হ্যা, আমাদের মাঝে অনেকেই ভাবেন এমন যে তিনি ভালো হতে চাচ্ছেন কিন্তু পারছেন না। তিনি চাচ্ছেন নিজেকে ইসলামের পথে নিয়ে আসতে, কিন্তু পারছেন না।
আসলে আমরা যা করি দৈনন্দিন জীবনে তা আমাদের চিন্তার ই বহিঃপ্রকাশ। আমরা সারাক্ষন যা ভাবি, আমাদের কাজ গুলো সেই ভাবনা অনুযায়ী ই সংঘটিত হয়। এখন আমরা যদি আল্লাহর পথে চলবো, আল্লাহর কথা মানবো, ঠিক মতো নামাজ পরব এই কথাগুলো যখন কেও বলছে বা কোথাও শুনছি শুধু তখন ভাবি আরা এই কথা গুলোর উৎস থেকে সরে আসলে যদি আমরা ভুলে যাই তাহলে কিভাবে আমাদের জীবনে ভালো অভ্যাস গুলো আসবে? আল্লাহ কুরআন কারীমে এই জন্যই বলেছেন একে বারবার স্মরণ করতে, যাতে আমাদের মাথায় সবসময় এই চিন্তা গুলো চলতে থাকে। আর তাহলেই কেবল সম্ভব নিজের কাজগুলোকে পরিবর্তন করা।
এখন যদি আমরা এটা নিয়ন্ত্রন করতে পারি যে সারাক্ষন আমরা কি ভাবছি, তাহলেও আমরা নিজেদের কাজকে পরিবর্তন করতে পারবো। মাথাকে তুলনা করা চলে কম্পিউটারের প্রসেসর এর সাথে। প্রসেসর কিন্তু শুধু নির্দিষ্ট কিছু বিষয় ই প্রসেস করেনা মানে শুধু উইন্ডোজ বা অন্য প্রোগ্রাম ই শুধু প্রসেসর কে ব্যাবহার করেনা, মাঝে মাঝে ভাইরাস ও প্রসেসর কে ব্যবহার করে। আর যখনি ভাইরাস প্রসেসর কে ব্যাবহার করে তখনি শুরু হয় গন্ডগোল।
তেমনি মানুষ এর প্রসেসর ও কিন্তু সবসময় তার নিজ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়না। আল্লাহ তা’আলা মানুষ কে এই শক্তিশালী প্রসেসর টি দিয়েছেন তার পাঠানো বাণীগুলোকে চিন্তা করে নিজের জীবনে প্রতিফলিত করতে। এই প্রসেসর এর নিয়ন্ত্রন আমরা সবাই করতে পারিনা। যারা জানে একে কিভাবে নিয়ন্ত্রন করতে হয় তাদের মাঝে কিছু মানুষ নিজেই তার প্রসেসর তথা মস্তিষ্ক কে অন্য কাজে ব্যাবহার করে, কারন তারা এর সঠিক ব্যবহার ই জানেনা। আর যারা জানেনা তাদের এই মস্তিষ্ক ব্যবহার করে ভাইরাস তথা মানুষের চিরশত্রু শয়তান! আর এই কারনেই আমাদের এই পথভ্রষ্টতা।
এই কারনেই আমরা কোনোও ভালো কাজ করার পণ করেও অনেক সময় ব্যর্থ হই। ভালো হতে চেয়েও পারিনা। প্রিয় পাঠক, আসুন আমরা এখন থেকে এটুকূ খেয়াল রাখি যে কোন সময় আমরা কি চিন্তা করছি। তার পর মিলিয়ে দেখি যে যা ভাবছি, তা কি আমার উদ্দেশ্যের সাথে সাম্যঞ্জস্যপুর্ণ নাকি নয়। যদি তা সাম্যঞ্জস্যপুর্ণ না হয় তাহলে এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম এর মতো করে সেই চিন্তার একশন ব্লক করে দেই অর্থাৎ সাথে সাথে যেনো সেই চিন্তা বন্ধ করে দেই। কারণ তা যদি হতে দেই তাহলে ওই বিরূপ চিন্তা যা আমি করতে চাই নি কিন্তু শয়তান এর দ্বারা প্ররোচিত হয়ে করেছি, তাহলে ওই টুকুই আমার উদ্দেশ্য সফল এর পথে বাধা হয়ে দাড়াতে পারে।
সবশেষে একটাই কথা, শয়তান হতে সবসময় আশ্রয় চাইতে হবে আল্লাহর কাছে, কারন একমাত্র তিনি ই পারেন শয়তান হতে আশ্রয় দিতে। আর সব কাজে সাহায্য চাইতে হবে আল্লাহর কাছে, তিনি ই সর্বোত্তোম সাহায্যকারী। তার নিকট হতে সাহায্য মানেই বিজয় সুনিশ্চিত। মুমিন দের উচিত, একমাত্র তাঁকেই সকল কার্যবিধায়ক হিসেবে গ্রহন করা।
শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে উপরের কথাগুলো মনে রেখে জীবন কে সাজানোর তাওফিক্ব দিন, আমীন!
মা আসসালাম