আপনার বন্ধু কে অথবা তোমার প্রিয় বন্ধু কে? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে একটু দ্বিধাবোধ করবে না কিশোর-কিশোরীরা বা তারুণ্যেরা। একটি লিস্ট করে গড় গড় করে বলে দিতে পারবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইট খাচার এই শহরে একই ছাদের নিচে বসবাস করা সহপাঠীদরে নামগুলো।
অথচ আমার-আপনার বাড়িতে যে সবচেয়ে কাছের বন্ধুটি লুকিয়ে আছে; এটি চিন্তায়ও মাথায় আসবে না। বলছিলাম বাবা-মায়ের কথা যারা আমাদের কে লালন-পালন করে অনেক কষ্টের সাথে বড় করে গড়ে তুলছেন প্রতিনিয়ত। শৈশব কিংবা কিশোর বয়সে একটি ছেলে বা মেয়ের সবচেয়ে কাছের বন্ধু কিন্তু প্রথমে ‘মা’ তারপর ‘বাবা’।
সন্তানের সাথে সম্পর্ক পাতানোর মূলমন্ত্র হচ্ছে বন্ধুত্ব।
• সন্তানের সাথে বন্ধু হওযার প্রাথমিক উদ্যোগ বা দায়িত্ব নিতে হবে বাবা-মা দুজনকেই এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তুরতে হবে উভয়ের মাধ্যমে।
• ছেলে-মেয়ের সাথে কথপকোথন করার সময় তাদের সম্মান দিতে হবে। কোন বিষয়বস্তুতে তাদেরকে সরাসরি ‘না’ শব্দটি উচ্চারণ করা যাবে না।
• ‘তুলনা’ শব্দটি ছেলে-মেয়ে ও অন্য কার সাথে না করলেই মঙ্গলজনক উভয়ের স্বাধীনচেতার কথা যদি আমার বাবা-মা চিন্তা করি। কারন; এতে করে বাচ্চাদের আত্মবিশ্বাসটুকু কমে যায়।
• এই বয়সে তারুণ্যেরা বা কিশোর-কিশোরীরা স্বাধীনভাবে বেড়ে এঠার চিন্তা করে। তাই অতিরিক্ত বিরক্তবোধ করা যাবে না। একাকী থাকতে বা কিছু করতে চাইলে তাদেরকে সময়টুকু বের করে দেওয়া উচিত পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে।
• সন্তানের সাথে মায়ের বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে উঠে প্রায় বেশির ভাগই। মাকে সন্তানের প্রতি সর্বোচ্চ ভালবাসাটুকু দেখাতে হবে। ফলে সুষ্ঠু একটি মার্যাদা, শ্রদ্ধাবোধ, ভালবাসা অনুভূতি হবে উভয়ের মাঝে।
• ছবি দেখা বা কেনাকাটায় একসাথে যাওয়া যায়। পারিবারিক ট্যুরে ঘুড়ে আসতে পারেন যে কোন দর্শনীয় জায়গা থেকে। আবার সাপ্তাহে বা মাসে সময় বের করে একসাথে কোন এক রেস্তুরায় খাওয়া-দাওয়া করে আসতে পারেন।
• ছেলে-মেয়েদের ভাল কাজের প্রশংসা করতে হবে। তাহলে তারা আগ্রহীবোধটুকু অনুভব করবে কাজ করারা প্রতি। ভাই-বোনের মধ্যে কখনো বিভেদ আনার চেষ্টা করবেন না। উভয়ের মানসিকতাই সমানভাবে বোঝার চেষ্টা করতে হবে বাবা-মা দুজনকে।
• সামাজিক মেলামেশায় আগ্রহী করে তুলতে হবে এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে এক সাথে নিয়ে যেতে হবে। তবে হা কোন ভাবেই জুরাজুরি করা যাবে না যেতে না চাইলে কোন জায়গায়।
• সন্তানের আগ্রহের ব্যাপারগুলোতে অংশ নিন বা গুরুত্ব দিন। জেরা না করে গল্পগুচ্ছের মধ্য দিয়ে বন্ধুদের কথা জেনে নিতে পারেন এবং পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়গলোও।
• ঘরের মধ্যে বাবা-মা এবং সন্তানেরা এক সাথে খেলার ব্যবস্থা করতে পারি। যেমন: দাবা, লুডু, ক্যারাম ইত্যাদি।
• ভুল-ত্রুটি নিয়ে আমাদের সব্বার বসবাস পৃথিবীতে। এই বয়সে বাচ্চাদের ভুল হবেই। সন্তানের ভুলগুলো গ্রহণ করার মানসিক বন্ধুত্বপরায়ণ দক্ষতা বাবা-মা দুজনকেই দেখাতে হবে। প্রথমে বকাঝকা না করে শুনতে হবে, বুঝতে হবে। না হলে পরবর্তী সময়ে কোন ভুল করলে বলবে না আপনাকে।
• সব্বারই নিজস্ব একটা পৃথিবী থাকে। ধৈর্য সব্বাইকে ধারন করতে হবে। ইতিবাচক বিষয়ে সম্মান প্রদর্শন করতে হবে এবং নেতিবাচক বিষয়ে বন্ধুত্বপরায়ন সমাধান বের করতে হবে।
অতএব; এই সময়টা স্বাধীনচেতা। উভযপক্ষের পারস্পরিক বন্ধুত্ব সম্পর্ক আমাদের জীবনে নানা বাধা বিপত্তি দূর হবে এবং শ্রদ্ধায় ভালবাসায় হাজারো বন্ধুত্বপরায়ন সম্পর্কগুরো একত্রিত হবে।