আমরা প্রায়ই পত্র পত্রিকায় দেখি, দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অনেক ভালো ফলাফল করেছে। এধরণের সংবাদের একটি গভীর তাৎপর্য আছে।
এই ছেলে বা মেয়েটি অর্থের অভাবে, পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেনি। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার হলে মলিন পোশাকে যেতে হয়েছে। তার বাবা মা তাকে প্রয়োজনীয় বইটা কিনে দিতে পারেনি। টিউশন ফি দিতে পারবে না বলে, সে স্যার ম্যাডামদের কাছে প্রাইভেট পড়তে পারেনি।
শিক্ষক, সহপাঠীদের অনুগ্রহ-সাহায্য, পরিবারের দীনতা, দুশ্চিন্তা, কঠোর অধ্যবসায় তাকে সবসময়ই একটা মানসিক চাপে রেখেছিলো।
এই দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সাফল্য আমাদের সমাজ এবং শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে অজস্র প্রশ্নবাণ ছুড়ে দেয়। এই সমাজ ব্যবস্থা তাকে কখনোই প্রয়োজনীয় সাহায্য করে, অনুপ্রেরণা দেয়নি, বরং দাতার কৃপায় তার নির্ভরতা তাকে প্রত্যহ হতাশ করেছে।
সে জানে, যে স্যার ভালো পড়াতে পারেন, তিনি টিউশনির আশায় ক্লাসে ভালো পড়ায়নি।
রাষ্ট্র তাকে বিনামূল্যে শিক্ষা না দিলেও, শিক্ষা উপকরণ দিয়ে সাহায্য করতে পারতো। রাষ্ট্র সেটা করেনি।
তার সামর্থ্যবান প্রতিবেশী কোনদিন চায়নি, সে বা তার ভাইবোনেরা ভালোভাবে পড়ালেখা করুক।
তার মেধা এবং পরিশ্রমকে সমাজের অধিকাংশ মানুষ পরোয়া করেনি।
আমরা কতোটা স্বার্থপর হলে ভাবতে পারি, এই ছেলে বা মেয়েটি বড় হয়ে সৎ, আদর্শ নাগরিক হয়ে দেশ দশের "সেবা" করবে।
কেউ প্রশ্ন করিনা, এর শিক্ষা এবং দক্ষতায়, সমাজের অংশ হিসেবে আমাদের আদৌ কোন ভূমিকা আছে কিনা!
এই লেখাটি পড়ে, যদি একজন ব্যক্তিও কোন অসহায়, দরিদ্র শিক্ষার্থীর পড়াশোনায় কোন ধরনের সাহায্য করেন, তবে ভাববো, লেখাটি স্বার্থক হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪৯