আমি সহজে চমকাই না, ভূত দেখার অভ্যাস করতে করতে আচমকা কোন কিছু সামনে এলেও সয়ে নেবার একটা ক্ষমতা ইদানীং হয়ে গেছে৷ দু'বার চোখ কচলালাম, মাথা অন্যদিকে ফিরিয়ে একবার হাই তুললাম, হেঁড়ে গলায় "বেয়ঠে রাওয়া করু তেরে রুহ রাজদানা" গেয়ে সুর তোলার চেষ্টা করলাম, যদিও জানি, এখন কেবল স্বরটাই শোনা যায়, কণ্ঠে সুর বলতে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই! যাইহোক, এতকিছু করার পরেও সামনের মূর্তিটা উবে গেলেন না, দিব্যি বসে আছেন আপন মুষ্ঠির ওপর থুতুনিতে ভর দিয়ে!
উনাকে কী বলব ভেবে পাচ্ছি না, আসলে কিছু বলতেও ইচ্ছে করছে না, দিব্যি হ্যাংওভারের যন্ত্রণাময় নিস্তব্ধতাই কেন জানি ভালো লাগছে! ব্যাপারটা এমন হয়েছে যে, একাকিত্ব নিয়ে রোজ হাহাকার করছি, অথচ এখন কেউ একাকিত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করলে উল্টো বিরক্ত হচ্ছি!
অবশেষে রবীন্দ্রনাথই নীরবতা ভাঙলেন, তুমি কুন্দনলাল সায়গলের নাম শুনেচ?
আমি- কেএল সায়গল? ওই যে আপনার ভুল ধরেছিল গানে?
রঠা- আহহা, যেটুক জানতে চাইচি তাই বল না কেন বাপু! যাক গে, ছাড়ো ওকে, এই যে তুমি এখন গাইলে এটা তো মুলতানি রেওয়াজ, তাই না?
আমি- আজ্ঞে, মুলতানিই, তবে এই ধারার একটা স্বতন্ত্র নাম আছে, সারায়কি!
রঠা- তুমি ভীষণ পাজি, বুঝলে? কী যেন নাম তোমার, ল্যাঞ্জা না আঞ্জা!
আমি- আজ্ঞে, আমাঞ্জা!
রঠা- ছোহ! সেই তো হল, ভাবলাম তোমাকে উৎসাহ দিই, অথচ আমি ভূমিকায় আসতে না আসতেই তুমি আমাকে বোঝাবার চেষ্টা করলে যে, তুমি আমার চেয়ে বেশি জান, আমাকে ভুল প্রমাণ করার চেষ্টায় লেগে পড়লে!
আমি- ছি, ছি, কী বলেন, আমি ভীষণ লজ্জিত, আপনার কথা শেষ হওয়া পর্যন্ত আমার থামা উচিত ছিল!
রঠা- সেটাই, আগে অপরপক্ষ কী বলে সেটা তো মন দিয়ে শুনবে!
আমি- আজ্ঞে আজ্ঞে, আপনি বলুন!
রঠা- তুমি এই বোল রাখ তো, গতবার তো খুব চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলচিলে, আর এই বার কথায় কথায় আজ্ঞে! ঠিক করেছিলুম, সারায়কি ধারার কবি সুলতান বাহু সম্পর্কে আলোকপাত করব, তা কথা বলার আমেজটাই কেচে দিলে!
আমি আর না পেরে গ্লাস সমেত বোতলটা এগিয়ে দিলাম, বললাম, দ্য ইভেন্ট ইজ অল ইওরস মি'লর্ড, আয়'ম জাস্ট ইওর ওবিডিয়েন্ঠ ডিসাইপল!
রঠা- উহু, মাঞ্জা, তুমি মনোবিকলনে হাবুডুবু খাচ্চ, ইউ নীড টু এক্সপ্রেস ইওরসেল্ফ, ফ্রিলি!
আমার চোখের সামনে রবীন্দ্রাথ দুলছেন এখন! ভেবে পাচ্ছি না, কী এক্সপ্রেস করব! বললাম, মনোবিকলনে ভুগছি, এমনটা কেন ধারণা করলেন বলুন তো?
