somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

(কল্প গল্প) --- রোবসেপিয়ান্সের ভালোবাসা

২০ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
তিন মাসে ঘটে যাওয়া তিনটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, প্রথম ঘটনাটা খবরের কাগজের প্রথম পাতায় আসে, তার পরেরটা শেষের পাতার আর শেষের ঘটনাটা কোন পত্রিকাতেই জায়গা পায়নি।

ঘটনা এক : মাস্টার্সের শেষ বর্যের ইংরেজী সাহিত্যের মেধাবী ছাত্রী "পিয়েলা লিয়ান" এটোমিক ব্লাস্টার মাথায় ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করে ।

ঘটনা দুই : প্রথম ঘটনার এক মাস পর শীর্ষস্হানীয় রোবট প্রস্তুতকারী কোম্পানী "এ্যাথেনা কপোট্রনস লিমিটেড" এর ল্যাব থেকে সর্বাধুনিক কপোট্রন G9 সিরিজের TPT90 কপোট্রনটি চুরি হয়ে যায়।

ঘটনা তিন : দ্বিতীয় ঘটনার এক মাস পর এ্যাথেনা কপোট্রনস লিমিটেডের এযাবৎ কালের সেরা মেধাবী রোবো সাইন্টিস্ট "রিশান ক্লোষ্টা" কোম্পনীর দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেয় ।

২.
শহরের প্রাণকেন্দ্রের বিলাসবহুল বাড়ি বিক্রি করে রিশান যখন লোকালয় থেকে বহুদুরের নির্জন টেরাসা লেকের পাড়ে ছোট একটা বাংলো বাড়ি কিনে তখন তার বন্ধুরা বলেছিলো, "তুই কি পাগল হয়ে গেলি ?"

উত্তরে রিশান শুধু বলেছিলো পিছনের সবকিছুকে ভুলে যেতে চাই, একেবারে নতুন করে সাজাতে চাই জীবনকে। আসলে রিশান মিথ্যে কথা বলেছিলো বন্ধুদের, সে আসলে ফেলে আসা অতীতকে নতুন করে আবিষ্কার করতে চায়, জয় করতে চায় অতীতের সব না পাওয়াকে।

নতুন বাংলো ঠিকঠাক মত গুছিয়ে উঠতে এক সপ্তাহের মত লেগে যায় রিশানের, এই একটা সপ্তাহ পাগলের মত কাজ করতে হয়েছে তাকে । একলা হাতে এত বড় বাড়ি গুছানো চাট্টিখানি কথা না, সবচেয়ে বেশি সময় আর পরিশ্রম হয়েছে ল্যাবরেটরীটা সেটাপ করতে । সারাদিন অমানুষিক খাটুনির পর রাতের বেলায় লেকের পাড়ে চাঁদের আলোয় বসে ঝিঁঝিঁপোঁকার ডাক শুনতে শুনতে জোনাকি পোঁকা গুনেছে আর কখনো কখনো সেখানেই নরম ঘাসের উপর ঘুমিয়ে পড়েছে নিজের অজান্তে ।

পরের এক সপ্তাহ কোন কাজ করেনি রিশান, শুধু ব্যস্ত ছিলো খাওয়া, ঘুম আর লেকে মাছ ধরা নিয়ে । তবে তার মস্তিষ্ক থেমে থাকেনি, পুরা সপ্তাহ ধরে সে মনে মনে কর্ম পরিকল্পনা গুছিয়ে নিয়েছে। ছোট বেলা থেকে এই একটা সমস্যা রিশানের , কোন কাজ হুট করে শুরু করতে পারে না পুরা ব্যাপারটা মনে মনে গুছিয়ে নিয়ে তারপর কাজে নামতে হয় তাকে ।

মানুষের অনুভূতি প্রধানত দুই প্রকার, ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য ও ইন্দ্রিয় অগ্রাহ্য । স্পর্শ, দৃষ্টি, ঘ্রাণ, শ্রবন এইগুলা ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য অনুভূতি মধ্যে পড়ে আর ইন্দ্রিয় অগ্রাহ্য অনুভূতিগুলো হলো সুখ, দুঃখ, আনন্দ, ঘৃণা, ভালোবাসা, অভিমান, ভয় ইত্যাদি । এই ব্যাপারটা মাথায় রেখে রিশান তিনটা ভাগে ভাগ করেছে তার প্রজেক্টটা, প্রথম পর্যায়ে সে দৈহিক কাঠামোটা নিয়ে কাজ করবে, দ্বিতীয় ভাগে ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য অনুভূতিগুলো একে একে সংযোগ করবে ও উন্নত করবে তারপর ইন্দ্রিয় অগ্রাহ্য অনুভূতিগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে । শেষের অংশটাই সবচেয়ে কঠিন এবং এর আগে আর কেউ এটা নিয়ে কাজ করেনি, সফল হওয়ার সম্ভাবনাও খুব কম, তবে রিশান দৃঢ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তাকে সফল হতেই হবে ।

