদের কোন কম্প্রোমাইজ নেই, নেই কোন আলসমি। কিন্তু সেই আনন্দ যদি কারো উপকারে আসে সেটা আমাদের বিরাট পাওয়া। এবং এই জিনিসটাই করবার চেষ্টা করে..............
ড্রিম মেকার

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




