আমার বাবা সাধারন একজন কৃষক, ছোট বেলায় দেখেছি বড় কষ্টে আমাদের সংসার চলছে, সংসারে ছিলনা কোন স্বচ্ছলতা, অনেকটা নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমনই। আমার বড় দুই ভাই এখন সরকারি উচ্চপদন্থ কর্মকর্তা এখন আর আগের মত কষ্ট করে আমাদের চলতে হয় না, সংসারে এসেছে স্বচ্ছলতা, আগে যারা আমাদের দুর দুর করে তাড়িয়ে দিত তারা এখন আমাদের সাথে তোশামদ করে কথা বলে, এ সবের মুলেই ধন সম্পদ টাকা, আগের সেই আমরা তো আমরাই আছি, কেহ তো পাল্টে যাইনি, তাহলে আগের সমাজ আর এখনকার সমাজ ঢের পার্থক্যের মূলেই এই সামান্য দুটো টাকা।
১। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে টাকা বড় না মানুষ বড় ?
উত্তর ঃ-টাকা বড়।
আমাদের গ্রামে একজন মোড়ন আছে, তার নামে অনেক আজে বাজে কথা শুনেছি, কিন্তু কোন দিন দেখি নাই, তো আমাদের জমি নিয়ে প্রতিবেশি একজনের সাথে খুব ঝগড়া থেকে সম্পর্কের অবনতি হয়, তো যাদের সাথে জমি সক্রান্ত বিরোধ তারা গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে, উক্ত মোড়লকে তারা আগে থেকেই টাকা দিয়ে তাদের পক্ষে যেন রায় দেয় এ চুক্তি করে, লোক মারফত আমারা এ কথা শুনতে পারি।
আমার আব্বা সেই মোড়লের বাড়ি যায়, অনেক কথা বলার পর সেই মোড়লকে জিগায় আপনি আব্বাসের (ছদ্দনাম) নিকট থেকে কত টাকা পেয়েছেন আমি তার দ্বিগুন দিব রায়টা আমার পক্ষে দিবেন, মোড়ল বলে ১০০০০টাকা ,আব্বা ২০০০০টাকা দিয়ে বলে এই নেন ২০হাজার টাকা রায়টা আমার পক্ষে দিবেন বলে চলে আসে।
যথাসময় গ্রাম্য সালিশ বসে, টাকার জন্য রায় আমাদের পক্ষে । মোড়ল রায় ঘোষনার সাথে সাথে আমার আব্বা সালিশে দাড়িয়ে বলে আপনারা আমার বেয়াদবী মাফ করবেন, এ জমিটা আমার কোর্টে গেলে জমিটা আমিই পাব এটাও সত্যি কিন্তু জমিটা আমি যে ভাবে পেলাম তাতে আমি খুশি না , আব্বাস তুমি জমিটা কি আমাকে সেচ্ছায় দিবা নাকি আমি মামলা করে তোমার থেকে নিব।
সালিশে বসা অনান্য ব্যক্তিবর্গ বললেন তালুকদার (আমার আব্বার নাম )তোমার জমি তুমিই পেয়েছ,তোমার তো খুশি হওয়ার কথা কিন্তু খুশি না হওয়ার কারন?
আব্বা বললেন আমি মোড়লকে ২০হাজার টাকা ঘুস দিয়ে জমিটা নিছি, আর আব্বাস ১০হাজার টাকা দিছে, (আব্বা সব কথা বলে দিল সালিশে মোড়লের ঘুস কেলেংকারী ফাস হয়ে গেল)। সেই থেকে তমিজ মোড়লের মোড়লগিরি শেষ।
২। আমার প্রশ্ন জাগে মানুষত্ব বড় না টাকা বড় ?
উত্তরঃ- টাকা বড়।
৩। তমিজ মোড়লের দাম কত?
উত্তরঃ- ২০ হাজার টাকা।
আমাদের গ্রামের লোক এখন এটাই জানে।
[sb]সকলের মুখে মুখে একই কথা
তমিজ মোড়লের দাম ২০০০০টাকা।