৩.
খুব সাবধানে রাবারের আবরনটা ছিঁড়ে ৬-৬-৬ ইঞ্চির প্রায় দুই কেজি ওজনের G9 সিরিজের TPT90 কপোট্রনটি বের করে রিশান, ভয় মিশানো বিস্ময় নিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে এটার দিকে, আহঃ ! পৃথিবীর প্রথম মানবিক আবেগ ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন কপোট্রনট ! কিছুক্ষণের মধ্যেই নড়েচড়ে উঠে রিশান, নাহঃ ! অনেক কাজ বাকি, আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে কাঠামো দাড় করাতেই হবে । একে একে প্যাকেট আর বাক্স খুলে সে বের করে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ।

পরবর্তী সপ্তাহে ল্যাবরেটরি থেকে একবারের জন্যেও বের হয়নি রিশান, কখন সূর্য উঠেছে আর কখন অস্ত গিয়েছে সেই দিকে বিন্দুমাত্র খেয়াল ছিলো না তার, সারাক্ষণ কেটেছে অপটিকেল ফাইবার, ল্যান্স, ঝিনঝেনিয়ামের তার, স্ক্র ড্রাইভার, রাবার, এই সব নিয়ে । পুরা কাঠামোটা দাড় করানো হয়ে গেলে কিছুক্ষণ স্হির চোখের তাকিয়ে থাকে রিশান, আবার ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে প্রতিটি যন্ত্রাংশের সংযোগস্হল, উচ্চতা, ওজন । পুরো কাঠামোটা তার কাছে প্রযোজনের চেয়ে একটু ছোট মনে হতে থাকে, হঠাৎ রিশান মাথাটা একটু ডানে বামে খুব দ্রুত ঝাকিয়ে দুই হাত একটু উপরে তুলে নিজে নিজে বলতে থাকে, " শান্ত হও রিশান, শান্ত হও, মাথা গরম করার কোন দরকার নেই "

পাঁচ সেকেন্ড পর বড় করে একটা নিঃশ্বাস নিয়ে আবার প্রথম থেকে মাপজোক শুরু করে রিশান। হিসাব আগের বারের মত ঠিকঠিক মিলে যায় কিন্তু খালি চোখে তার কাছে কাঠামোটা এবারও একটু ছোট মনে হয়। তবে এইবার সে ভুলটা ধরতে পারে, আসলে ইস্পাতের পায়ের কাঠামোর ওপর যখন অর্ধ ইঞ্চি পরিমান কৃত্রিম মাংশপেশী ও তার উপর সংবেদনশীল সিনথেটিক চামড়া লাগানো হবে এবং মাথার খুলির উপর সিল্কের কৃত্রিম চুল লাগানো শেষ হবে তখন কাঠামোটা প্রায় দুই ইঞ্চির মত উঁচু মনে হবে।

অবশেষে ঠিকঠাক মত যখন কাঠামোটা দাড় করানো শেষ হয় ততক্ষণে ক্লান্তির শেষ সীমানায় পৌছে যায় রিশান, উত্তেজনার চোটে গত কয়েক দিন ক্লান্তি টের পায়নি সে একফোঁটাও । আর একটা মাত্র কাজ বাকি প্রথম পর্যায়ের, এখন শুধু ইস্পাতের কংকালের উপর কৃত্রিম মাংশপেশী স্তরে স্তরে বসাতে হবে, তার উপর সংবেদনশীল সিনথেটিক চামড়া লাগালেই কাজ শেষ । তবে এই কাজটা সয়ংসম্পূর্ণভাবে কম্পিউটারই করবে, রিশান শুধু ত্রি-মাত্রিক মডেলটার বিভিন্ন প্যারামিটারগুলো সেট করে দিবে। একটা ৪-৬ ফিট ক্যাপসুলটা বিভিন্ন কেমিকেল ঢেলে পূর্ণকরে তারসাথে কম্পিউটারের সংযোগ দেয় রিসান, সাথে সাথে ক্যাপসুলটার দুই পাশে হাজার খানেক সুঁচ সচল হয়ে উঠে । তারপর খুব যত্ন করে ধীরে ধীরে ক্যাপসুলের মধ্যে ইস্পাতের কংকালটা রেখে বিড়বিড় করে " ঈশ্বর আমার এই স্বপ্নটা তুমি বিফল করে দিওনা " বলেই রিমোট কন্ট্রোল চেপে প্রসেস চালু করে দেয় সে । সাথে সাথে ক্যাপসুলের মধ্যে একটা আলোড়ন শুরু হয়ে যায়, খুব দ্রুতগতিতে নড়াচড়া করতে থাকে সুঁচগুলো সমগ্র কংকাল জুড়ে। সমগ্র টিসু প্লানটেশন প্রসেস শেষ হতে চোদ্দ ঘন্টা সময় লাগবে, তারপর সয়ংক্রিয়ভাবে গলে বের হয়ে আসবে সদ্য সৃষ্ট এই রোবটটা ।

