এতদিনে চাঁদে মানুষের কলোনী থাকার কথা ছিলো। কিন্তু, চাঁদে মানুষ ১৯৭২ এর পরে ল্যান্ড ও করেনি। কেন করেনি? এর অনেক উত্তর ছিলো। এখনকার বাজারে উত্তরটা হলো, চাঁদে গিয়ে কি হবে খোকা? দেখছো না আমরা মঙ্গলে যাচ্ছি?
কদিন পর পেপারে আসবে,"পৃথিবীর মতো আরেকটা গ্রহ পেলাম। বিজ্ঞানের যা উন্নতি হচ্ছে, এই সোমবারের পরের সোমবার পৃথিবীর কজন সেখানে পিকনিকে যেতে পারে; তবে এই রোববার নাগাদ আমরা মঙ্গলে ডিশ অ্যান্টেনা লাগিয়ে নেবো, কেননা শুক্কুরবারে তো মঙ্গলে পৌছেই যাচ্ছি!!"
বিজ্ঞান এগিয়েছে, সামনে আরো এগোবে। কিন্তু, বিজ্ঞান যার জন্য, সেই মানুষের শ্রীবৃদ্ধি হচ্ছে কি? টপ করে- ন এ কার "না" বলে ফেলুন।
কেননা, বিশাল একশ্রেনীর মানুষ প্রতিদিন প্রতারিত হচ্ছে। প্রতিদিন মানুষের হাতেই প্রাণ দিচ্ছে অসহায় মানুষ! মানবজাতির ভবিষ্যত আর সাইন্স ফিকশন না। যারা প্রাণ বাচাঁনোর ওষুধ বানায়, তারাই আরেক দেশে অস্ত্র বেঁচে।
এই নিরেট সত্য, পুনরায় আপনাদের মনে করিয়ে দেয়ার অর্থ কি? অর্থ হলো আপনাকে সচেতন করা। একটু চোখ কান খুলে দেখুন, আপনাকে কি পরিমান ভুল বোঝানো হচ্ছে।
আপনার মতো দুটো হাত পা বিশিষ্ট মানুষই আপনাকে বোকা বানাচ্ছে, আপনি তাকে প্রশ্ন করবেন দূরে থাক, চিহ্নিতই করতে পারবেন না। টিভির অ্যাড থেকে ব্লগে ফ্লাডিং, সড়ক আন্দোলন থেকে বিচারপতির পলায়ন, এক প্যাক বিস্কুট কেনা থেকে ফেসবুক ফিড, আমরা ভুল বুঝতে বুঝতে এতটাই অভ্যস্ত যে, সত্যকে আলিঙ্গন করতেই আমাদের গা রি রি করে।
একবার ভাবুন তো, মঙ্গলে মানুষ যাবে, কিন্তু কেন?
কারণ পৃথিবী বসবাসের উপযোগী থাকবে না। পারমানবিক বোমার কথা বাদ দেন। পারমানবিক বোমা না ফুটলেও জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানো যাবে না। এই জলবায়ুর রোষ সবাইকে গ্রাস করবে, কিন্তু সবাইকি এর হাত থেকে মুক্তি পাবে? সবাই কি মঙ্গলগামী রকেটের টিকিট কিনতে পারবে?
আফ্রিকার কথা না ভেবে, ঢাকার বস্তিবাসীর কথা ভাবুন তো! বস্তিবাসীর কথা না ভেবে আমাদের কথা ভাবুন। যদি দূর্যোগ জনিত মহাবিলুপ্তি হাজির হয়, তাহলে কয়জন ব্লগার রকেটের লাক্সারী কেবিনে বসে রুহ আফজা খেতে পারবেন?
আপনি জানেন কাজের মেয়ের সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয় এটা রবির মাথা ব্যথা না। কিন্তু তাদের অ্যাডে, মানবতার গল্প অভিনেতারা মঞ্চায়িত করলে আমরা মোহিত হই। শাহরুখ খান আগে হিরো আলমের মতো কালো ছিলো, পরে ফেয়ার এন্ড লাভলী সর্বাঙ্গে মেখে ফর্সা হয়ে গেছে- এমন ভেবে সত্যি সত্যি কিছু মানুষ ফেয়ার এন্ড লাভলী মাখে।
Complan খেতে খেতে এই সময়ের বাচ্চারা, Complain করতেই ভুলে গেছে, বা অহেতুক ফালতু Complain করছে। কারো কোন মাথা ব্যথা নেই।
ব্লগে যাচ্ছেতাই Propaganda ছড়ানোর জন্য অনেকে লিখছেন, জেনে না জেনে, কিংবা অনেক বড় প্ল্যানের অংশ হিসেবে। যখন মোস্তফা জব্বার বলেন "ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট আছে", তখন কেউ বলে না, "তাহলে ইন্টেলিজেন্স দেখছে আমি কি লিখছি? তাহলে নিশ্চয়ই এটা খুব জরুরী কিছু। আমিতো নিরীহ মানুষ, কবিতা লিখি, কিন্তু কই, কোন রাঘব বোয়ালতো দেখচি না!"
এটাই বোঝা জরুরী। বিমান ছিনতাই হলে চুড়িহাট্টা ভোলা যায়। মিডিয়া শুধু মাত্র লাইভ টেলেকাস্ট করে আপনার একটা সিদ্বান্ত পাল্টাতে পারে। কিন্তু লাইভ টেলিকাস্ট দেখা আর ইউটিউবে তামিল ছবি দেখা এক! টিভি মালিক সারাদিন আগুন দেখায়, এতে তার খরচ কম, আপনিও বউ বাচ্চা নিয়ে সারাদিন বসে থাকবেন, অনেক অ্যাড দেখবেন। মনোযোগ দিয়ে আপনি দেখবেন এবং শুনবেন, একটা মানুষ যে, সারাদিন ঐখানে দাড়িয়ে ধাক্কাধাক্কি করছে (যে একজন অভিনেতাও), তার অনেক "অনুমান", "অনুভূতি" মিশ্রিত তথ্যপ্রবাহ!!
আপনার দেশের আইন প্রণেতারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রাজনীতি করলে, এক শ্রেনীকে সারাদিন গালাগাল করা যায়, যার ফায়দা হলো, আপনি আইন প্রণেতাকে জিগ্গেস করবেন না," তা ভাই, মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য কি ছিলো? কেন মালয়শিয়া, আজকে মালয়শিয়া হলে, আমি বাংলাদেশ? আমার স্বাধীনতা কেন আজকে ফেসবুক ইঊটিউভ, নিষিদ্ধ ব্লগের কমেন্ট সেকশনে? আমার সেই মিছিলের কন্ঠ কই?"
আজকে আসল কথাই লিখতে পারলাম না, চলবে....
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১৯ রাত ১০:০৭