somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুসলমান তার শ্রেষ্ঠত্ব অস্বীকার করতে পারে, কিন্তু হিন্দুরা যে কখনোই তাদের গোলামের পরিচয়কে অস্বীকার করতে পারে না

০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৮৫৭ সালের ব্রিটিশবিরোধী মহাবিদ্রোহের সময়ের ঘটনা। ব্রিটিশ হানাদারেরা দিল্লী অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এমতাবস্থায় সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের মনে খেয়াল হলো, যেহেতু হিন্দুরা গরুকে দেবতা মানে, সেহেতু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দিল্লীর হিন্দুদের সমর্থন পেতে হলে গরু কুরবানীর ব্যাপারে ছাড় দিতে হবে। সম্রাট আইন জারি করে দিল, মুসলমানদের কেউ গরু কুরবানী করতে পারবে না।

দিল্লীর একজন প্রখ্যাত উর্দু সাহিত্যিক খাজা হাসান নিযামীর ‘দিল্লী কি জান কুনি’ (বাংলা অনুবাদ: সিপাহী বিদ্রোহে দিল্লীর যন্ত্রণা, ঐতিহ্য প্রকাশনী) বইতে উল্লেখ রয়েছে যে, আইনটি এতো কঠোরভাবে বলবৎ করা হয়েছিল যে, কুরবানীর ঈদেও দিল্লীর কোন মুসলিম অধিবাসী গরু কুরবানী করতে সক্ষম হয়নি। কিন্তু যেই হিন্দুদের মন জয় করতে সম্রাট মুসলমানদের এভাবে কোনঠাসা করল, সেই হিন্দুরা এর প্রতিদানে কী দিয়েছিল?

এই আইনটি জারি হওয়ার পরপরই দিল্লীতে অবস্থানরত হিন্দু সেপাইরা খুঁজে খুঁজে মুসলমান গরুর গোশত ব্যবসায়ী ও কসাইদের শহীদ করতে লাগল এই বলে যে, মুসলমানরা এতোদিন শাসকশ্রেণী হিসেবে আমাদের গো-মাতাকে হত্যা করেছে, এবার আমরা হিন্দুরা বদলা নিতে পাল্টা মুসলমানদের শহীদ করব। খাজা হাসান নিযামীর বইটিতে উল্লেখ রয়েছে যে, দিল্লীর মুসলমান গোশত ব্যবসায়ীরা হিন্দু সেপাইদের অত্যাচারের কারণে টানা চার মাস ঘরের বাইরে বের হতে পারেনি।

অথচ দিল্লীর মুসলমানরা গরু জবাই ত্যাগ করেছিল এই ভেবে যে, তাতে করে শাসকশ্রেণী হিসেবে গোলামশ্রেণীর হিন্দুদের সাথে তাদের পার্থক্য ঘুঁচে যাবে, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই সহজতর হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি, কারণ মনিব যদি মনিবের ন্যায় আচরণ না করে, তাহলে হিন্দুরা গোলাম হিসেবে এর সুযোগ নেবেই। মুসলমানদের তারা লাঞ্ছিত-অপদস্থ করবেই।

বস্তুত হিন্দুদের জাতটাই হলো গোলামের জাত, হিন্দুদের মগজটাই হলো গোলামের মগজ। কারণ হিন্দুরা যে একদা মুসলমানদের গোলামি করেছে, এ বিষয়টি শিশুকালেই হিন্দু বাচ্চাদের মগজে ঢুকিয়ে দেয় তাদের পিতা-মাতারা। নীরদ সি চৌধুরী তার আত্মজীবনীদের উল্লেখ করেছে

Nothing was more natural for us than to feel about the Muslims in the way we did. Even before we could read we had been told that the Muslims had once ruled and oppressed us, that they had spread their religion in India with the Koran in one hand and the sword in the other.

অর্থাৎ হিন্দু বাচ্চা লিখতে-পড়তে পারার আগেই তার বাবা-মায়েরা তাদের শেখায় যে, হিন্দুরা একদা মুসলমানদের গোলামি করেছে। এর ফলে হিন্দু বাচ্চাদের মনে যে অনুভূতি পয়দা হয়, শিশুকালেই যে শত্রুতা তারা অর্জন করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সে সম্পর্কে নীরদ সি চৌধুরীর মন্তব্য Nothing was more natural, কোন কিছুই এতোটা প্রকৃতিগত নয়। খাওয়া-পরা-ঘুমের ন্যায় প্রকৃতিগত তাড়নার চেয়েও একদা মুসলমানদের গোলামি করার তাড়না, মুসলমানদের ক্ষতি করার তাড়না হিন্দুদেরকে অনেক বেশি তাড়িয়ে বেড়ায়।

যে কারণে এই একবিংশ শতাব্দীতেও পাশ্ববর্তী ভারতে মুসলিম শাসকদের নামে নামাঙ্কিত স্থাপনা কিংবা রাস্তার নাম পরিবর্তন করতে হিন্দুদের খুব তোড়জোর করতে দেখা যায়। এর মূল কারণই হচ্ছে, হিন্দুদের মনে সর্বদা এই বোধ জাগরুক থাকে যে তারা হলো গিয়ে গোলাম। রাস্তাঘাটে মুসলমান শাসকের নাম দেখলেই তাদের সেই গোলামির কথা স্মরণ হয়। তাই তারা মুসলমান শাসকদের নামাঙ্কিত রাস্তার নাম পরিবর্তন করতে চায়, তাজমহলকে মন্দির বলে দাবি করতে চায়।

বস্তুতঃ মুসলমানদের সামনে দুটি রাস্তাই খোলা রয়েছে, হয় মুসলমানরা হিন্দুদের মনিব হবে, নতুবা কুকুরের ন্যায় তাদের হাতে লাঞ্ছিত হবে। হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের সমতাপূর্ণ বন্ধুত্বের সম্পর্ক কখনোই সম্ভবপর নয়, কারণ হিন্দুরা যে গোলাম এবং গোলাম হিসেবে যে তারা সুযোগ পেলেই মুসলমানদের উপর আঘাত করবে, এই বিষয়টি তারা কখনোই মন থেকে বিস্মৃত হয় না।

ছবিঃ দিল্লীর আকবর রোডের রোডসাইন, যার উপর হিন্দুরা জোর করে ‘প্রতাপ রোড’ পোস্টার লাগিয়ে দিয়েছে।

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×