আর পারছিলোনা রিশান, টিসু প্লানটেশন প্রসেস চালু করে টলতে টলতে ল্যাবরেটরি থেকে বের হয়ে বেডরুমে গিয়ে বিছানার উপর সটান পড়ে যায়, টানা বিশ ঘন্টা পর ঘুম ভাংগে তার । ঘুম থেকে উঠে বিছানার উপর চুপচাপ কিছুক্ষণ বসে থাকে রিশান, বাহির থেকে দেখে বুঝার কোন উপায় নাই যে তার হৃদকম্পন দ্রুত থেকে দ্রুততর হচ্ছে । খুব সন্তর্পনে বিছানা থেকে নেমে কাঁপাকাঁপা পায়ে সে হেটে যায় ল্যাবরেটরির দিকে । ল্যাবরেটরির দরজা খুলার সাথে সাথে তার মুখ দিয়ে অস্ফুট আওয়াজ বের হয়ে আসে "ওহঃ ঈশ্বর ! ওহঃ ঈশ্বর !!"

তার সামনে দাড়িয়ে আছে পিয়েলা লিয়ান ! নিজেকে সংযত রাখতে খুবই কষ্ট হচ্ছিলো রিশানের, কাঁপা কাঁপা হাতে আলতো করে পিয়েলার হাতটা ধরে সে, তারপর আস্তে আস্তে কাধ, গাল, কপালের উপর দিয়ে বুলাতে থাকে, আর দু'চোখ বেরে বয়ে চলছে অঝোর ধারা । শেষ পর্যন্ত নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারায় রিশান, পিয়েলার মাথাটা ওর বুকে চেপে ধরে আকাশের দিকে মুখ করে সর্বশক্তি দিয়ে চিৎকার করে উঠে সে, যেন তার চিৎকারেই জ্যান্ত হয়ে উঠবে নিথর যন্ত্রমানবি ।


৪.
নেশগ্রস্হের মত সারাদিন কাজ করে যাচ্ছে রিশান, তার মাথায় একটাই চিন্তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পিয়েলার ঈন্দ্রিয়গুলোকে সক্রিয় করতে হবে। কলিংবেলের শব্দে সংবিৎ ফিরে পায় রিশান, হঠাৎ করে সতর্ক হয়ে যায় সে, হাজারটা চিন্তা তার মাথায় আসতে থাকে, তার খোঁজে কে আসলো এই নির্জন প্রান্তরে ?

দরজায় খুলেই সে দেখে একজন সুদর্শন যুবক মুখের মিটিমিটি হাসি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। রিশান জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালে সে বলে, " স্যার, আপনি কি মিস্টার রিশান ক্লোস্টা ? "

রিশান মাথা নেড়ে সম্মতি দিলে সে বলে, " স্যার, আপনার মাসিক অর্ডার ছিলো আমাদের কোম্পানিতে, আমি সেগুলো ডেলিভারী দিতে এসেছি " ।

চেপে থাকা নিঃশ্বাসটা ছেড়ে ডেলিভারী বয়কে স্টোররুমটা দেখিয়ে রিশান বললো , " এইখানে সব কিছু রেখে যান, আমি রিসিভ লগে সাইন করে দিচ্ছি " । আসলে রিশান কাজের চাপে ভুলেই গিয়েছিলো যে, এই কোম্পানীকে দায়িত্ব দিয়েছিলো তার প্রয়োজনিয় সবকিছু প্রতি মাসের প্রথম তারিখেই পৌছে দেওয়ার জন্য ।

ছেলেটা একটা একটা করে বক্স ভেনগাড়ি থেকে নামিয়ে স্টোররুম পর্যন্ত নিয়ে আসছে আর ফাঁকে ফাঁকে রিশনের সাথে কথা বলছে ।

স্যার কি বাসায় একা থাকেন ?

হুমম ।

এই নির্জন জনবসতিহীন জায়গায় থাকতে ভয় করে না ?

