''আমি ভারতে শরিয়াহ আঈন কায়েমের কথা বলছিনা।আমি (ভারতিয় মুসলিমদের) সংবিধান সম্মত সুযোগ প্রদানের কথা বলছি''
''হ্বজের ভর্তূকি,মাদ্রাসার আধুনিকায়নের অর্থায়ন বাতিল কর।দরিদ্র মুসলিম পরিবারের মেয়দের শিক্ষায় ভর্তুকি দাও।
তাদের জন্য আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাণ নির্মাণ করতে দাও''
''ভারতীয় মুসলিমরা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের বোঝা বইবার কুলি নয়''
-আসাদুদ্দীন ওয়াইসি
নিজামদের ঐতিহাসিক শহর হায়দ্রাবাদে প্রতিষ্ঠিত হয় অল ইন্ডিয়া-মাজলিশে-ইত্তেহাদুল-মুসলেমিন(AIMIM)।তেলেঙ্গনা প্রদেশ থেকে নির্বাচিত লোকসভার সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি দলটির নেতা ।২০১৩ সালে AIMIM পুরো ভারতে বৃস্তিত হবার সিদ্ধান্ত নেয়।তেলাঙ্গনা প্রদেশিক আইনসভায় ৭টি,মহারাষ্ট্রের প্রাদেশিক আইনসভায় ২ টি,লোকসভায় ১টি আসন রয়েছে দলটির।ভারত সরকারের সাচার কমিটির চালানো সমীক্ষামতে হায়দ্রাবাদ ব্যাতীত ভারতীয় মুসলিমরা সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী,এমনকি দলিতদের থেকেও।ধবংশপ্রাপ্ত বাবরি মসজিদ যেন ভারতীয় মুসলিমদেরই প্রতিচ্ছবি।হায়দ্রাবাদের ব্যাতিক্রম হবার কারণ হিসেবে ওয়াইসি দাবি করেন নিজ দলের উদ্দোগে প্রতিষ্ঠিত মেডিকেল কলেজ,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,হাসপাতাল ইত্যাদি।
গত বছর দিল্লীতে হিন্দুত্ববাদের সেনাপতি নরেন্দ্র মোদীর আরোহনের পর,গেরুয়া জঙ্গিবাদের প্রাণপুরুষ বাল থেকারের স্মৃতিবিজড়িত হিন্দুত্ববাদের কা'বাতূল্য মহারাষ্ট্র প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে আসাদুদ্দিন ওয়াইসির দল দুটি আসনে জয়লাভ করে ভারতবর্ষের রাজনিতীতে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন হয়। আসন দু'টিতে জয়লাভের নেপথ্যে নামে সেকুলার কংগ্রেসের মুসলিম ভোটব্যাংক ভাঙ্গন ধরানো।রাষ্ট্রের থেকে নাগরিক অধিকার আদায়ের বদলে, দাংগা আর গেরুয়া সন্ত্রাস থেকে সুরক্ষা প্রদান ছিল ১৯৮৪'র শিখ গণহত্যায় সক্রিয় আর ২০০২এ গুজরাটে মুসলিম গণহত্যার নিরব দর্শক কংগ্রেসের প্রতি ভোটব্যাংকের মূল দাবি।
ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর রাজীব গান্ধীর কংগ্রেস ভারতের রাজনীতিতে হিদুত্ববাদের প্রচলন করেন।সেই সুযোগ আদভানী লুফে নিয়ে বিতর্কিত রাম মন্দির নির্মানের নামে দেশব্যাপী হিন্দুত্ববাদী উন্মাদনার জোয়ার ছড়িয়ে দেন। জার ফল ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধবংশ ও গুজরাট গণহত্যার ''নায়ক'' সন্ত্রাসবাদী আর এস এস ক্যাডার নরেন্দ্র মোদীর ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ।
মাওলানা আবুল কালাম আজাদের মৃত্যর পর ভারতের মুসলমানদের ভোটব্যাংকে পরিণত হতে হয় দিল্লীর শাহী মসজিদের ইমাম বুখারির মত বয়ানবাজরা মুসলিম সমাজের নেতা বনে জাওয়ায়।লোকদেখানো কাজের মাধ্যমে কংগ্রেস আর তার গোত্রীয় যেমন তৃণমূল কংগ্রেস ইসলামের ''খেদমত'' করেছে কী?-হল ভোট প্রদানের বিবেচ্য বিষয় নেতাদের।রাষ্ট্রের প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা আদায়ের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের মৌলিক অধিকার লাভ বিবেচ্য বিষয় ছিলনা।ওয়াইসির মুসলিম যুবকদের জন্য চাকরিতে কোটা বরাদ্দ,হ্বজ ও মাদ্রাসার আধুনিকায়নের বদলে দরিদ্র মুসলিমদের শিক্ষার পেছনে অর্থায়নের দাবি সমূহ তরূণ প্রজন্মের ভারতীয় মুসলিমদের মধ্যে ব্যপক সাড়া ফেলেছে।ওয়াইসির জনসভায় দলে দলে তারা যোগদিচ্ছেন।সমাজ বিশ্লেষকদের মতে ওয়াইজির এই তরূন সমর্থকরা ভারতের রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে সমসা সমাধানের পথা খুঁজে পেয়েছেন।
বিরোধীরা ওয়াইসিকে দ্বিতীয় মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ,বিজেপির বি টিম বলে সাম্প্রদায়িক প্রমাণরত।জিন্নাহর পর বহুধাবিভক্ত ভারতীয় মুসলিম সমাজকে এক ছাতার নিচে আনতে পেরেছেন।অধিকার আদায়ে দলিত মুসলিমদের সেতুবন্ধন ওয়াইসির অন্যতম কারিশমা।ওয়াইসি শুধু মুসলিমদের নন দলিতদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারেও সোচ্চার হয়েছেন। শুধু দলিতদেরও তিনি টেনেছেন।AIMIM দলিত সম্প্রদায় থেকেও প্রার্থী দিয়েছে।তন্মোধ্যে, মহারাষ্ট্রের প্রাদেশিক নির্বাচনে একাধিক প্রাথি দ্বিতীয় হন।তিনি মুসলিম দলিতদের ভারতের রাজনীতির জিম্মী বিলে আখ্যায়িত করেন। দলিতারা উচ্চবর্ণের বিদ্দেষ জনিত হামলার স্বিকার হলে দলিত পরিপারের পাশে ওয়াইসিকে দাড়াতে দেখা গিয়েছে।
ওয়াইসি পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় মুসলিম ও দলিতদের অধিকার কতদূর আদায় করতে পারবেন তা সময় বলে দেবে।