পরের দিন বিকাল বেলা
বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে গুনগুন করে গান গাইছছিল অর্না
নিচে থেকে গানের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিলো
আজ সোহান পড়াতে যায় নাই তাই রুমেই ছিলো সে
গানের শব্দ শুনে ছাদে এলো গল্পের নায়ক
সে মনে করেছিলো স্বর্না গান করছে। স্বর্না যে ভালো গান গাইতে পারে সেটা সোহান আগে থেকেই জানতো।
ছাদে উঠে.........
বাহ খালি গলায় সুন্দর গান গাইছো তো স্বর্না ভালোই লাগছে আমি কি গান শুনতে পারি?
অর্না পেছন ফিরে ছিলো
না! পারেন না! একদমই পারেন না! কখনই পারেন না সোহান ভাইয়া।
ঘুরে দাঁড়াতেই
ওহ অর্না!! আমি ভেবেছিলাম তো তুমি স্বর্না কেমন আছো?
সেটা কি জানার দরকার আছে ভাইয়া?
কেনো??
কেনো জানেন না?
না জানলে বলি, দেখলেন রাস্তার ওই কাদামাটি তে রক্ষা থেকে পড়ে গিয়ে এক্সিডেন্ট করলাম
অথচ আপনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন?
কেমন মানুষ আপনি??
আমার কথা শোনো একবার আমাকে বলতে দাও
আমি এগুই নি কারণ তুমি যদি আমাকে দেখে লজ্জা পাও
সে জন্যই এগুই নি
জানেন ভাইয়া আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছি আপনি আমার এই দূর্দিনে এগিয়ে আসেন নি বলে আপন মানুষ হয়ে আপন মানুষের দুর্দিনে এলেন না!!
যাক সে সব কথা ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলে?
না যাই নি বাবা বলেছিলো আমি যাই নি কোন সমস্যা বোধ করিনি তাই যাই নিই।
শুনুলাম নাকি তোমার নাকি জ্বর এসেছিলো এখন কি অবস্থা তোমার?
জ্বর এসেছিলো কে বললো আপনাকে?
স্বর্না বললো আমাকে নয় লেবুটা কে বলতেছিলো শুনলাম
ওহ তাই নাকি?
হ্যাঁ। এখন তো শরীর ভালো?
ভালো
পড়াশোনার খবর কি কেমন চলছে?
আর পড়াশোনার কথা আর না-ই বা বললেন ভাইয়া
(দুজনের কিছুক্ষণ কথা.........)
যাই ভাইয়া মাগরিবের আজান দিচ্ছে
আসি ভাইয়া
যাও তাহলে বললো সোহান।
সোহানের মনে একটু অনুসুচনা এলো
যদি আমি দেখে না দাঁড়িয়ে থাকতাম যদি সাহায্য করতাম!
এই ঘটনার ঠিক ২ দিন পর......
দুপুর বেলা থেকে আকাশে মেঘ করছিলো বিকালের দিকে তা আরো বেড়ে গেলো।
অর্না বাসায় বসে টিভি দেখছিলো হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলো বারান্দায় গিয়ে সে দেখলো জমকালো মেঘ আকাশ টাকে ঘিরে ফেলেছে আকাশ থেকে বিদ্যুৎ এর চমক সাথে সাথে বিকট শব্দ যেকোনো সময় বৃষ্টি হবে।
অর্নার মা অর্নাকে বললেন “যা তো মা ছাদ থেকে কাপড় গুলো নিয়ে আয়”
স্বর্না কোথায় মা? ও কে বল
স্বর্না গানের ক্লাসে গেছে বৃষ্টি আসে আসে করছে কখন যে বাসায় ফিরে মেয়ে টা!
অযথা চিন্তা করো না তো মা দেখো তোমার মেয়ে ঠিকই বৃষ্টির পরই ফিরবে তুমি দেখে নিও
ছাদে যা মা দেরী করিস না তাড়াতাড়ি যা!
যাচ্ছি।
ছাদে গিয়ে......
(সোহান রাস্তার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে)
ভাইয়া আপনি!
এই সময়ে?
ওহ অর্না কেমন আছো?, মনে হচ্ছে খুব জোর বৃষ্টি হবে।
উত্তরে অর্না... মনে হয় যে মেঘ করেছে
বুঝলে অর্না ভেবেছি আজ বৃষ্টি তে ভিজবো তাই ছাদে এলাম
তো বল এখন কেমন আছো?
ভালো ভাইয়া।
তুমি এসেছও কেনো?
মা বললেন কাপড় গুলি নিয়ে যেতে তাই এলাম।
ভাইয়া আমাদের কাপড় গুলো কোথায়?
ওহ নিবেদিতা এসেছিলো আমাকে ডাকতে
আমি বললাম যাবো না। ও যাবার সময় সব কাপড় নিয়ে গেছে। তোমাদের গুলোও নিয়ে গেছে তাই ছাদে নেই। তুমি এক কাজ কর আমাদের বাসায় যাও, নেবু কে বল ও দিয়ে দিবে
আর আপনি?
আমি আজ বৃষ্টি বৃষ্টিকে গায়ে মাখবো।
ভাইয়া আমি অত সাহিত্যিক কথা বুঝি না
শুধু এইটুকুই বলবো, বৃষ্টিতে বেশি ভিজেন না জ্বর-ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
(এমন সময় বৃষ্টির ফোটা পড়তে শুরু করলো)
সোহান দের বাসায় গিয়ে কাপড় নিয়ে অর্না বাসায় চলে গেলো।
বৃষ্টি হচ্ছে এমন সময় বাসায় স্বর্না মায়েরে ফোনে ফোন দিলো
মা আমি স্বর্না বলছি
তুই কোথায় স্বর্না আর কার ফোন থেকে ফোন করেছিস
“মা আমি গানের ম্যাডামের বাসায় আমার বান্ধবী সুপ্তির নম্বর তেকে ফোন করেছি তুমি চিন্তা কোরো না আমি ভালো আছি। বৃষ্টি থেমে গেলেই চলে আসবো”
(চলবে.........)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:২৩