রঠা- সর্বাগ্রে তুমি আমাকে বল, এ্যাম আই আ প্লানচেট অর ইওর ইমাজিনেশন?
চিন্তায় পড়ে গেলাম, প্লানচেট তো করিইনি কোনবার, আর আমার চিন্তাভাবনায় কোনবারই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আসেন না, শংকর আসেন (উনি এখনও মরেননি অবশ্য), বিভূতি বাবু আসেন, শওকত ওসমান আসেন, ওয়ার্ডসওয়ার্থ আসেন! ইমাজিনেশন হলে ইনারা আসতেন, রঠা কেন আসবেন?
রসিকতা করে বললাম, আজ্ঞে, গতবার তো আপনি বোতল খালি পেয়েছিলেন, তাই এবার আমার বোতল অর্ধেক থাকাতেই ভাগ বসাতে হাজির হয়ে গেছেন!
রঠা- তুমি যা পান করচো, তারচে ঢের উমদা পানীয়তে আমি আমার মস্তিষ্ক ডুবাই রোজ!
আমি- বলেন কী, অঞ্জন কাকুর কাছে যান নাকি রোজ?
রঠা- থামো বাপু, অকাজের কথাই হচ্চে বেশি! শোনো, আমি এই তোমার সামনে উপবীত, তুমি মন খুলে সব বলে হালকা হও দিকি!
আমি- কী জানতে চাইছেন, আর কী নিয়ে বলব, সেটাই ভেবে পাচ্ছি না!
রঠা- ওরে নকল- তুই নকুলের বেশে
সুষুপ্ত মার্জার এক
কর্কশ স্বরে ডেকে গেলি
কখনও নিজেই শুনিসনি
তোর সুমিষ্ট গর্জন!
আমি এবার চুপ রইলাম, রবীন্দ্রনাথ আসলেই এবার পয়েন্টে আছেন! আমি বললাম, অধিষ্ঠানের স্তর যদি মেঘের উপরেই হয়ে যায়, তখন আর মাথার ওপর ছায়া কি থাকে কোনো?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বিচলিত মনে হল, উনি কাঁপা কাঁপা হাতে বোতল উপচালেন, ছলাৎ করে খানিকটা টেবিলে ছিটকে পড়ল, আমার মন চাইল হুমড়ি খেয়ে পড়ে সুরাটুকু চাটা শুরু করি, কিন্তু এমন পরিবেশে এহেন ছোটলোকি করা সাজে না! রবি ঠাকুরের গলা দিয়ে ঝাঁঝের নিঃশ্বাস বের হল, ইউ হ্যাভ পয়েন্টেড টু দ্য ভেরি ডেপথ অব হিউম্যান সেন্টিমেন্ট, আঞ্জা! এই আমাকেই ধরো, আমার কোন লেখাতে তুমি মাতৃরূপ দেখতে পাবে না, দুয়েক জায়গাতে যা-ও "মা, জননী" প্রভৃতি উপমা ব্যবহার করেছি সেও দেশপ্রেম হতে জন্মভূমি কিংবা ধরিত্রীর প্রতি প্রেম দেখাতে গিয়ে বলেছি! আমার রচনাজগতে কোথাও আমার মায়ের উপস্থিতি নেই, কারণ আমি আশৈশব আমার মাকে কাছে পাইনি!
আমি- হু, পেয়েছিলেন কাদম্বরী দেবীকে!
রঠা- কথাটা তুমি কি খোঁচা দিয়ে বললে?
আমি- আজ্ঞে, না। লেখকের মানসজগৎ সম্পর্কে আমি সামান্য হলেও বুঝি, দুঃখের গান গাইতে, সুখের ছবি আঁকতে মনের মধ্যে একটা অবলম্বন লাগে, একটা অজুহাত লাগে, সেটি যতক্ষণ আছে, ততক্ষণ একজন লেখক একদম ভিন্ন একটা গতি নিয়ে এগুতে পারে!