নাহ্ ।

স্যার কি বিয়ে করেছেন ?

এইবার রিশান একটু চটে যায় । চোখেমুখে গম্ভীর ভাব ফুটিয়ে তুলে কঠোরভাবে সে বলে , " আপনি কথা কম বলেন, জলদি কাজ শেষ করে এখান থেকে বিদায় হোন" ।

ছেলেটা এই রকম ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত ছিলো না, কিছুটা থতমত খেয়ে চুপ মেরে যায়, তার পরপরই মুখে হাসি হাসি ভাব ফুটিয়ে তুলে বলে , " স্যার আমার নাম, এনিলি, এখন থেকে প্রতি মাসে আমিই আপনার প্রয়োজনিয়ে জিনিস নিয়ে আসবো।"

রিশান বুঝতে পারে শুধু শুধুই একটু উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলো, এবার নরম সূরে বলে, " ঠিক আছে, আমি তো একা মানুষ, তাই প্রতিবার আসার আগে আমাকে একটা ফোন করে আসবেন, এই নিন আমার নাম্বার "

যতক্ষণ পর্যন্ত এমিলির ভ্যান চোখের আড়াল হয় ততক্ষণ পর্যন্ত রিশন রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিলো, তারপর বাড়ির চারদিকে একবার আলতো করে চোখ বুলিয়ে দরজা লাগিয়ে সে আবার ল্যাবরেটরিতে ঢুকে যায় ।

৫.
যাক, বিশাল একটা খাটুনির কাজ শেষ হলো, হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো রিশান, এখন সবকিছু ঠিকঠাক মত কাজ করলেই হয় । প্রবল উত্তেজনা আর সীমাহীন আশংকা নিয়ে রিমোটের অন বাটনে চাপ দেয় রিশান। এক সেকেন্ড, দুই সেকেন্ড .. পাঁচ সেকেন্ড চলে যায় কোন পরিবর্তন দেখা যায় না পিয়েলার শরীরে । পাঁচ সেকেন্ড রিশানের কাছে মনে হয় পাঁচ যুগ পার হয়ে গেছে ! ছয় সেকেন্ডের মাথায় ধীরে ধীরে চোখের পাতা খোলে পিয়েলা ঠিক যেভাবে ঘুম থেকে জেগে উঠে কোন মানুষ !

খুশিতে শিস্ দিয়ে উঠে রিশান, ছোট ছোট পদক্ষেপে পিয়েলার দিকে এগিয়ে যায় সে আর ভাবলেশহীন চোখে তার চোখের দিকে থাকে পিয়েলা। চমকে উঠে রিশান ! এমন নির্লিপ্ত চোখ ! যে চোখে কোন আবেগ নেই, নেই কোন ভালোবাসা, রাগ, ক্ষোভ, ব্যাথা, আছে শুধু অসীম শুন্য দৃষ্টি । রিশান জানে রোবট পিয়েলার শুধু পঞ্চেইন্দ্রিয় সংযোগ করা হয়েছে এখনও আবেগ যোগ করা হয়নি, তাই তার দৃষ্টি এমনই হওয়ার কথা, কিন্তু তবুও সে চোখ ফিরিয়ে নেয় ।

হঠাৎ হাতের কফির মগটা আস্তে করে পিয়েলার মাথা লক্ষ করে ছুঁড়ে মারে রিশান, আর সাথে সাথে পিয়েলা একেবারে স্বাভাবিক মানুষের মত মাথাটা নিচু করে ছুঁড়ে দেওয়া মগটা এড়িয়ে যায়। খুশিতে নেচে উঠে রিশান, আহঃ, দৃষ্টি একদম ঠিক মত কাজ করছে ।

এবার সোজা এগিয়ে যায় রিশান, আলতো করে একটু ছোঁয় পিয়েলার গালটা, যেন কারেন্টের শক খেয়েছে এমন ভাবে সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠে পিয়েলার। বুকের উপর কান পাতে রিশান, শুনতে পায় ক্রমাগত দ্রত থেকে দ্রুততর হচ্ছে পিয়েলার কৃত্রিম হৃদপিন্ডের গতি । হঠাৎ গতি সঞ্চার হয় রিশানের হাতে, গালের উপর দিয়ে বুলাতে বুলাতে তার হাত চলে যায় ঘাড়ে, সেখান থেকে আস্তে আস্তে চলে যায় পিঠে, তারপর সমগ্র শরীরে । হাত বুলানো অবস্হায় রিশান তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে পিয়েলার প্রতিটি কম্পন, কপালের কুঁচকে যাওয়া, চোখের পাতির দ্রুত উঠানামা। শেষে নাভীর উপর যখন তার হাত আসে তখন পিয়েলার কমর দুলে উঠে, পেটটা একটু চেপে ধরে অস্ফূট একটা আওয়াজ করে এক পা পিছনে চলে যায় সে। এইবার নাভীর কাছে বেশ জোরে একটা চিঁমটি কাটে সে, মৃদু চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে উঠে পিয়েলা । আনন্দে নেচে উঠে রিশানের মন ! পারফেক্ট ! একে বারে পারফেক্ট মানবীয় অনুভূতি ! পারফেক্ট !

