‘দেশের ঐতিহ্যবাহী মনিপুরী বয়নশিল্পের উন্নয়নের জন্য নতুন করে পদক্ষেপ নেয়ার সময় এসেছে। উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা দেয়া হলে এই হস্তশিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসবে। দেশের উন্নয়ন ও মনিপুরী নারীর ক্ষমতায়নের জন্য এই শিল্পকে রক্ষা করা জরুরি’- বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর আবুল কাশেম। দুই দিনব্যাপী মনিপুরী হস্তশিল্প প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘মনিপুরীদের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে। মনিপুরী শিল্পীরা যাতে স্বল্পসূদে ব্যাংক ঋণ পায় সেজন্য আমরা দুইটি ব্যাংককে উদ্বুদ্ধ করেছি। আধুনিক বাংলা গড়তে চাই, যে বাংলা পরিবেশ নষ্ট কওে না। শিল্প-কারখানা বুড়িগঙ্গা ধ্বংস করছে, কিন্তু মনিপুরীরা পরিবশে নষ্ট করছে না। তারা মেধা কাজে লাগিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সকল জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং পরিষেবার আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বরাবরই আমরা এসএমএইকে বিশেষ নজর দিচ্চি। এই শিল্পে জন্য আমাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। আমরা নারীর ক্ষমতায়নের ওপর জোর দিচ্ছি, কারণ শুধু পুরুষের ওপর ভর করে রাষ্ট্র দাঁড়াতে পারে না। তাই দেশকে এগিয়ে নিতে দেশীয় শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে’।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফ্যাশন ডিজাইনার ও প্রকল্পের কনসালটেন্ট চন্দ্র শেখর সাহা, ‘মনিপুরীদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ প্রকল্প। অল্প সময়ে হলেও এই জনগোষ্ঠীর সদস্যরা তাদের মেধা ও মননকে কাজে লাগিয়ে কাজ করেছে। ১৮০ দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে বাঙালি মনিপুরীরা তাদের মেধাকে কাজে লাগিয়েছেন, নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ৫৭৬টি পণ্য উৎপাদিত হয়েছে’।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী শিল্পী আফসানা মিমি বলেন, ‘মুনিপুরী শাড়ির সঙ্গে পরিচয় অনেক দিনের। এই শাড়ির বুনন কৌশল, রংয়ের খেলা আমার ভালো লাগে। কিন্তু সঠিক দিক-নির্দেশনা আর প্রয়োজনীয় কাঁচামালের সরবরাহ না থাকার কারণে এই শিল্প ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়েছে। এই কর্মকান্ডের মাধ্যমে নতুন করে পথচলা শুরু করার সময় এসেছে। আমাদের ফ্যাশন হাউজগুলোতে মনিপুরী শাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা হলে আমরা হাতে কাছেই এই শাড়ি পাবো’।
অক্সফ্যামের কান্ট্রি ডিরেক্টর ¯ স্নেহাল ভি সোনেজি বলেন, ‘এই মুহুর্তটি আমার কাছে অত্যন্ত আনন্দময়। এই প্রকল্পটির মাধ্যমে আমরা এই জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি এই শিল্পটিকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। আমরা সমিল্লিতভাবে চেষ্টা করলে ঐতিহ্যবাহী এই হস্তশিল্পকে এগিয়ে নিতে পারি’।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ ইহসানুল করিম বলেন, ‘মোইরাং আমাদের দেশের একটি ঐতিহ্য। আমরা দেশীয় ঐতিহ্য ও প্রযুক্তিকে লালন করে বাজার সৃষ্টি দিকে জোর দিচ্ছি। আমাদের দেশ অনেক রঙের দেশ। এই দেশের ঐতিহ্যকে জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে এগিয়ে নিতে পারলে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো। এই উদ্যোগকে এগিয়ে নেবার জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হবে’।
উল্লেখ্য, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাঁচজন মনিপুরী হস্তশিল্পী এবং ফ্যাশন ডিজাইনার চন্দ্র শেখর সাহাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
ঢাকায় হয়ে গেলো দু’দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী মনিপুরী হস্তশিল্প মেলা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।