রঠা- তার মানে কি বলতে চাইছ, যারাই লেখে সবারই মনের মধ্যে কেউ না কেউ আছে, যাকে কেন্দ্র করে লেখক লিখে চলে? সেক্ষেত্রে বিমূর্ত লেখনীকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবে?
আমি- আজ্ঞে, বিমূর্ত লেখনী বলতে যদি বোঝাতেই হয় যে, কোন নির্দিষ্ট চরিত্র নেই, গোটা সমাজ বা জনপদই একটি চরিত্র, বা কোন একটা অব্যাখ্যেয় অবস্থাকে কেন্দ্র করে কোন রচনা লেখা হচ্ছে, সেক্ষেত্রেও বলব, তখনও মনের মধ্যে কেউ একজন আছেন, যিনি এই কল্পনার কলকাঠি নাড়তে সাহায্য করেন, কিছুক্ষণ পরপর রামধনুর চাদর ওলটপালট করে মনে ভেতর শতরঞ্জি সাজান! কেউ একজন তো অবশ্যই থাকেন, মনোমন্দিরের ঠাকুর ঘরে একজন ঠাকুরকে থাকতেই যে হয়, নচেৎ লেখা আসে না!
রঠা- খাসা বলেচ! তোমার বিবেচনার দৌড়টা বোঝার চেষ্টা করলাম৷ এই যে ঠাকুরের অবস্থানটা বুঝতে পেরেচ, এটাই তোমার কাল হয়েচে, বুঝলে? তোমার মধ্যে কোন ঠাকুর নেই, তোমার এখন কোন মানসকন্যা নেই, তোমার বিলাপ করার মতন কোন শোক বা প্রেয়সীও নেই, জীবনের প্রতি কোন অভিযোগ করবার মত দীনতাও তুমি কোথাও প্রকাশ করতে চাও না! নিজেকে শক্ত করতে করতে তুমি একদম পাথরে পরিণত হয়েচ- এটিই তোমার জন্যে সবচেয়ে বড়ো অভিশম্পাত, আঞ্জা!
আমি- তা বলা যায়, কিছু সত্য আমাদের অজানা থাকাই বোধহয় ভালো!
রঠা- হাঁ, বটে! যাহোক, তুমি আমায় নতুন বৌঠানের কথা মনে করিয়ে দিলে, ব্যথাতুর হয়ে গেলাম মঞ্জা!
আমি- উনি আপনার যাবতীয় কল্পনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন, অন্তত একটা বিশেষ সময় পর্যন্ত তো ছিলেনই!
রঠা- কোন বিশেষ সময়ের কথা বলচো? নতুন বৌঠান আমার মনের মন্দিরে সবসময়ই ছিলেন, কখনও হারাননি! রোজ আমার গীতিকবিতার শব্দগুলো, আকুতিগুলো সেই মহান দেবীকেই ছোঁবার চেষ্টা করেচে! আমি যেন মহাযাত্রার আগের মুহূর্তেও নতুন বৌঠানকে মনে মনে ডেকে বলেচি, এই দেখ, আমি এবার কী লিখলাম!
রঠার এই উক্তিতে আমার বুকটা কেমন মোচড় দিয়ে উঠল, বুক মোচড় না, অতিমদ্যপানে বমির উদ্রেক- একটু ভাবার বিষয় আছে, যদিও আমার জ্ঞান হবার পর থেকে যত খারাপ পরিস্থিতিই হোক, বমির কোন ইতিহাস নেই! যাক সে কথা, মূল আলোচনায় থাকি, আমি রবি ঠাকুরের চোখের ভেতরের গহীন সবুজাভ জগৎটাতে যেন একপাক ঘুরে এলাম! সে চোখের গভীরতায় চোখ রাখা অসাধ্য সত্যি!
রঠা আপন মনেই বলে যেতে লাগলেন, বুঝলে মনু (মাঞ্জা থেকে মঞ্জা, অবশেষে এবার মনুতে এসে গেছে নাম!), ছোটগল্পের রহস্যকেই দেখ, শেষ হয়েও হইল না শেষ! এখন সবটা যদি শেষই হয়ে যায়, যদি আর কিছুই না থাকে বাকি তবে তো তা ভ্যানগগের গমক্ষেতের সমান হয়, তাই না?