তবে গলার স্বরটা এখনও ঠিক মত ম্যাচ হয়নি, এখনও মনে হয় ফাঁপা কোন পাইপের ভিতর দিয়ে কথা বলছে কেউ । আসল পিয়েলার কন্ঠস্বরের সাথে ঠিকমত সুপারইমপোজ হয়নি, ফ্রিকোয়েন্সিটা টিউন করতে হবে ঠিকমত । আর তর সইছিলোনা রিশানের , সাথে সাথে পিয়েলাকে অফ করে ইস্পাতের করোটির উপর থেকে চুল সরিয়ে কপোট্টনের ভিতর থেকে ভোকাল প্রসেসরটা বের করে কাজে লেগে যায় সে। ঘন্টা খানেকের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় ভোকাল প্রসেসরের রিপেয়ারিং। পাওয়ার অন করতেই চোখ খুলে তাকায় পিয়েলা । রিশান তার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, " আমি রিশান, তোমার নাম কি ?"

একজন সাধারন মানুষকে কেউ নাম জিজ্ঞেস করলে সে উত্তর দিতে যতটুকু সময় নেয় পিয়েলা ঠিক ততটুকু সময় নিয়ে বলে , "আমার নাম, জেনারেশন নাইন টি.পি.টি.নাইন জিরো ।

চমকে উঠে রিশান ! অবিকল পিয়েলার কন্ঠস্বর ! বুকের ভিতর কান্নার মেঘ জমা হতে থাকে, অনেক কষ্টের নিজেকে সংযত করে সে বলে, " ঐসব ডাটা মুছে ফেলো, এখন থেকে তোমার নাম 'পিয়েলা লিয়ান' তবে আমি তোমাকে 'পিলি' বলে ডাকবো " এখন বলো তোমার নাম কি ?

সে উত্তর দেয়, "আমার নাম পিয়েলা লিয়ান " ।

ঠিক আছে, তবে বলো "রিশান, আমার নাম পিয়েরা লিয়ান" ।

এইবার সে বলে , "রিশান, আমার নাম পিয়েরা লিয়ান" ।

আবার বলো।

"রিশান, আমার নাম পিয়েরা লিয়ান" ।

আবার বলো ।

"রিশান, আমার নাম পিয়েলা লিয়ান" ।

এইবার সব সংযোমের বাঁধ ভেঙ্গে যায় রিশানের, সে তার পিলিকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে উঠে। তার বাহুডোরে আটকা পড়ে পিয়েরা অনুভূতি শুন্য চোখে এদিক ওদিক তাকাতে থাকে আর ভাবতে থাকে, কি হলো হঠাৎ করে রিশানের ? সে তার কোমল হাত দিয়ে রিশানের পিঠে পরশ বুলাতে থাকে ভাবলেশহীন ।

৬.
এইবার শুরু সবচেয়ে কঠিন পর্যায়, পিয়েরার কপোট্রনে মানবীয় আবেগগুলোকে একে একে প্রবেশ করাতে হবে। এই বিষয়ের উপর অনেক বছর ধরেই গবেষনা হচ্ছে, তবে প্রয়োগ এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি, এই প্রায় অসম্ভব কাজটি রিশানকে করতে হবে। মানুষের সবগুলো ইন্দ্রিয় অগ্রাহ্য অনুভূতিগুলোকে পাঁচটি মৌলিক
অনুভূতিতে ভাগ করা যায় আনন্দ, মহত্ত্ব, ভালোবাসা, বিশ্বাস ও মমতা । সবগুলোকে কোপোট্রনে একসাথে প্রবেশ করানো যাবে না, এতে কোপোট্রন বিকল হয়ে যেতে পারে । আবার প্রতিটি মৌলিক অনুভুতি সমীকরনের সমাধানগুলোর ঋনাত্মক মানগুলো ঐ অনুভুতির বিপরীত অনুভুতি নির্দেশ করে। যেমন আনন্দের ঋনাত্মক মানের জন্য যে অনুভুতির জন্ম হয় সেটা হলো বেদনা । তেমনি মহত্ত্ব-ঈর্যা, ভালোবাসা-ঘৃনা, বিশ্বাস-অবিশ্বাস ও মমতা-হিংস্রতা সর্বমোট পাঁচ জোড়া মৌলিক অনুভুতি নিয়ে মনুষত্ব । মানুষের আরও অনেক অনুভুতি আছে যেমন সুখ, রাগ, অনুরাগ, বিষাদ, ভয়, বিরক্তি তবে এইঅনুভুতিগুলো পাঁচটি মৌলিক অনুভুতির যৌগিক অবস্হা। যেমন, ভালোবাসা-বেদনা-অবিশ্বাস এই তিনটি মৌলিক অনুভুতি বিভিন্ন অনুপাতে ক্রিয়াশীল হয়ে তৈরী হয় নতুন অনুভুতি "অনুরাগ", তেমনি মমতা-অবিশ্বাস-ঘৃনা-ঈর্ষা মিলে হয় "বিষন্নতা" । এইসব মানবীয় আবেগ সম্পর্কিত সমীকরন গুলো রিশানের নখদর্পণে, এখন শুধু দরকার সময় আর দরকার একটু ভাগ্য।

