স্থানঃ কান্দাপারা, টাঙ্গাইল (কল্পনা)
“হাঁসি” মেয়েটার বয়স ১৬ পেরিয়ে ১৭ তে পড়লো, মুখে অপ্রশিক্ষিত হাতে লাগানো অল্প মেকাপ থাকে দিনের বেলায়। ছিমছাম গঠনের শ্যামলা শরীরে হাল্কা সবুজ রঙের একটা শাড়ি, সেটাও অপরিপক্ক হাতে পড়া। চোখে-মুখে একটা মায়া আছে মেয়েটার, একটা বড় ঘরের পরিবারে জন্ম হলে হয়তো তাকে আরো সুন্দর লাগতো। এমন পুষ্টিহীনতায় ভোগা লাগতো না তার। অপুষ্টিতে ভোগা শরীরেও তাকে অদ্ভুত সুন্দর লাগে। মায়া লেগে থাকে হাঁসি’র হাঁসিতে। সেই মায়া দেখে কোন ছেলে মুখ ফিরাতে পারবে না, ভালবাসবেই। তার চোখের কাজলে চোখ রেখে হয়তো অনেকেই মরে যেতে পারবে অনায়াসে।
দেশি সুরাটা একটু বেশিই পেটে পরে গিয়েছিল সোনাই'য়ের। রাত ১টা বেজে ২৯ মিনিট পেরুলো এখন, শরীরের হরমোনের চাহিদাটা হঠাৎ করেই বেড়ে গেল। সেই চাহিদা মেটাতে সে হাঁসি'র ৭x৭ বর্গ ফুটের ঝুপড়ীতে ঢুকে। অতর্কিত কারো প্রবেশে ভয় পেয়ে যায় হাঁসি। টলমল পায়ে এগিয়ে এসে সোনাই পেছন থেকে জোর করে জড়িয়ে ধরে হাসি'কে।
: না! আইজকা আর কুনু কাম করমু না। দুকান বন্দ কইরা ফালাইসি।
: আরে মাগী, একবার কইরাই যামুগা। ট্যাকা বেশি লাগবো? বাড়ায়া দিমুনে।
: না কইলাম না? আইজকা আমার সইলডা ভালা লাগতাসে না। বিউটি'র কাছে যা!
: খানকি! তোরে ভালা কইরা কইতাসি ভালা লাগে না। ভাব চুদাইতে লাগসোস? ওই তোর দাম কত রে ? বেশ্যা'র আবার ঢং! কাপড় খোল কুত্তার বাচ্চা!
: আব্বে খানকির ছেলে! সারা দিন কি তোর আশায় কাপড় পইরা বইসা আছি? আইজকা আমার সাতাশটা লাং তাগো জ্বালা মিটাইয়া গেসে। আমার সইলডা ভালা থাকলে তোর জ্বালাও মিটাই দিয়া দিতাম। আজকের লাইগ্যা অন্য মাগীর কাছে যা।
: আমার তো তরেই লাগবো। আজকে তোর সাথেই থাকুম। মাগী! সাতাশ জনে তাগো জ্বালা মিটাইয়া গেছে। সাতাশ জনের জ্বালা আইজকা আমিই মিটাইয়া যামু। দেখবি আমার জোর কত! খানকি মাগী! তোর কাছে কিয়ের জিগান লাগবো রে? তোর ধান্দাইতো সইল বেচা! চুতমারানি আইজকা তোর কুনু কথাই হুনুম না আমি। দুকান বন্ধ যখন তাইলে এই দুকানতে আর বাইর হমু না আইজকা! সারা রাইত আমার জ্বালা মিটামু। সোনাই'রে একবার না করলে কি হইবার পায় আইজকা বুঝবি।
: তোগো মত মাদারচোদ গুলার লাইগ্যাই আইজকা ছুডু-ছুডু বাইচ্চা গুলাও বাঁচে না! আমাগো উপর জ্বালা মিটাস ভালা কথা, আবার রাস্তা-ঘাটে বাচ্চা দেখলেও খারায়া যায়। শালা নিজেরে পুরুষ মানুষ ভাবস? সইল বেইচ্চা খাই আমরা, তার মানে এই না যে আমাগো ইচ্ছা'র কুনু দাম থাকবো না! দিমু না আইজকা আমি! কি করবি? গতরের জোড় দেহাবি? আমারেও ধর্ষণ করবি ? (হাঁসি'র গলার স্বর তখন অনেক উঁচুতে)
এরই মাঝে হাঁসি'র “সর্দারনী” কুলসুম বেগম তেড়ে এসে ঢুকে পরে হাঁসির ৫০x৫০ বর্গফুটের ছোট ঝুপড়ীতে। হাঁসি সব কিছু খুলে বলে কুলসুম বেগমের কাছে। গাজা খেয়ে কুলসুম বেগমের চোখ প্রচন্দ লাল। সেই চোখে তাকাতে ভয় লাগবে যে কোন পুরুষের। সোনাই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে, ঠিক হাঁসির পিছনে। সব শুনে কুলসুম বেগমের চোখ আর বেশি লাল হয়ে উঠল যেন। এই লাল হওয়ার পিছনে নেশা নেই বিন্দুমাত্র, রাগ ঘৃণা আর পুরুষ সমাজের প্রতি একটা অবজ্ঞা ছাড়া আর কিছুই ছিল না কুলসুম বেগমের চোখে।
: (কুলসুম বেগম লাল চোখেই সনাইয়ের দিকে তাকিয়ে) হাঁসির বয়স কত হইবো রে সোনাই?
(সোনাই চুপ।)
: কিরে কথা কস না ক্যা? ওই কুত্তার বাচ্চা! তোর মাইয়ার বয়স আর হাঁসির বয়স তো কইতে গেলে সমানই! খানকির পোলা তোর লজ্জা করে নাই তোর মাইয়ার বয়সী আরেকটা মাইয়ার উপর জোর করতে! সারা দিন তো তোগো মতন হাজার হাজার পুরুষ মাইনষের খিদা মিটায় হাঁসির মতন মাইয়া গুলা! রাইতের ১২টার পরে পাড়া বন্ধ থাকে তাও তোগো মতন কুত্তা গুলার লাইগ্যা দুইডা-তিনডা পর্যন্ত খুলা রাখি যাতে, এই এলাকার বাইরের বাচ্চা/মাইয়া মানুষ গুলান একটু নিস্তার পায়। তাও তোগো হয় না, ট্যাকা দিয়া ধর্ষণ করতে মন চায়? খানকির পোলা! তোগো বাপ-মা এরকম হবি জানলে, জন্মের পরই তোগোরে গলা-টিপ্যা মাইরা ফালাইতো! তোগো মতন পুরুষ মাইনষের কাছে তোগো মা-বইন-মাইয়াও নিরাপদ না। ওইন্নে বাইরের মানুষ ক্যামনে নিরাপদ থাকবো ?
সোনাই’এর চোখে পানি ছিল না তখন! তার চোখে লালসা ছিল, লালসা ছিল হাসি’র শরীরের জন্য। সেই লালসার ঘোর তার কাটবে না কখনো। তার বিকৃত মানসিকতার সেই রুপটা দেখবে না নিষিদ্ধ পল্লীর বাহিরের ভদ্র সমাজ! একটা ধর্ষক সব সময়ই ধর্ষক! তাদের কোন স্থান নেই আমাদের এই ভদ্র সমাজে, এমনকি এই নিষিদ্ধ পল্লীর হাঁসি, কুলসুম বেগমের কাছেও।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:৫৫