আমি মনে মনে হাতড়াতে লাগলাম, কোথায় যেন একটা মিল পাচ্ছি! একেবারে শেষ করতে নেই, কিছু একটা বাকি থাকতে হয়, বাকি রাখতে হয়... ওই তো মনে পড়েছে... আমিই তো একবার বলেছিলাম- গোলাপের সবগুলো পাপড়ি যদি একে একে ছিঁড়ে নাও, তবে গোলাপের আর কী থাকে বাকি! সব পাপড়ি খসে পড়া একটি ন্যাড়া নগ্ন গোলাপ বোঁটার দিকে তাকালেই কথাটার সার্থকতা পাওয়া যায়! একইভাবে প্রেমের বেলাতেও সব আশ মিটে গেলে তারপর আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না! এজন্যই একটা কিছু অপূর্ণ থাকতে হয়, নইলে প্রেম অমর হয় না! এখানে রবীন্দ্রনাথও দেখি সেইম কথা বলছেন! তার মানে কী? আমার কল্পনাই আমার সামনে রিফ্লেক্ট করছে? এই যে চোখের সামনে সফেদ চুলদাড়ি দুলিয়ে দুলিয়ে বুড়ো ভাম কথা বলছে- এ রবীন্দ্রনাথ নয়? কেবলই আমার কল্পনা? আজ কি আমায় সত্যিই মদে ধরল?
ওদিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেই চলেছেন- রিভল্যুশন বা উত্থান জিনিসটা খেয়াল কর মনু, যেকোন কবির সবগুলো রচনা যদি তুমি সময়ের পরত অনুসার বজায় রেখে একে একে পাঠ কর, তবেই ওই কবির মনোজগতের বিবর্তনের ধারাটা টের পাবে! আমার কবিতাগুলোই দেখ না, আমি প্রথম চুম্বন নিয়ে কবিতা লিখলাম কখন? আমার বিয়ের পরের দিন! অথচ এর আগে কী লিকেচি, খেলার সাথী নিয়ে কবিতা!
অর্থাৎ, বিয়ের পরই আমি সেই প্রথম চুম্বনের স্বাদ পাই, আর সেই অনুভূতিকেই কবিতায় তুলে ধরলুম! আমি কবি, আমাকে ইন্টেলেকচুয়াল বলতেই পারো, তবে আমলা তো নই! ইউ মাস্ট আন্ডারস্ট্যান্ড হোয়াট আই মীন...
আমার মাথা ঝিমঝিম করছে, ঘুম ঘুম ভাব চলে আসছে, আমি বিরাট এক ধন্ধে পড়ে গেছি, সত্যিই এর আগে রবীন্দ্রনাথের কবিতায় প্রেমের অন্য রূপ ছিল, শরীরে শরীর মেশার মত ব্যাপার স্যাপার তাঁর কবিতায় প্রথম এল তাঁর বিয়ের পরই! পরকীয়া বলতে আমরা যে অনৈতিক শরীরবৃত্তীয় বিষয়কে ইঙ্গিত করি শুধু তা যদি কাদম্বরীর সঙ্গে থাকতই তাহলে এসব প্রেমজাতীয় উপসর্গ তো তাঁর কবিতায় আগেই উঠে আসা স্বাভাবিক ছিল! কবি মানুষ অন্তত কোনদিন বিয়ে করবেন তারপর কবিতাটা প্রকাশ করবেন এতটা দূরদর্শী আমলাতান্ত্রিক হিসাব করে ঘুঁটি চালার অবকাশ সত্যিই থাকে না!