আজ পিয়েলাকে প্রথম মৌলিক জোড়া অনুভুতি "আনন্দ-বেদনা" প্রবেশ করাবে রিশান, সে কম্পিউটারে পর্যাপ্ত ডাটা দিয়ে সিমুলেশন করেছে, চমৎকার আউটপুট, এখন বাস্তবে ঠিকঠাক মত কাজ করলেই হয়।

পিয়েলা ধীরে ধীরে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে রিশান হাতে জঘন্য একটা জিনিস নিয়ে মুখটা হাসি হাসি করে দাড়িয়ে আছে । পিয়েলার মুখটা কঞ্চিৎ বিকৃত হয়ে যায়, সে বলে, "রিশান, তোমার হাতে কুৎসিত এই জিনিসটা কি ? "

হঠাৎ একটু দমে যায় রিশান, সে এমন কিছু আশা করেনি, সে জবাবে বলে, "কেন পিলি, এটাতো গোলাপ ফুল ? প্রকৃতির খুব সুন্দর একটা সৃষ্টি ! "

পিয়েলা চিৎকার করে উঠে, " না ! না ! জঘন্য ! নষ্ট করে ফেল এটা , দেখতে ভয়ংকর লাগছে "

এতক্ষণে বুঝতে পারে রিশান কোথায় ভুল হয়েছে । এক নাম্বার মৌলিক অনুভুতির প্রসেসরাটা সে উল্টা করে লাগিয়েছে ।

কিছুক্ষণ পর, ধীরে ধীরে চোখ খুলে পিয়েলা, দেখে তার সামনে হাসি হাসি মুখে দাড়িয়ে আছে রিশান, হাতে ফুল নিয়ে । সে আনন্দে চিৎকার করে উঠে বলে, ওহ ! রিশান, ফুল যে এত সুন্দর তা আমি কখনো অনুভব করিনি, এখন করছি ! ওহ ! আমার যে কেমন লাগছে আমি তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না । এটার নামই কি আনন্দ ! ওহ ! রিশান তুমি কত সুন্দর !

হাতে ধরা ফুলটা তার দিকে তুলে ধরে রিশান বলে " আমার পক্ষ থেকে এই ফুলটা তোমাকে উপহার দিলাম "

একটু কেঁপে উঠে পিয়েলা, আনন্দে তার চোখ দিয়ে পানি চলে আসে, সে আরও একটু এগিয়ে গিয়ে রিশানের বুকে মাথা রেখে কাঁদতে কাঁদতে বলে , " ওহ ! রিশান তুমি কত সুন্দর, কত ভালো " তার চোখের পানিতে ভিজে যেতে থাকে রিশানের সার্টের বুকপকেট ।

আর রিশান মনে মনে শুধু আওড়াতে থাকে, " পারফেক্ট ! পারফেক্ট ! "

৭.
লেকের পাড়ে ঘাসের উপর বসে আছে পিয়েলা, তার কোলে মাথা রেখে আকাশের দিকে মুখ করে শুয়ে আছে রিশান, মৃদু হাওয়ায় হালকা উড়ছে পিয়েলার চুল, ওহ! কি অদ্ভুত সুন্দর লাগছে ওকে , ভাবে রিশান। হঠাৎ সে বলে , "পিলি আমি তোমাকে ভালোবাসি, তুমি আমাকে ভালোবাসো না ?"

