প্রথমে একটা লাইভ জোকস বলি- আমার এক কলিগ বিয়ে করবে, ডাক্তার মেয়ে ছাড়া বিয়ে করবে না। তাকে জিজ্ঞেস করলাম- আপনার রিকুয়ারমেন্ট কি? সে বলে- জানিনা। অনেক খুঁজাখুঁজির পর তার জন্য একটা মেয়ে পাওয়া গেল, মেয়ে অনেক ভাল, ডেন্টিস্ট। আমার কলিগ ঐ মেয়েকে বিয়ে করবে না, কারণ মেয়ে নাকি মানুষের মুখে হাত দেয়!
আমার তখন মেজাজ খারাপ হয়ে গেল, তাকে বললাম- ভাই আপনার জন্য কি একজন গাইনকোলোজিস্ট খুঁজবো!!!
বাংলাদেশে যতজন সৌভাগ্যবান আছে আমি মনে হয় তাদের মধ্যে একজন, কারণ আমার ঘরে কোন টেলিভিশন নেই। হিন্দি সিরিয়াল তো দুরের কথা, কোন নিউজও আমাকে দেখতে হয় না। গতকাল রাতে গেছিলাম আমার বোনের বাসায়, ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছিলাম চ্যানেল ৭১। স্ক্রিনের নীচে ভেসে যাওয়া নিউজ হেডলাইন গুলো পড়ছিলাম।
আমাদের গোলাপি আফা নাকি গেছে সিংগাপুর মেডিকেল চেকাপ করাতে, ভালো কথা। সিংগাপুরে নাকি অনেক ভালো ডাক্তার আছে (আমি কখনো যাইনি, শোনা কথা)।
আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা ইন্টার পরীক্ষা দিয়েই খেয়ে না খেয়ে উঠে পরে লাগে মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার জন্য। মেডিকেলের যেদিন ফর্ম ছাড়ে তার আগেরদিন রাত বারোটা থেকে লাইনে দাড়িয়ে থাকে ফর্ম নেয়ার জন্য। আমিও একবার লাইনে দাড়িয়ে ছিলাম আমার ভাগ্নির জন্য, তখন ছিল রমজান মাস সেহেরি করেই লাইনে যেয়ে দাঁড়িয়েছি পাঁচশো জনের পিছনে। এরপর ভর্তি পরীক্ষা, রেজাল্ট, তারপর চান্স পাওয়ার পর কোন মেডিকেলে যাবে। এখানেই শেষ না, এরপর শুরু হয় আসল যুদ্ধ। পাঁচটা বছর গাধার খাটুনি, দেশের বাইরে যেয়ে আরও বড় ডিগ্রী অর্জন।
এখন আসল কথায় আসি- আমার দেশের সোনার টুকরা গুলো যারা আজ বড় বড় ডাক্তার হয়ে (এর মধ্যে যে খারাপ নাই তা বলছি না) অক্লান্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছে মানুষের। কিন্তু গোলাপি আফা দের মত নেতা-নেত্রীদের ধারনা তো আমাদের ডাক্তাররা শুধু বসে আছে মানুষের তলদেশের লোম কাটার জন্য। তারপরও যদি এইটুকু ধারনা করতো তাও হতো, তাদের ধারনা আমাদের ডাক্তারদের কাছে তাদের তলদেশের লোম কাটতে গেলে খোঁচা দিয়ে হয়তো মেইনপয়েন্ট থেকে রক্ত বের করে দিতে পারে।
ওরে মাতারি! তুই সিঙ্গাপুর যা আর লন্ডনে যা তাতে আমার ডাক্তারদের জ্ঞানের কোন কমতি হবে না।
আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় একটা বচন আছে- ‘পেট ভর্তি গু থাকলে য্যামনে খুশি ত্যামনে হাগা যায়, চাইলে জিলাপিও বানানো যায়।‘ আমাগো নেতাদের পেট ভর্তি গু আছে তারা সিঙ্গাপুর ক্যান তাদের বেডরুমেও কাম সারতে পারে।
তারা নাকি জনগণের সেবক। ভোট ভিক্ষা চায়, আমার তো মনে হয় এরা ফুটপাতের ভিক্ষুকের চেয়েও নিকৃষ্ট। সাধারণ ভিক্ষুকের চক্ষু লজ্জা থাকে, এদের তো দেখি সারা শরীরে কোন লজ্জা নাই।
আরে বেহায়া, তোরা যে সিঙ্গাপুর যাস কার টাকায় প্লেন ফেয়ার দিস। টাকা তো আমাদেরই! এত টাকা দিয়ে প্লেন ফেয়ার না দিয়ে একটু কষ্ট করে ঢাকা মেডিকেলে অথবা পিজি তে যা না আমাদের ডাক্তারদের কাছে। নাকি আমাদের ডাক্তারদের কাছে গেলে তোদের ইজ্জত নিয়ে নেবে? ঢাকা মেডিকেলে গেলে দেখিস কত রুগী বেড না পেয়ে বারান্দায় ফ্লোরে শুয়ে আছে, কত রুগী টাকার অভাবে অপারেশন করাতে পারছে না। দে না তোদের প্লেন ফেয়ারের টাকাটা তাদেরকে।
আর হাচিনা বু আপনারে বলি, আপনেও গোলাপি আফার চেয়ে কোন অংশে কম যান না। আপনার চশমার ফ্রেমটা অনেক সুন্দর, কই থেকে কিনছেন? কত ডলার দাম নিছে বুবুজান?
আপনি যে প্রতি বছর এত হজ্ব করেন, ওমরাহ্ করেন, ভালো কথা। কিন্তু মাথার কাপড় তো দিন নীচে নামতেছে আর মাথার পাকা চুল গুলো জনগণরে ভালই ফ্লাশ মারেতেছে। আপনার ব্যাংক ব্যালান্সের স্টেটমেন্ট তো আছে ব্যাংকারের কাছে আর আপনার আমলনামা কার কাছে আছে জানেন? লোক দেখায় কপাল ঠুকলে আর জুম্মায় জুম্মায় আটবার হজ্ব করলেই কি ফেরেশতারা আপনার আমলনামার ব্যালান্স এ্যডজাস্ট করে দিবে!
নেতাজীরা, আপনাদেরই বলছি- ভোট ভিক্ষা চাইয়েন না, সাধু হন সাধু সাইজেন না। ব্যাংক ব্যালান্স ভারি না কইর্যা ফেরেশতাদের আমলনামার ব্যালান্স ভারি করেন। জনগণ তখন ভোট ভিক্ষা দেবে না, ভালবেসে উপহার দেবে। সাকিপ খান আর জলন্ত জলিলের মত হাস্যকর সিনেমা কইরেন না। আমরা আমাদের দেশের নেতাদের সত্যি মঙ্গল কামনা করি, আপনারাও আমাদের জন্য মঙ্গলজনক কিছু করেন দেখবেন শান্তি অবধারিত।