ঠাকুর তখনও থামছেন না, বিড়বিড় করে বলছেন, তোমরা নতুন বৌঠানের সঙ্গে আমার প্রেম বল? প্রেম সে অবশ্যই! সব প্রেমেই শরীরের সন্তাপ খুঁজতে যাও যদি, তবে তোমরা প্রেমই বোঝ না, বোঝ শুধু কামুকতা! ধর, তুমি একবার রেলগাড়িতে চাপলে, তোমার পাশের সিট পড়ল এক আপাদমস্তক অবগুণ্ঠিতা রমণীর, ট্রেনের দুলুনিতে একটু পরপর তার বাহুতে তোমার বাহু স্পর্শ পাচ্চে, তোমার সমস্ত ইন্দ্রিয় সেই স্পর্শটাকে উপলব্ধি করতে চাইচে, অথচ স্পর্শটা সেকেন্ডেরও কম সময়ে আবার ছুটে যাচ্চে, আবার তুমি অপেক্ষা করচো, কখন আরেকবার ঝাঁকুনিতে তার বাহুতে তোমার বাহু ঠেকবে! তোমার সমস্ত ইন্দ্রিয় তখন রমণীটির দিকে, অথচ যেন কিছুই হয়নি এমন ভান করে তুমি পাথরের ন্যায় নির্বিকার মুখ করে বসে র'য়েচো! ভুলেও রমণীটির দিকে তাকাবারও সাহস পাচ্চ না, ওদিকে রমণীটির মধ্যেও একই ব্যাকুলতা অথচ সঙ্কোচ টের পাচ্চ! তোমার কাছে এই যাত্রা তখন জীবনের সবচে মধুময় যাত্রা মনে হতে লাগল, মনে মনে চাইতে লাগলে এই যাত্রা যেন কোনদিনই শেষ না হয়, ওই স্পর্শটার জন্য সারাজীবন এভাবে কাটিয়ে দিলেও তোমার জীবন সার্থক! অতঃপর, হুট করে ট্রেন থামল, রমণীটি নেমে গেল! সেই যাত্রাকে একবার কল্পনা করে দেখ, মাঞ্জা! তোমার সমস্ত আত্মা চাইল লাফিয়ে নেমে যাই তার সাথে, কিংবা একবার একটু নামটা অন্তত জিজ্ঞেস করে আসি, একবার চোখের দিকে অন্তত তাকিয়ে দেখা হলেও আপসোস থাকত না! এক অচেনা অজানা, নাম না জানা, এক নারী তোমাকে দিয়ে গেল জীবনের সবচেয়ে মধুর অনুভূতি! সেই অপূর্ণ আকর্ষণ, সেই অব্যক্ত অদেখা অনুভূতির সাথে তুমি আর কোন প্রেমের অ্যাডভেঞ্চারের তুলনা করতে পারবে না...
আমি ততক্ষণে টেবিলে মাথা এলিয়েছি, জড়ানো শব্দযোগে বলছি, গুরুজী, এই প্রেক্ষাপট নিয়ে একটা গল্প লিখে গেলেই পারতেন, ভয়ানক প্লট ছিল মাইরি!
রঠার মুচকি হাসির আভাস বুঝতে পেলাম কথার স্বরে৷ বললেন, তুমিই তো অভিযোগ কর, আমরা পূর্বজেরা সব বিষয় নিয়ে লিখে রেখে গেচি, তোমাদের জন্য নাকি আর জায়গাই অবশিষ্ট রাখিনি!
মনে মনে বলতে লাগলাম, হ্যাঁ, সে তো বটেই, আর এটা নিয়ে যদি কখনও কালিদাসকে পেতাম! এই পণ্ডিত মহামানব উপমার সমস্ত কপিরাইট নিজের নামে করে বসে আছেন! কী অবিচার!
রঠা- কই হে মাঞ্জা, ঘুমিয়ে পড়লে নাকি? তোমার বোতল কিন্তু এখনও বাকি... আর ঠিক তোমার যে সমস্যা নিয়ে আলাপ করতে এসচিলুম, তা তো হলোই না!
আমি বিড়বিড় করে বললাম, খেয়ে ফেলুন.... ওটুকু আর রাখবেন কি... আলাপ আরেকদিন হবে!
ঘুমিয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত আমার মাথায় একটা জিনিসই ঘুরতে লাগল, রবি ঠাকুরের বিয়ের আগের কবিতা আর বিয়ের পরের কবিতা.. এ দুটো নিয়ে আরো ঘাটতে হবে হে আমাঞ্জা, আরো অনেক হিসাব বাকি...
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৪৬