রিশানের মুখে এ কথা শুনে পিয়েলা হঠাৎ একটু চমকিয়ে উঠে, তারপর শুন্য দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে বলে , "ভালোবাসা ! এটা কি রকম অনুভুতি ?"

হো হো করে হেসে উঠে রিশান, হাসতে হাসতে সে বলে তোমার কপোট্রনে এখনও "ভালোবাসা-ঘৃনা" এই অনুভূতিটা প্রবেশ করানো হয়নি । প্রবেশ করানোর পর বুঝবে আমার বুকে কেমন হাহাকার ছিলো এতদিন । কেবল মাত্র তখনই বুঝতে পারবে একটুকরো ভালোবাসার জন্য পৃথিবীর ভয়ংকরতম ব্যক্তিটিও দুগ্ধপোষ্য শিশু হয়ে যেতে পারে আবার সবচেয়ে নীতিবান মানুষটিও দুর্ধর্ষতম অপরাধটি করতে পিছপা হয় না ।

হঠাৎ রিশানের মোবাইল ফোনে একটা ভিডিও ম্যাসেজ আসে। ম্যাসেজটা খুলতেই সুন্দর একটা মেয়ের ত্রিমাত্রিক অবয়ব ফুলে উঠে, মেয়েটি বলে, " হ্যালো রিশান, অনেক দিন তোমার কোন খবর নেই কেন ? ভালো থেকো, আর ম্যাসেজ দিও "

মুখটা কঠোর হয়ে যায় পিয়েলা, সে বলে কে এই মেয়ে ?

রিশান হেসে বলে, " আরে তেমন কেউ না, আমর ক্লাসমেট, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষে একসাথে থিসিস করে ছিলাম । "

মুখটা আরও কঠোর করে পিয়েলা বলে, " খরবদার এর সাথে আর কোন দিন যোগাযোগ করবে না ! খবরদার । আর এক্ষনি এই ম্যাসেজ মুছ ! আর ওর নাম্বারটাও মুছ, এক্ষণ "

হা হা করে হেসে রিশান বলে, ঠিক আছে এক্ষণি মুছে ফেলছি, আর কখনো ওর সাথে যোগাযোগ করবো না । আর একটু মুচকি হেসে মনে মনে বলে , " ঈর্ষা ! কি ঈর্ষা !

৮.
আজ রিশানের জীবনে একটা বিশেষ দিন, সকাল থেকেই বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে, আজকে পিয়েলার কোপোট্রনে "ভালোবাসা-ঘৃনা" অনুভুতি প্রবেশ করাবে সে। আজকেই শেষ হবে তার জীবনের সেরা স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথচলা।

পিয়েলার কোপোট্রনের ভিতর থেকে খুব সাবধানে কাঁপাকাঁপা হাতে পাঁচ নাম্বার অনুভুতির প্রসেসরটা বের করে রিশান। তারপর পুরো প্রোগ্রামটা লোড করে আবার ঠিক জায়গা মত ঢুকিয়ে তিন পা পিছনে গিয়ে পাওয়ার সুইচটা অন করে রিশান।

চোখ খুলে তাকিয়ে পিয়েলা দেখে তার সামনে দাড়িয়ে আছে রিশান, তার ভালোবাসার রিশান ! সে আবেশে আবার চোখ বন্ধ করে আবার খুলে, তারপর বলে, " রিশান আমি এখন বুঝি ভালোবাসা কি জিনিস " । আমি মরমে মরমে অনুভব করছি, আমার শরীরের প্রতিটা কোষ অনুভব করছে তোমার জন্য পরম ভালোবাসা। কিন্তু আমি তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না, কেমন এই অনুভুতি।

রিশান পিয়েলার চোখে চোখ রেখে বলে, " পিলি, তোমার বুকে যেমন ভালোবাসার ঝড় বয়ে যাচ্ছে, আমার বুকেও রয়েছে ঠিক তেমন ভালোবাসা তোমার জন্য । আসলে মানুষের এই একটা অনুভুতি যাকে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না । এটা বলে পিয়েলার সামনে হাটু গেড়ে বসে পরে রিশান বললো, " আমাকে শুধু এমন ভালোবাসায় ঘিরে রেখো "

রিশানের মাথায় নিজের গালটা রেখে তার ঘাড়ে পিঠে পরম ভালোবাসায় হাত বুলাতে থাকে পৃথিবীর প্রথম রোবসেপিয়ান্সে পিয়েলা লিয়ান ।

৯.
গভীর রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায় রিশানের। হাত বাড়িয়ে দেখে বিছানায় পিয়েলা নেই। সে ভাবে হয়তো বাতরুমে গিয়েছে। বেশ কিছুক্ষণ পরও সে ফিরে না আসলে রিশান বিছানা থেকে উঠে বাতরুমে উকি দেয়, বাতরুম ফাঁকা ! তাহলে এতরাতে কোথায় গেলো পিয়েলা ?

ঘুরে ঘুরে বসার ঘর, খাবার ঘর সব ঘরে খুঁজতে থাকে রিশান, কিন্তু কোথাও নেই পিয়েলা ! হঠাৎ বারান্দা থেকে একজন পুরুষ মানুষের গলার স্বর শুনে চমকে উঠে রিশান । কান পাতে সে, শুনতে পায় পিয়েলা বলছে, " ওহ! গড ! এত মানুষ ! আমি তো ভাবতাম পৃথিবীতে আমি, তুমি আর রিশান ছাড়া কেউ নেই "

পুরুষ কন্ঠটা বলে, " জ্বি , একদম সত্যি কথা, পৃথিবীতে বর্তমানে চারশত কোটি মানুষ। তুমিতো পড়ে থাক লোকালয় থেকে দুরে নির্জন স্হানে । এখানে জীবন কত আনন্দের ! সিনেমা হল, নাইট ক্লাব, থিম পার্ক , সমুদ্র , আরও কত কি ! "

পিয়েলা বলে, " সমুদ্র কি ? "

তুমি সমুদ্র দেখনি ? ওহ ! রিশান একটা সাইকো, ও তোমাকে পৃথিবীর তাবৎ আনন্দ থেকে দুরে রেখেছে, তোমাদের বাড়ির সামনে যে লেকটা আছে না, সমুদ্র হলো এর থেকে লক্ষগুন বড় জালধার, তুমি এপাড় থেকে ওপাড় দেখতে পাবে না, বিশাল বিশাল ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ে বিকট গর্জন করে । তুমি আমার কাছে চলে আসো, তোমাকে আমি সমগ্র পৃথিবী ঘুরিয়ে দেখাব। পিয়েলা, পৃথিবী তোমার ধারনার চেয়েও অনেক অনেক গুন বড় "

পিয়েলা বলে , " ইস্ ! আমার তো এখনই উড়ে চলে আসতে ইচ্ছার করছে "

এবার নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় রিশানের ক্রোধ, চিৎকার দিয়ে সে বারান্দায় ঢুকে , দেখে পিয়েলা মোবাইলে ভিডিও আলাপ করছে এনিলির সাথে। রাগে গজগজ করতে করতে সে বলে, শেষ পর্যন্ত তোমার এই রুপ পিয়েলা ?

পিয়েলা নিশ্চুপ !

হাত ধরে টেনে হিঁচড়ে তাকে বেডরুমে নিয়ে আসে রিশান, নিজের ওপর কোন নিয়ন্ত্রন নেই তার এই মূহুর্তে, ড্রয়ার থেকে হেচকা টানে বের করে এটোমিক ব্লাস্টার । তাক করে পিয়েলার মাথায় ।

অস্ফুটভাবে পিয়েরা শুধু বলতে থাকে , " প্লিজ ! প্লিজ " ।

চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে রিশানের, একবার চোখ বন্ধ করে আবার মাথা ঝাকায়, বলে কেন এমন করতে গেলে ? শুধু আমাকে পেয়ে কি সুখী নও ! তাহলে কেন তোমার সমগ্র পৃথিবী চাই ?

বেঈমান, বিশ্বাসঘাতক ... হঠাৎ মাথা চাড়া দিয়ে উঠে প্রচন্ড ক্রোধ টেনে দেয় ট্রিগার, ধ্বংস করে পিয়েলা লিয়ানকে যেমন ভাবে হত্যা করেছিলো সে প্রথম পিয়েলা লিয়ানকে, পার্থক্য শুধু এতটুকুই এইবার আর আত্মহত্যার প্রমান করার জন্য কোন তৎপরতা চালাতে হবে না ।

হো হো করে হেসে উঠে রিশান হঠাৎ করে, সে বুঝতে পারে, ভালোসার ঋনাত্মক আবেগ শুধু ঘৃনা নয় , এর সাথে ছোট একটা মান হিসাবে আছে " বিশ্বাসঘাতকতা", যে মানটাকে খুবই ক্ষুদ্র বলে রিশান বাদ দিয়েছিলো ।

হা হা করে হাসছে রিশান মাটিতে গড়াগড়ি করে, আর চোখ দিয়ে ঝড়ছে ক্রমাগত জল, মানুষ বড়ই অদ্ভুত ! তার চেয়ে বেশি অদ্ভুত তার আবেগগুলো ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৫:৪৯
৬৭টি মন্তব্য ৬৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×