Jason and the Argonauts: তনুমায় আবার যাত্রা-৩ (আরব ডায়েরি-৭১)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১ম পর্ব
২য় পর্ব
পরেরদিন সকালবেলাতেই কচি ভাই আমাদেরকে গতকালের জায়গায় নিয়ে চললেন। গতকাল মেঘ থাকার কারনে সেখানে যেতে পারিনি। কুকুরের তাড়া খেয়ে ফেরত আসতে হয়েছিল। আজ মেঘ কম হলেও খুব বেশী লাভ হলোনা। রাস্তা খুব কমই দেখতে পারছিলাম। তারপরও অন্ধের মতো কচি ভাইয়ের গাড়ীকে অনুসরন করলাম। তিনি একটি ছোট পাহাড়ের উপর নিয়ে গেলেন- সেখানে একটা পার্ক ও হোটেল আছে। সবই এখন বন্ধ, গ্রীষ্মের ছুটিতে খোলা থাকে। হোটেলের পাশ থেকে পাহাড় খাড়াভাবে নেমে গেছে। নীচের ভিউটা নাকি অনেক চমৎকার। কিন্তু মেঘ থাকার কারনে কিছুই দেখতে পারলাম না।
আমরা ফিরতি পথ ধরলাম। কচিভাই এই রাস্তা সেই রাস্তা ঘুরিয়ে আরেকটি পাহাড়ের কাছে নিয়ে আসলেন। দূর থেকে পাহাড়টিকে মানুষের মাথা বলে বিভ্রম হতেই পারে। চারপাশ দেখে সবারই খুব ভালো লাগল। এক সৌদি ফ্যামিলিকে দেখলাম পিকনিক করতে এসেছে।
ছবিঃ কচি ভাই
পাশেই আরেকটি উচু পাহাড় ছিল। রাস্তাটি পাহাড়ে উঠে গেছে। কচি ভাই জানালেন, সেই পাহাড়ে গাড়ী নিয়ে উঠার ভালো রাস্তা আছে। প্রথমে ভয় পেলেও, কচি ভাইকে অনুসরণ করলাম। অনেক চওড়া পিচ ঢালা রাস্তা উপরে উঠে গেছে। বাংলাদেশে ঢাকার রাস্তাও এত ভালো নয়। উপরে উঠতে তেমন কষ্ট হলো না। পাহাড়ের উপর থেকে নীচের ভিউ অসাধারণ লাগল। এত উপরেও কয়েকটি বাড়ী ও মসজিদ দেখলাম। কোন মানুষ দেখতে পেলাম না। সৌদিরা আসলেই পাহাড়কে শাসন করে ফেলেছে। প্রায় প্রতিটি পাহাড়ে যাবার রাস্তা আছে, পার্ক করে রেখেছে, রিসোর্ট আছে। গ্রীষ্মকালে এসব পাহাড়ে সৌদিরা ছুটি কাটাতে আসে।
তারপর আমরা সবাই মিলে একটি লোকাল জাদুঘরে গেলাম। আগেও এখানে এসেছি কিন্তু কখনো খোলা পাইনি। এক সৌদি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে এটি তৈরি করেছেন। মূলত নিজেদের ব্যবহৃত প্রাচীণ জিনিষপত্র ও ফ্যামিলির তথ্যাদি নিয়ে জাদুঘরটি সাজানো হয়েছে। যে ভদ্রলোক এটি চালু করেছেন তার সাথে দেখা হয়ে যায়। তিনি আমাদের সাদরে গ্রহন করেন। আমাদের সাথে ছবি তোলেন। মন্তব্য লেখার একটি খাতা দেখিয়ে কিছু লিখতে বললেন। আমরা সানন্দেই তা করলাম।
একটি রেলিং এ দেখলাম কিছু একটা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। হাবিব স্যার তার ছবি তুলছেন। কাছে গিয়ে দেখলাম সেটা ভেড়ার চামড়া। সাথে সাথে গ্রীক রূপকথা Jason and the Argonauts দের কথা মনে পড়ে গেল যারা Golden Fleece (সোনালী চামড়া) এর খোঁজে বেরিয়েছিল।সেই সোনালী চামড়াটিতে দৈব শক্তি ছিল। যদি আমাদেরটাতেও থাকত!
Golden Fleece
এবার বিদায় নেবার পালা। আমার গাড়ীতে সাঈদ ও শিমুকে নিলাম। উসামা’র গাড়ীতে হাবিব স্যার। তনুমা থেকে বের হতেই ভয়ংকর মেঘে ঢেকে ফেলল। ৫/১০ মিনিট নয়, প্রায় আধাঘন্টা ধরে মেঘের ভেতর দিয়ে গাড়ী চালাতে হল। এখন তা ভাবলেই শিউরে উঠি।
আবহা পৌছে একটা গোসল নিতেই আবার পরবর্তী ভ্রমণ পরিকল্পনার জন্য চাঙ্গা হয়ে উঠলাম।
(শেষ)
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য
ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার
(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন
সম্পর্ক
আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭
ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।
এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন
একাত্তরের এই দিনে
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে
তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন